সিবিআইকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার দাবি তৃণমূলের

সিবিআই রবিবারের ডেড লাইন যখন ফেল করেছে তখন সর্বোচ্চ ২৩ তারিখের মধ্যে কিনারা করুক

সিবিআইকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সোমবার এমনই দাবি করলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।এদিন তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকে বলেছেন রবিবারের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে।ঘটনা ঘটার ১২ ঘণ্টার মধ্যে একজন গ্রেফতার হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী একে একে পদক্ষেপ নিচ্ছিলেন। তারই মাঝে আদালত সিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছে। অথচ সিবিআই রবিবারের ডেড লাইন পেরিয়ে গেলেও এখনও কিছু করে উঠতে পারেনি। অভিযোগ কুণালের। একমাত্র যে গ্রেফতার হয়েছে সেটাও কলকাতা পুলিশ করেছে। যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার পিসি পিরিয়ড শেষ হলে তাকে আদালতে পেশ করতে হবে। আদালতে পেশ করলে সেখানে তদন্তে রিপোর্ট দিতে হবে। সিবিআই রবিবারের ডেড লাইন যখন ফেল করেছে তখন সর্বোচ্চ ২৩ তারিখের মধ্যে কিনারা করুক।

তার স্পষ্ট বক্তব্য,আদালতে যে রিপোর্ট পেশ করা হবে সেখানে এই ঘটনার কিনারা করে তথ্য প্রমাণ সহ পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে। এই ব্যক্তি দোষী কিনা, তার সঙ্গে আর কেউ আছে কিনা সেটাও জানাতে হবে। সেটা কেস ডায়রিতে রাখতে হবে। যারা সুযোগ সন্ধানী বাম রাম তারা বিষয়টা ঘুরিয়ে দিতে চাইছে। কুণাল মনে করিয়ে দেন, কোচবিহারে বর্ণালী দত্ত, বানতলায় চিকিৎসক অনিতা দেওয়ান, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের গণধর্ষণ, একটা ক্ষেত্রেও সিপিএমের কোনও মুখ্যমন্ত্রী ইস্তফা দিয়েছেন? উন্নাও, হাথরাস বিলকিস বানো, সোনার মেয়ে কুস্তিগিরের শ্লীলতাহানির সময় গিয়েছিল একজনও বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী ইস্তফা দেওয়া দূরঅস্ত, বিজেপি সাংসদ ব্রীজভূষণকে পর্যন্ত বরখাস্ত করা হয়নি।

অথচ এখানে একটা রব তোলা হচ্ছে ইস্তফা চাই।আরজি কর নিয়ে নাগরিক সমাজের যে আকুতি সেটা কিন্তু মোটেই রাজনৈতিক নয়। অথচ বিষয়টাকে যারা ঘোরাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, একাংশ মিডিয়ার বিকৃত প্রচারে মানুষের আবেগকে যারা বিপথে চালিত করছে, তাতে রাজনৈতিক স্লোগানের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা কোনও অবস্থাতেই বরদাস্ত করা হবে না।

কুণালের সাফ কথা, সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনি আপনার বক্তব্য পেশ করতেই পারেন। কিন্তু সেখানে ভাষা ও যুক্তি যেন ঠিক থাকে। ভুল তথ্য, বিকৃত তথ্য, নির্যাতিতার নাম দেওয়াটা অন্যায়। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট নিয়ে কত রকম মিথ্যা রটানো হলো। এমন ব্যক্তিকে আন্দোলনে দেখা গিয়েছে ন্যায়বিচার চাই বলে, তিনি নিজের স্ত্রীকে হত্যার দায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। সাধারণ মানুষ যে কথা বলছেন ঠিক কথা। কিন্তু তাদের সেই আবেগকে বাম রাম ঘুরিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করছে। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের থেকে রাজ্যপালের ওপর চাপ আছে। রাজ্যে সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলার জন্য রাজ্যপাল যাতে রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিত রিপোর্ট পাঠান।

তার স্পষ্ট কথা, রাজ্যপাল বিজেপির লোক। রাজ্যপাল এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কিনা বলুন। রাজ্য সরকারকে বিপাকে ফেলার জন্য বিজেপি রাজ্যপালের চেয়ারকে ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে।এদিনও কুণাল চিকিৎসকদের কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। কারণ, লক্ষ লক্ষ মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। বিভিন্ন জায়গা থেকে মৃত্যুর খবর পর্যন্ত আসছে।। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যা পদক্ষেপ নেওয়ার নিয়েছেন। এখন তো মামলা সিবিআইয়ের হাতে, তাই কর্মবিরতি করে কী লাভ হচ্ছে? সেই প্রশ্নও তোলেন কুণাল।

তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, যে চিকিৎসকরা আজ পথে নেমেছিলেন তারা বেসরকারি ডাক্তার এবং প্রভূত অর্থের অধিকারী। তারা কর্মবিরতির কথা বলছেন, অথচ যারা দূরদূরান্ত থেকে চিকিৎসার জন্য আসছেন ২ টাকার টিকিটে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাবেন বলে, তাদের বিপদে ফেলা হচ্ছে। কোথাও ভাঙচুর করে, কোথাও ভয় দেখিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থাটাকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এরা কী বেসরকারি হাসপাতালের তাবেদার? এই প্রশ্নও তোলেন তিনি।

 

Previous articleR G Kar: রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন স্থগিত করল CPIM
Next articleবাংলায় নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন রাজ্যপালের,কটাক্ষ কুণালের