বেপরোয়া-বিশৃঙ্খল তাণ্ডবে মিলেছে পেট্রল বোমা! তথ্য় দিল পুলিশ, বনধ আটকাতে সব ব্যবস্থা

ছাত্রসমাজের নাম নিয়ে তিনঘণ্টার শহর জোড়া তাণ্ডব নিয়ে তীব্র তিরষ্কার রাজ্য পুলিশের। নবান্ন অভিযানের নামে পেট্রোল বোমা নিয়ে মিছিলে যোগ দেয় বিজেপির আন্দোলনকারীরা। অস্ত্র, বোমা, গুলি নিয়ে মিছিল থেকে হামলা চালানোর যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা সোমবার রাতেই গ্রেফতারির মধ্যে দিয়ে রুখে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি, এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতীম সরকার। তারপরেও ঠেকানো যায়নি বিশৃঙ্খল তাণ্ডব। গোটা দিনের তাণ্ডবে ১২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেন, ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। তবে প্ররোচনা সত্ত্বেও পুলিশের সংযত ভূমিকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়েছে বলেই দাবি রাজ্য পুলিশের কর্তাদের। সেই সঙ্গে বুধবার বিজেপির ডাকা বনধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ সম্পূর্ণভাবে সক্রিয় থাকবে বলে জানানো হয় রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে।

মঙ্গলবারের ‘আন্দোলনে’ দুষ্কৃতী হামলার আশঙ্কার কথা সোমবারই জানিয়েছিল রাজ্য পুলিশ। সেই মতো নজরদারি ও গোয়েন্দা অনুসন্ধানও জারি ছিল বলে জানান এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতীম সরকার। তিনি জানান, “মঙ্গলবার অস্ত্র, বোমা গুলি নিয়ে আসার পরিকল্পনা ছিল। লাশ ফেলে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অনেককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নাহলে এই মিছিল থেকে এমন কিছু ঘটনা ঘটিয়ে ফেলা হত যাতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয়ে যেত। আজ পূর্ণ কর্মদিবস ছিল। বহু মানুষ কাজে বেরিয়েছিলেন।”

মিছিলের হাল হকিকত দেখে রাজ্য পুলিশের দাবি এই আন্দোলনকারীরা কোনওভাবেই ছাত্রদের আন্দোলন ছিল না। সুপ্রতীম সরকার দাবি করেন, “আন্দোলনকারীরা এলেন। তারপর ব্যারিকেড ধরে ঝাঁকানো শুরু করলেন। পুলিশ বারবার ঘোষণা করতে থাকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করুন। ব্যারিকেড ঠেলবেন না। তারপরেও সাঁতরাগাছি দিয়ে শুরু। ব্যারিকেড ভাঙা। পুলিশের দিকে লাঠি, পাথর, বোতল বৃষ্টি। পুলিশকে ধরে মারধর। পুলিশের গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর। আন্দোলনের নামে বেপরোয়া বেলাগাম বিশৃঙ্খল তাণ্ডব। আন্দোলনের নামে যে চেহারা দেখলেন আজ তাতে মনে হয় না পশ্চিমবঙ্গের প্রকৃত ছাত্র সমাজ এই ধরনের অসভ্যতা, গুণ্ডামি করবে না।”

তবে পুলিশ কর্মীদের ধৈর্যের সপক্ষে রাজ্য় পুলিশের কর্তা বলেন, “পুলিশ ফাঁদে পা দেয়নি। শান্তি বজায় রাখতে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ব্যবস্থা নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১১ থেকে ১২ জন আহত। আরও আহত হওয়ার খবর আসছে।” সেই সঙ্গে বিনা প্ররোচনা তিন ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালানো সবাইকে ভিডিও দেখে চিহ্নিত করবে রাজ্য পুলিশ, এমনটাও জানালেন এডিজি দক্ষিণ বঙ্গ।

মঙ্গলবার সকাল থেকে হাওড়া ব্রিজ এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। তাঁকে বারবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠি হাতে এগিয়ে যেতেও দেখা যায় সারাদিন। তিনি তথ্য পেশ করেন, মোট ১২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার মধ্যে ১০৩ জন পুরুষ ও ২৩ জন মহিলা।

Previous articleডবল ইঞ্জিন সরকারের বিহারে চোর সন্দেহে ‘মধ্যযুগীয় অত্যাচার’, ‘ঠুঁটো’ পুলিশে আস্থা নেই জনতার!
Next articleনৈরাজ্যের নবান্ন অভিযানে আক্রান্ত পুলিশ! রক্তাক্ত হয়েও সংযত থেকে কর্তব্যে অবিচল