রাত দখল কর্মসূচিতে ঋতুপর্ণার সঙ্গে চূড়ান্ত অসভ্যতা কেন? গর্জে উঠল টলিউড

নারী সুরক্ষার দাবিতে ডাক দেওয়া রাত দখল কর্মসূচিতে নারী হেনস্থা করলেন আন্দোলনকারীরাই! শ্যামবাজারে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের (Rituparna Sengupta) সঙ্গে যা হল তারপর এই কর্মসূচির তাৎপর্য নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুনে শুরু করেছে টলিউডের (Tollywood) একাংশ। চিকিৎসক-তরুণী ধর্ষণ খুনের ঘটনায় প্রতিবাদের মোমবাতি আলোয় যখন বিচারের দিশা খুজছে গোটা রাজ্য, তখন এই আন্দোলনে সামিল হতে গিয়ে শহর কলকাতায় শিকার হতে হলো অভিনেত্রী ঋতুপর্ণাকে(Rituparna Sengupta)। ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’ স্লোগান দেওয়া মানুষেরাই। নারীর সুরক্ষা, নারীর সম্মান তথা নারীর অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে এটা কেমন রাগ দখল? গর্জে উঠল টলিপাড়া।

বুধবার শ্যামবাজারে যখন হেনস্থার শিকার হলেন ঋতুপর্ণা তখন কারোর মনে হলো না যে এই কাজটা করা উচিত নয়, এমন প্রশ্নই তুলছেন আন্দোলনকে সমর্থনকারী টলিউডের অভিনেতা অভিনেত্রীরা। প্রত্যেকেই বলছেন এই কাজ কোনমতেই সমর্থন যোগ্য নয়। একদিকে যখন তিলোত্তমার বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদে গোটা শহরে অকাল দীপাবলি। তখন শ্যামবাজারে আরেক নারীর অসম্মান! প্রতিবাদের মূল লক্ষ্য থেকে সরে যাচ্ছি না তো, প্রশ্ন তুললেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় (Kamaleswar Mukherjee)।

গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তীর (Lagnajita Chakraborty) প্রথম থেকেই আন্দোলনকারীদের পাশে আছেন। কিন্তু এই ঘটনায় তিনিও মর্মাহত। বলছেন প্রতিবাদ করা পাশে থাকার অধিকার যতটা সাধারণ মানুষের ততটাই ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তরও। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যে আচরণ করা হলো তা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। সভ্য সমাজে এটা কাঙ্ক্ষিত নয়।

বুধের ‘রাত দখল’-এ বিক্ষিপ্ত অশান্তি, ঋতুপর্ণাকে “গো ব্যাক” স্লোগান

গোটা বিষয়টির কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় উল্লেখ করে অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত (Debleena Dutt) লেখেন, “যাঁরা ঋতুপর্ণাকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজনের সিটি স্ক্যান হবে। আর আরেকজন গুরুতর আহত! আমি প্রত্যক্ষদর্শী।”

বিচারের দাবিতে সরব অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী (Sudipta Chakraborty) ফিরিয়ে দিয়েছেন সরকারের দেওয়া সম্মান। ক্ষোভ উগরে প্রতিবাদ করেছেন অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিকের মন্তব্যের। কখনও ধর্মতলায় রাত জেগেছেন আবার কখনও জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়াতে ছুটে গেছেন ফিয়ার্স লেনে লালবাজারে সামনে। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সেই অভিনেত্রীই এই ঘটনার পর বলছেন, “আপনারা তাঁর অবস্থান দেখলেন না। অথচ ভুয়ো ভিডিওটি দেখে ঘৃণা উগরে দিলেন। আপনার তাঁকে লক্ষ্য করে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিলেন। তিনি তা-ও মেনে নিলেন। এলাকা ছেড়ে দিলেন। তা সত্ত্বেও তিনি যখন গাড়িতে বসে রয়েছেন তখন হামলা চালালেন। কী ভয়াবহ পরিস্থিতি! আমি এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করি। আপনারা কী ভুলে গিয়েছেন নারীদের রাত দখলের লড়াইয়ে শামিল হয়েছিলেন? মহিলাদের সম্মান, অধিকার রক্ষার দাবিতে যে আপনারা মিছিলে শামিল হয়েছিলেন ভুলে গিয়েছিলেন? কীভাবে এটা করতে পারলেন? ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে যা হয়েছে আমি তার তীব্র প্রতিবাদ করি।” বাম মনোভাবাপন্ন বলে পরিচিত অভিনেতা জিতু কমলও (Jeetu Kamal) গোটা ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন। এটাই কি নারীর সম্মান রক্ষার লড়াই, প্রশ্ন তুলেছেন রুপা গঙ্গোপাধ্যায়।

শ্যামবাজারের পাঁচমাথা মোড়ে আন্দোলনে প্রতিবাদী আন্দোলনে বুধবার মধ্যরাতে পৌঁছে যান অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তিনি সেখানে পৌছতেই ‘গো ব্যাক’, ‘ধিক্কার’ স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা। কোনওক্রমে গাড়িতে গিয়ে ওঠেন অভিনেত্রী। এরপর তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে বোতল ছোড়া হয়। গোটা ঘটনার ছবি ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার সরব বাংলা বিনোদন জগত। একইভাবে “গো ব্যাক” স্লোগান দিয়ে হেনস্থা করা হয়েছে আর এক অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীকেও (Mimi Chakroborty)।


Previous articleক্যান্টিনে চা-সিগারেটে ২৪,০০০ টাকা বাকি রেখেই “নিরুদ্দেশ” কীর্তিমান বিরুপাক্ষ!
Next articleকরম পুজোয় চা শ্রমিকদের সবেতন ছুটি নবান্নের, বন্ধ থাকবে সরকারি দফতর