Wednesday, December 24, 2025

ডাক্তারদের কর্মবিরতিতে প্রাণ গেল দুর্ঘটনাগ্রস্থ যুবকের, ন্যায় বিচার দাবি তৃণমূলের

Date:

Share post:

ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে প্রাণ গেল আরও এক তরতাজা যুবকের। যে জরুরি বিভাগ সর্বক্ষণ খোলা রয়েছে বলে আর জি করের জুনিয়র ডাক্তাররা দাবি করেছিলেন, তা যে কতটা অন্তঃসারশূন্য প্রাণ দিয়ে তা প্রমাণ করলেন ২৮ বছরের তরতাজা যুবক বিক্রম ভট্টাচার্য। নির্যাতিতার বাবা- মায়ের মতো সন্তানহারা হলেন আর-এক অসহায় বাবা-মা।

তিন ঘণ্টা ধরে হাতে-পায়ে ধরেও আরজি করের জরুরি বিভাগে পড়ে থাকা দুর্ঘটনাগ্রস্ত ছেলের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে না পেরে অসহায় মা চোখের সামনে তাঁর ছেলেকে মারা যেতে দেখলেন। এরপর আর – নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। হাউহাউ করে কেঁদে আছড়ে পড়েন আরজি কর হাসপাতালে মৃত যুবকের অসহায় মা।

কোন্নগরের ২৮ বছরের তরতাজা যুবক বিক্রম ভট্টাচার্যের পায়ের উপর দিয়ে লরি চলে যায়। শ্রীরামপুরের একটি হাসপাতালে ভরি প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় রেফার করা হয় আরজি করে। সেখানে গিয়েই বিপাকে পড়েন রোগীর পরিবারেরা। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এমার্জেন্সির সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাতে থাকলেও কোনও ডাক্তার তাঁর চিকিৎসা করেননি, ভর্তি তো দূরের কথা! ডাক্তার নেই। রোগীকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু লাগাতার রক্তক্ষরণে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন ওই যুবক।

এই ঘটনার পরে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ ফের একবার ডাক্তারদের কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার আবেদন করে বলেন, “ভর্তিতে বলা হয়েছে চিকিৎসক কম হয়েছে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু। সরকারি হাসপাতালে আসার পরে যদি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম পড়ে থাকে। এবং ডাক্তারবাবু যথা সংখ্যায় নেই, এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে চরম দুর্ভাগ্যজনক। ডাক্তারবাবুদের মূল যে ন্যায় বিচারের দাবি তার সঙ্গে আমরা সহমত। তারপরেও আপনাদের আন্দোলনের চালানোর হলে চালান। কিন্তু গরিব মানুষের, রোগীদের কথা ভেবে কর্মবিরতি বন্ধ করুন। বা রিলে কর্মবিরতিতে আসুন। কারণ আপনারা বলছেন সিনিয়ররা দেখে দিচ্ছে, সিনিয়ররা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।”

সেই সঙ্গে মৃত বিক্রমেরও ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে বলে দাবি করেন কুণাল। তিনি বলেন, “যে ছেলেটি শ্রীরামপুর থেকে আর জি করে বাঁচতে এসেছিল, চিকিৎসকের অভাবে তাঁকে ভর্তি করা যায়নি বলে শোনা গিয়েছে। সেই ছেলেটিরও ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। সে এখানে কর্মবিরতিরত ডাক্তারবাবুদের বসে থাকতে দেখতে আসেনি। নিশ্চিতভাবে তাঁর পরিবারেরও ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার আছে।”

spot_img

Related articles

নতুন তিন বিমান সংস্থা: ইন্ডিগোর একচেটিয়া দখল ভাঙছে দেশের আকাশে 

দেশের আকাশপথে একচেটিয়া দখল ভাঙতে যাচ্ছে। ইন্ডিগোর বিমান বাতিল ও যাত্রী অসুবিধার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন তিনটি সংস্থাকে...

ক্রিসমাস ইভে পর্তুগিজ চার্চে সকলের মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা মুখ্যমন্ত্রীর

ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- এই মতাদর্শে বিশ্বাসী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যতটা শ্রদ্ধা ও গুরুত্বের...

শালবনিতে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হুগলিতে ওয়্যারহাউস! সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার 

কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি শিল্প পরিকাঠামো বৃদ্ধি করতে বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে...

ডিরেক্টরেট স্তরের কর্মীদের জন্য কমন ক্যাডার গঠন, সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়

রাজ্য সরকার এবার সচিবালয়ের কর্মীদের মতোই ডিরেক্টরেট স্তরের কর্মীদের জন্য কমন ক্যাডার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা...