Wednesday, December 17, 2025

আর জি কর ইস্যুতে প্রশাসনিক পদক্ষেপে ‘দেরি’, রাজ্যসভা-রাজনীতি থেকে পদত্যাগ জহরের!

Date:

Share post:

সাম্প্রতিক আর জি করের ঘটনা নিয়ে রাজ্যের প্রশাসনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা খুব কম ও অনেক দেরিতে, এই বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ পদ ত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন জহর সরকার। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে তাঁর বিস্তারিত কথা বলা হয়ে ওঠেনি, এমন কথা উল্লেখ করে রাজ্যের মানুষকে রক্ষার করার অনুরোধ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর জি করকে ইস্যু করে বাংলায় যে বিক্ষোভ প্রকাশ হয়েছে, তা স্বতঃস্ফূর্ত বলে দাবি জানিয়ে এই সুযোগে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মাথাচাড়া দেওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তিনি। জহর সরকারের সাংসদ পদ ও রাজনীতি ছাড়ার অনুরোধে তৃণমূলের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

২০২২ সালে তৃণমূলে যোগ দিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ পদে আসেন জহর সরকার। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, মূলত সাম্প্রতিক আর জি করের ঘটনায় কিছু তথ্য ও কিছু সঠিক বিষয় উঠে আসলেও সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত রাগ ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সেই পরিস্থিতিতে আন্দোলনরত ডাক্তারদের জন্য পুরোনো ভঙ্গিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এগিয়ে আসবেন বলে আশা করেছিলেন সরকার। রাজ্যের প্রশাসন দুর্নীতিগ্রস্থ ডাক্তারদের বিরুদ্ধে আগেই পদক্ষেপ নিলে গোটা রাজ্যের পরিস্থিতি আগেই স্বাভাবিকতায় ফিরিয়ে আনা যেত বলে তিনি দাবি করেন চিঠিতে। আর এই অশান্ত পরিস্থিতির কারণেই বিরোধী দলগুলি ঘোলা জলে মাছ ধরার সুযোগ পাচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। এক্ষেত্রেই তিনি আশঙ্কা করেন স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে এভাবে ঢুকে পড়তে পারে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলিও।

তিন বছর রাজ্যসভার সাংসদ থাকাকালীন দেশের স্বৈরাচারী ও সাম্প্রদায়িক বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার সুযোগ পেয়ে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রীকে। গোটা দেশের বিভিন্ন রাজ্য ও বিভিন্ন দলের নেতারা যেভাবে দুর্নীতির টাকায় ফুলেফেঁপে উঠেছে, তাতে বারবার প্রমাণিত হয়েছে কেন্দ্রের সরকার কীভাবে বড়লোকদের সুবিধা করে দিচ্ছে, চিঠিতে উল্লেখ করেন জহর। তবে বাংলায় এভাবে নেতাদের অর্থনৈতিক প্রতিপত্তি বৃদ্ধি রাজ্যের মানুষ ইতিবাচকভাবে দেখেন না বলেই দাবি তৃণমূল সাংসদের। সেই সঙ্গে রাজ্যের দুর্নীতিগ্রস্থ আধিকারিকদেরও সাধারণ মানুষের ক্ষোভের কারণ হিসাবে তুলে ধরেন সরকার।

এই সব কারণেই আর সাংসদ থাকা বা রাজনীতিতে না থাকার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন তিনি। রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কথাও লিখেছেন চিঠিতে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর কাছেই রাজ্যকে রক্ষার করার আবেদন জানিয়েছেন। জহর সরকারের চিঠি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দল, জানিয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ।

spot_img

Related articles

তৃণমূল কাউন্সিলর খুনে সাজা ঘোষণা, তিনদোষীর যাবজ্জীবন

পানিহাটির তৃণমূল কাউন্সিলার অনুপম দত্ত খুনের মামলায় তিন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (TMC Councillor Murder) সাজা শোনাল ব্যারাকপুর আদালত।...

ঢাকায় হুমকি হাইকমিশনে: বাংলাদেশের হাই কমিশনারকে তলব বিদেশ মন্ত্রকের

বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসে ক্রমাগত হুমকি। অথচ বাংলাদেশের মহম্মদ ইউনূস (Mohammed Yunus) পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার নীরব। প্রতিবেশী দেশ ভারতের...

বাংলায় কোটি কোটি রোহিঙ্গা-বাংলাদেশি কোথায়? মিথ্যাচারের জন্য ক্ষমা চাক বঙ্গ বিজেপি: তীব্র নিশানা অভিষেকের

বিজেপি বলেছিল বাংলায় এক-দেড় কোটি রোহিঙ্গা, অগণিত বাংলাদেশি নাগরিক আছে। তারা কোথায় গেল? বাংলার ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন...

NCRT-র সিলেবাসে বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাস রাখার দাবি ঋতব্রতের

এনসিইআরটি-র পাঠ্যবইয়ে বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের (Bengali Freedom Fighters) ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত...