বিদেশেও জমজমাট শারদীয়া, দশম বর্ষে পদার্পণ ইন্দো- চেক দুর্গোৎসবের

দেখতে দেখতে কেটে গেল এক দশক। চলতি বছরে দশম বর্ষে পদার্পণ করছে ইন্দো- চেক দুর্গোৎসব (Indo – Czech Republic Durga Puja)। চেক বারক ফাউন্ডেশনের গ্যালারি লাপিদারিয়ামে পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওই টাউনের এই ভেন্যুতে রয়েছে পাথরের গ্যালারি। প্রাগৈতিহাসিক প্রাগের পুরো গ্যালারি জুড়েই পাণ্ডেল যেখানে শৈল্পিক ছোঁয়া পরিপূর্ণ। বৃহৎ আকারের ব্যারক মূর্তির সাজানো সম্ভার আর এবছরের পুজোর থিম নির্ভীক অনার্য সাধারণ মেয়ে দুর্গা – রূপায়ণে আর্টিস্ট, ফাউন্ডর ও কিউরেটর বঙ্গ তনয়া পাপিয়া ঘোষাল (Papiya Ghoshal)।

দুর্গাপুজো চিরকাল রাজ্য দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও বাঙালিয়ানার কৃতিত্বকে উপস্থাপিত করেছে। সৃষ্টিশীল বাঙালি যেখানেই থাকেন সেখানেই মা দুর্গার স্পর্শ তুলে ধরতে ব্যাকুল হয়েছেন। ইন্দো- চেক দুর্গোৎসবের থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য মিলিয়ে মন্ডপের চারিদিকে ঝুলিয়ে রাখা হবে গামছা ও বনসাই। বনসাই আর্টিস্ট মাইকেল। পাপিয়া জানাচ্ছেন, নানা দেশের আর্টিস্টরা তাঁর দুর্গাকে সৃষ্টি করেছেন। সঙ্গে জুড়েছে সারা পৃথিবীর নানান ভাষার কবিতার অংশবিশেষ। টিম পাপিয়া প্রাগে নির্মাণ করছে পাণ্ডেলের থিম অনুযায়ী সেই কাজ করেছেন।সঙ্গে থাকছেন ফিনিস আর্টিস্ট রবার্ট লাশেনিউস, জার্মানী থেকে আসছেন গ্রাফিক্স আর্টিস্ট ইডেন, আরবের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত আর্টিস্ট আসাম এল সব্বান, বাংলাদেশের রাতুল লাইসেন, চেক আর্টিস্ট মিলাদা, জার্মান আর্টিস্ট রবার্ট ও রেগিনা। এছাড়াও পুজোয় আসছেন জার্মান সেতার বাদক মারকাস স্কমিড। ৯ তারিখ সস্ত্রীক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত রভীষ কুমার, চেক মেয়র তেড়েসার উপস্থিতিতে হবে উদ্বোধন। গ্রেসি জলির উদ্যোগে নিউ ইয়র্ক থেকে আসছেন এক ঝাঁক বাঙালি ও আমেরিকানরাও এই দুর্গোৎসবের শামিল হচ্ছেন।

পুজোর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজনও করা হয়েছে। দেবীকে প্রণাম জানিয়ে শ্রদ্ধা অর্পণ করে কবিতাপাঠ, গান তো থাকবেই, তার সঙ্গে পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য মহিলা পুরোহিতের দ্বারা দেবী আরাধনা।২০১৫ সাল থেকে পাপিয়া মায়ের পুজো আর এক মাতৃ শক্তি দিয়েই করে থাকেন। প্রথমবার চেক প্রজাতন্ত্রে মা শুক্লা, বাবা দিলীপ ঘোষাল, ও বাউল গুরু পূর্ণদাস বাউল শুরু করেছিলেন এই মূর্তি পুজো। এবারও পুজো করতে আসছেন লন্ডন বেদান্ত আশ্রমের প্রধান এক ব্রিটিশ ব্রহ্মচারী পুরোহিত। মা দুর্গার উপাসনার মাধ্যমে ভারতীয় প্রাচীন সভ্যতায় যে নারী শক্তির প্রতি প্রেম পুজো ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয় সেটাই চেক প্রজাতন্ত্রে তুলে ধরবেন পাপিয়া।