কোথায় গেলেন চার মূর্তি? কোথায় গেলেন চার সিনিয়র ডাক্তার (senior doctors)? আর জি করে এত বড় (!) একটা গণ কনভেনশন (Mass Convention) হয়ে গেল, অথচ তাঁদের দেখা নাই রে… তাঁদের দেখা নাই।

আরজি করের পড়ুয়ারা যখন মাস দুয়েক আগে আন্দোলন শুরু করেন, এই চার সিনিয়র ডাক্তারদের প্রকাশ্যে এবং সামনের সারিতে দেখা যেত। এই চার চিকিৎসক হলেন কুণাল সরকার (Kunal Sarkar), অভিজিৎ চৌধুরী (Abhijit Chowdhury), নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Narayan Banerjee)ও সুবর্ণ গোস্বামী (Subarna Goswami)। আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে এদের নানাভাবে দেখা গেলেও গণ কনভেনশনে তাঁদের টিকিটি দেখা গেল না। প্রশ্ন তাঁরাই কি জুনিয়রদের ত্যাগ করলেন, নাকি উল্টোটা? জুনিয়ররা কি তাদের আমন্ত্রণ করেননি? নাকি আমন্ত্রণ করা সত্ত্বেও তাঁরা ওই বিখ্যাত গানটা গেয়ে উঠে বলেছেন… ও ঘাটে জল আনিতে যাব না আর….

ডা: কুণাল সরকার (Kunal Sarkar) আন্দোলনে প্রথম দিকে বিরাট উৎসাহ দেখালেও অনশনের সময় থেকে নিজেকে কার্যত গুটিয়ে নিলেন। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, অনশন করা ঠিক হচ্ছে না। যে বামেরা এই আন্দোলনের কলকাঠি নাড়ছিলেন, তাঁরা তাঁকে সরিয়ে দিলেন, তিনিও নিজেকে সরিয়ে নিলেন।

ডা: অভিজিৎ চৌধুরী (Abhijit Chowdhury) ভীষণ বিপ্লব করার পর হঠাৎ গ্রিন রুমের অন্ধকারে। চিকিৎসক মহলে খবর, এই সময়ে সারদা চিট ফান্ড কাণ্ডে তাঁর যুক্ত থাকার খবর প্রকাশ্যে আসতেই তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিলেন। অর্থাৎ আসল সত্য বেরিয়ে পড়ার ভয় শুধু নয়, নিজের ব্যবসার ক্ষতি হওয়ার ভয় তো ছিলই, সেই সঙ্গে তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার প্রমাদ গুনছিলেন।

ডা: নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Narayan Banerjee) তো অনশন মানছে না প্রকাশ্যে জানিয়ে মুখরক্ষার ফর্মুলা খুঁজতে গিয়ে নিজের দল সিপিএমের (CPIM) কাছেই ব্রাত্য হয়ে যান। একঘরে করা হয়। কেউ কেউ দালাল ইত্যাদিও বললেন। কিন্তু অদৃষ্টের কি পরিহাস, সেই পথেই যেতে হল, মাঝখান থেকে নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারালেন জুনিয়ররা।

এবং ডা: সুবর্ণ গোস্বামী (Subarna Goswami)। যিনি বুক বাজিয়ে বলেছেন সিপিএম (CPIM) করি। অথচ ডাক্তারদের আন্দোলনে নামার সময় তিনি শ্রীনিরপেক্ষ হয়ে যান। আরজি করে মৃত ডাক্তারের পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে নাকি ১৫০ গ্রাম সিমেন পাওয়া গিয়েছিল। এই গল্পের তিনি রূপকার। সেই সুবর্ণর বিরুদ্ধে ডা: সৌমিত্র বিশ্বাস খুনের অভিযোগ উঠতেই তিনি ধীরে ধীরে সরলেন। এমনকী জোর করে টাকা তোলার অভিযোগও উঠল বর্ধমানের এই চিকিৎসক আধিকারিকের বিরুদ্ধে। তিনিও নেই।

এই চার সিনিয়রের অন্তর্ধান রহস্য ক্রমশ বাড়ছে। এত বড় নাকি গণ কনভেনশন। সমস্ত পেশার মানুষ নাকি সেখানে ছিলেন। অথচ যে সিনিয়ররা প্রথম থেকে সঙ্গে ছিলেন, তাঁরা কেন শনিবার আরজি করের গণ কনভেনশনে ছিলেন না? জুনিয়ররা কী বলছেন? একটা বাইট হবে না? কিংবা চার মূর্তিই বা নীরবতা নিয়েছেন কেন?
