ট্যাবের (Tab) টাকা নয়ছয়! এমনই অভিযোগ তুলে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করেছিল বিরোধীরা। কিন্তু রাজ্য পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে এই টাকা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টের (Account) বদলে গিয়েছে অন্য অ্যাকাউন্টে। এটা একেবারেই সাইবার জালিয়াতদের কীর্তি। আর কাজের মোটিভ দেখে এই টাকা গায়েবের ঘটনায় বিহারের কুখ্যাত জামতাড়া গ্যাংয়ের যোগ থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ (Police)। ইতিমধ্যেই এই রাজ্যের পড়ুয়াদের টাকা বেশ কিছু টাকা চলে গিয়েছে ভিন রাজ্যের অ্যাকাউন্টে। আর সেই থেকেই সন্দেহটা প্রবল হয়েছে।

কখনো ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট, পিন জেনে নেওয়ার চেষ্টা, কখনও আবার অনলাইন জিনিসপত্র কেনাবেচার মাধ্যমে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য নেওয়ার চেষ্টা- এইভাবেই অনেক দূরে বসে ভিন রাজ্যের বাসিন্দাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিচ্ছিল জামতাড়া গ্যাং। এই চক্রের অনেকেই ধরা পড়ে এখন শ্রীঘরে। কিন্তু এখনও সক্রিয় দুষ্কৃতী রয়েছে তাদের।

বাংলার ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাবের টাকা গায়েব নিয়ে একের পর এক অভিযোগের তদন্তে নামে পুলিশ। দেখা যায়, পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ বা উত্তর দিনাজপুরে পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে যাওয়া কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং একটা আর একটার সঙ্গে একতারে বাঁধা। সাইবার জালিয়াতরা ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালে ‘অ্যাকসেস’ নিয়ে নিজেদের লোকজনদের নম্বর ঢুকিয়ে দিয়েছিল। সেই অ্যাকাউন্টগুলিতেই এসেছে টাকা। গত কয়েক দিনে এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে জালিয়াতের ধরেছে পুলিশ। তদন্তে দেখা যাচ্ছে বিহারের কিষানগঞ্জের বেশ কিছু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও (Bank Account) টাকা গিয়েছে। আর তা দেখেই পুলিশের সন্দেহ ধৃতদের সঙ্গে জামতাড়া গ্যাংয়ের যোগ থাকতে পারে।

এই চক্রের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড মালদহের বৈষ্ণবনগর থেকে ধৃত কম্পিউটার ডিপ্লোমাধারী হাসেম আলি, সিদ্দিক হোসেন, মোবারক হোসেন এবং আসিরুল হকদের সঙ্গে কিষানগঞ্জের যোগ রয়েছে। ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের কয়েকজন প্রতারককেও খুঁজছে পুলিশ। তদন্তি নেমে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পড়ুয়াদের টাকা ভিন রাজ্যে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ১০ জন গ্রেফতার হয়েছেন। ন্যাশনাল ইনফরমেটিকস সেন্টার আমাদের ইতিমধ্যে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর) জমা দিয়েছে। মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র যে ভাবে বাইরে আসা আটকানো গিয়েছে, এই বিষয়টিরও সম্পূর্ণ সমাধান হবে।’’
