Wednesday, December 3, 2025

সন্দীপ-অভিজিতের জামিনে সিবিআইয়ের উপর গোঁসা WBJDF-এর!

Date:

Share post:

কলকাতা পুলিশে আস্থা নেই। সিবিআই-কে (CBI) তদন্ত করতে ডেকেছিলেন যাঁরা, ৯০ দিনেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা চার্জশিট দিতে না পারায় ভারী গোঁসা তাঁদের। শুক্রবার, শিয়ালদহ আদালতে (Sealdah Court) আর জি কর ধর্ষণ-খুন মামলায় সন্দীপ ঘোষ (Sandeep Ghosh) ও অভিজিৎ মণ্ডল জামিন পাওয়া পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জুনিয়র ডাক্তারদের একটি সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্ট (WBJDF)। ব্যর্থতার দায় সিবিআইকে (CBI) নিতে হবে বলে দাবি জানান তাঁরা।

শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে (Sealdah Court) আর জি করে ধর্ষণ-খুনের মামলার শুনানিতে সিবিআই জানায়, তদন্ত চলছে। এদিকে ৯০দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কোনও চার্জ ছাড়া অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে রাখা যায় না। চিকিৎসক-পড়ুয়া খুন এবং ধর্ষণের মামলায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ছিল সন্দীপ এবং অভিজিতের বিরুদ্ধে। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে পারেনি সিবিআই। সিবিআই জানায়, সন্দীপ এবং অভিজিতের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ। কিন্তু তারা চার্জশিটি দিচ্ছে না। ফলে জামিন পেয়ে গেলেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। ২০০০ টাকা বন্ডের বিনিময়ে জামিন পেয়েছেন দুজনে।

এর পরেই এদিন সন্ধেয় সাংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জুনিয়র ডক্টর ফ্রন্টের (WBJDF) অনিকেত মাহাত বলেন, “সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। ৯০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও চার্জশিট দিতে পারেনি সিবিআই। তাই জামিন পেয়ে গেল ২জন। সিবিআই তদন্ত মানেই বিচার পেয়ে গিয়েছি তা নয়। ব্যর্থতার দায় সিবিআইকে নিতে হবে। কেন তারা ধর্ষণ ও খুন মামলায় চার্জশিট দিতে পারল না, তার জবাব দিতে হবে। সাধারণ মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করেছে সিবিআই। এবার রাজ্য ধর্ষক-খুনির মুক্তাঞ্চল হয়ে যাবে। বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিক নাগরিক সমাজ।” আদালতের রায়ের পরে দ্রুত জিবি মিটিং ডাকেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। শনিবারের মধ্যে পরবর্তী পদক্ষেপ জানাবেন। জুনিয়র চিকিৎসক আসফাকুল্লা নাইয়া-যাঁরা বিরুদ্ধে ভুয়ো ডিগ্রি ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে- তিনি বলেন, “শুধু আমাদের নয়, ব্যর্থতার জবাব অভয়া দিদি, তাঁর বাবা-মা, গোটা রাজ্যবাসীকে দিতে হবে। সিবিআইয়ের (CBI) ঢিলেমির তীব্র বিরোধিতা করি।” কিঞ্জল নন্দের কথায়, ”আমরা মিছিল করছি, এটা বোঝাতে যে আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাজপথ ছাড়ছি না।”

৯ অগাস্ট আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে দেহ উদ্ধার হয় চিকিৎসক-পড়ুয়ার দেহ। ধর্ষণ-খুনের অভিযোগ ওঠ। তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সঞ্জয় রাই নামে এক সিভিক ভলেন্টিয়রকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। এর পর পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান মৃতার মা-বাবা। মামলায় গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে। ঘটনার সিবিআই তদন্তভারের নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তে নেমে পর একাধিকবার আর জি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে জেরা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে গ্রেফতার হন টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলও। এর পর চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। সেখানে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে মূল অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সন্দীপ বা অভিজিৎ ঠিক কীভাবে যুক্ত ছিলেন সে বিষয়ে চার্জশিটে স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। ৯০ দিনেও চার্জশিট দিতে না পারায় শিয়ালদহ আদালত সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলকে ২ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেয়।

এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ জুনিয়র ডাক্তারদের। অথচ তাঁরাই সিবিআই তদন্তের পক্ষে সওয়াল করেন। এদিকে রাজ্য পুলিশ একের পর এক ঘটনায় অতি দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের ফাঁসির সাজা দেওয়ায়। এই ব্যর্থতার দায় সিবিআইকে নিতে হবে বলে দাবি জানায় WBJDF। তাদের অভিযোগ, সাধারণ মানুষের আবেগ মর্যাদাকে সম্মান দিতে ব্যর্থ সিবিআই।

spot_img

Related articles

এসআইআর আতঙ্কে তুফানগঞ্জে আতঙ্কে আত্মঘাতী গৃহবধূ! হাওড়ায় অসুস্থ বিএলও

এসআইআর সংক্রান্ত চাপে একই দিনে দুটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল রাজ্যে। কোচবিহারের তুফানগঞ্জে আতঙ্কে আত্মঘাতী হলেন এক গৃহবধূ, অন্যদিকে...

স্বাস্থ্যবন্ধু প্রকল্পে তিন সপ্তাহে পরিষেবা পেলেন এক লক্ষের বেশি মানুষ, শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় আরও এক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করল স্বাস্থ্যবন্ধু প্রকল্প। মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই এই প্রকল্পের শিবিরগুলিতে চিকিৎসা...

বাংলার পুলিশের ডিএসপি পদে যোগ রিচা ঘোষের: নাম লেখালেন দীপ্তির পাশে

নিয়োগ পত্র আগেই পেয়েছিলেন। বুধবার পুলিশের উর্দি পরে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন রিচা ঘোষ। না, এটা ক্রিকেটের জার্সিতে উইকেট...

আদালতের রায়ে বহাল ৩২ হাজার প্রাথমিক নিয়োগ, হাইকোর্ট চত্বরে অকাল হোলিতে মাতলেন শিক্ষকরা

দীর্ঘ দু’ বছর ধরে লড়াই, অনিশ্চয়তা আর সামাজিক উপহাস—সবকিছু কাটিয়ে অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা।...