শিল্পীদের অনুষ্ঠান করা নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর জি কর ইস্যুতে যে শিল্পীরা শাসকদল তথা রাজ্য সরকারকে উগ্র-কুৎসিত আক্রমণ করেছেন এঁদের অন্তত তৃণমূলের মঞ্চ আলো করতে দেওয়ার উচিৎ নয়। এই মন্তব্য করেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee), রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) ও মিডিয়া সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debanshu Bhattacharya)। কিন্তু বৃহস্পতিবার, ডায়মন্ড হারবারে ‘সেবাশ্রয়‘-এর উদ্বোধনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তত্ত্ব খারিজ করেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তিনি জানান, কারও উপর কোনও সিদ্ধান্ত তিনি চাপিয়ে দিতে চান না।

এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক (Abhishek Banerjee) বলেন, “যেমন একজনের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার স্বাধীনতা আছে, কেউ যদি একটা প্রোগ্রাম করে কাউকে আনতে চায় তার স্বাধীনতাও রয়েছে। এটাকে সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা একদমই ঠিক নয়। পার্টির তরফ থেকে তো কেউ নির্দেশ দেননি। ট্যুইটে ব্যক্তিগতভাবে তিনি বলতে পারেন। পার্টির তরফে কেউ নির্দেশ দিয়েছেন ? আপনি কোথাও কোনও বিজ্ঞপ্তি দেখেছেন? কোনও নোটিফিকেশন দেখেছেন? যখন ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডেকেছিলেন, তখন এবিষয় নিয়ে কোনও আলোচনা হয়েছিল বলে আপনারা শুনেছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু বলেছেন? দলের তরফ থেকে আমি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি কিছু বলেছি? না। আমরা সবার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।”

অভিষেকের কথায়, “১৪ অগাস্ট যাঁরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন, রাত দখলের ডাক দিয়েছিলেন, কেউ সমর্থন করুন আর না করুক, আমি তাঁদের সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। আমি আজও একই কথা বলছি। কারো ভালো লাগতে পারে। কারো খারাপ লাগতে পারে। এটাই বাংলার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের পার্থক্য।”

এই প্রসঙ্গে অভিষেক জানান, এক শিল্পী তাঁকে ফোন করে অভিযোগ করেন, তাঁর অনুষ্ঠান না কি বাতিল হয়েছে। তৃণমূল সাংসদ বলেন, “যেহেতু উনি ব্যক্তিগতভাবে ফোন করেছেন। আমি সঙ্গে-সঙ্গে মেলা কমিটির সদস্য-সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করি। কথা বলি। যিনি ফোন করেছিলেন তিনিও শো করেছেন পরে জানতে পারি।”

পরে সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেকের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কুণাল বলেন, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের যাঁরা অকথ্য আক্রমণ করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী হিসেবে তাঁদের নিয়ে আবেগ থেকে যা বলেছি তা একদম ঠিক বলেছি। তৃণমূল কর্মীরা নিজেদের বিবেক থেকে অবস্থান নেবেন। এই বিষয়ে আর কোনও কথা বলব না। যা বলার দলের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলবেন। তিনি যা বলবেন সেটা মেনে নেব।” এর সঙ্গে কুণালের সংযোজন, ”প্রতিবাদী আর প্রতিবাদের নামে অসভ্যতাকারীদের যে মিশিয়ে দেখানো হচ্ছে এটা আমরা বলিনি। প্রতিবাদের অধিকার নাগরিক, বিরোধী, সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি সবার আছে। বাদশা মৈত্র সিপিএমের অভিনেতা। তাঁর ক্ষেত্রে তো আপত্তি নেই। যাঁরা প্রতিবাদ করেছেন নিশ্চয়ই প্রতিবাদ করবেন। মুখ্যমন্ত্রীও প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু প্রতিবাদের নামে যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে গালাগালি করেছেন, পরিকল্পিত রাজনীতিতে সরকার ফেলে দেওয়ার কথা বলেছেন। কখনও অমুকের গালে গালে জুতো মারো তালে তালে এই কয়েকজনকে বলেছি তৃণমূল পরিচালিত অনুষ্ঠানে ডাকা যাবে না। তৃণমূল কর্মীদের বিবেকের উপর ছেড়ে দিতে হবে।”

–

–

–

–

–
