বুধবার. সকাল থেকেই সরগরম মহানগর। হাড়হিম করা ঘটনা। বাইপাসে (Bypass) গাড়ির ধাক্কা পিলারে। আহতরা জানালেন বাড়িতে ৩ দেহ। এই নিয়েই যখন রহস্য জাল পাকাচ্ছে, তখন সেই রহস্য আরও ঘণীভূত হল কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার (Kolkata Police Commissioner Manoj Verma) বক্তব্যে। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানালেন, স্বাভাবিকভাবে উঠে আসা তথ্য-প্রশ্ন ছাড়াও আরও বিষয় আছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তা জানাতে পারছেন না তাঁরা। ঘটনার পুনর্নির্মাণে সব স্পষ্ট হবে। পুলিশ (Police) ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছে।

বুধবার ভোররাতে প্রথমে বাইপাসের অভিষিক্তা মোড়ের কাছে পিলারে ধাক্কা দেয় গাড়ি। সেই দুমড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে প্রণয় দে, প্রসূন দে ও তাঁদের এক পুত্রসন্তানকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালে তাঁদের ভর্তি করার সময় তাঁরা জানান, বাড়িতে তিনটি মৃতদেহ রয়েছে। সেই মতো ট্যাংরার ১এ, অতুল শূর রোডে গিয়ে হাড় হিম করা দৃশ্য দেখে চমকে যায় পুলিশ। দেখা যায়, দে ভাইদের দুই স্ত্রী সুদেষ্ণা দে এবং রোমি দে-র রক্তাক্ত দেহ দুই ঘরে পড়ে আছে। সেখানে একটিই মাত্র ছুরি মিলেছে। আর এক ঘরে প্রণয় ও সুদেষ্ণার কিশোরী কন্যার দেহ। ১৪ বছরের প্রিয়ম্বদা দের মুখ থেকে গ্যাঁজলা বেরিয়ে ছিল।

পুলিশ কমিশনার জানান, কিশোরীর ঠোঁট এবং নাকের নীচে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। কী ভাবে সেই আঘাত লাগল, তা খতিয়ে দেখা। তবে, এর বাইরে তাঁর দেহে আর কোনও আঘাতের চিহ্ন উপর থেকে দেখা যায়নি। কিশোরীর মা এবং কাকিমা হাতের শিরা কাটা ছিল। তাঁদের গলাতেও ক্ষতচিহ্ন দেখা গিয়েছে।

মনোজ বর্মার (Kolkata Police Commissioner Manoj Verma) জানান, “আরও কিছু জেনেছি। তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই আমরা সব তথ্য প্রকাশ করতে পারছি না। হাসপাতাল থেকে আহতেরা যা বয়ান দিয়েছেন, তা যাচাই করা হচ্ছে।“ তবে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি বলে জানান সিপি। তবে, সবার মোবাইল ফোন রয়েছে আতসকাঁচের তলায়।

পুলিশ কমিশনার জানান, প্রণয় এবং প্রসূনের মধ্যে এক ভাইয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাতে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে নাবালকেরও। তবে সেগুলি দুর্ঘটনাজনিত নয়। কিন্তু অন্য ভাইয়ের তেমন কিছু হয়নি। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

কিশোরী-সহ দুই মহিলার মৃত্যুর সময় নিয়েও ধন্দে পুলিশ। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, এক দিন আগে থেকেই ওই বাড়ির কাউকে ডাকাডাকি করে সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। ফলে মৃত্যুর সময়ের জন্যেও ময়নাতদন্তের রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে তদন্তকারীরা।

–

–

–

–
