আলোচনায় বসতে হবে যাদবপুরের উপাচার্যকে, সময়সীমা বেঁধে ‘হুঁশিয়ারি’ বাম প্রতিনিধিদের

ওয়েব কুপারের বার্ষিক সভায় অশান্তির পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উপাচার্যকে আলোচনায় বসার সময়সীমা বেঁধে দিলেন বাম, অতিবাম সংগঠনের প্রতিনিধিরা। আন্দোলনরত পড়ুয়াদের তরফে কার্যত ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়ে বলা হয়েছে বুধবার (৫ মার্চ) বিকেল চারটের মধ্যে উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত (Bhaskar Gupta) যদি কথা না বলেন তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন তাঁরা। শনিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) উপর হামলার পর থেকে নানাভাবেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে রাখতে চাইছে বিপ্লবী ‘মাকু’রা। একের পর এক ভুয়ো অভিযোগ আর মিথ্যাচার করে সাধারণ মানুষ এবং প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্যকেও ‘হুমকি’ দিতে পিছপা হলো না বাম সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

গত ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) ওপেন এয়ার থিয়েটারে ওয়েবকুপার বার্ষিক সভা ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রথমে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) গাড়িতে হামলা, পড়ে বনেটে চড়ে দাপাদাপি বাম-অতিবাম পড়ুয়াদের। বারবার আলোচনায় বসতে চান ব্রাত্য। কিন্তু সমঝোতার রাস্তাতেই হাঁটতে চায়নি বিক্ষোভকারীরা। ঘটনায় আহত হন শিক্ষামন্ত্রী। আহত হন দুই আন্দোলনরত পড়ুয়া। তাঁদের মধ্যে একজন ইন্দ্রানুজ রায়। বাম ছাত্র সংগঠনের অভিযোগ, তাঁর চোখের উপর দিয়ে না কি শিক্ষামন্ত্রী গাড়ির চাকা চলে যায়। এই নিয়ে ছবিও স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে এসএফআই-সহ বাম ছাত্র সংগঠনগুলি। মঙ্গলবার তৃণমূলের আইটি সেল এর প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য সেই ছবি দেখিয়ে প্রশ্ন করেন, এই ছবির ভিডিও কোথায়? সেদিন কোনও স্টিল ছবি পাওয়া যায়নি। সবই ভিডিও। সেই ভিডিও থেকেই এই স্টিল ছবিটি বানানো। বেশিরভাগ ভিডিও যা সংবাদমাধ্যমে পাওয়া গিয়েছে বা সমাজ মাধ্যমে পাওয়া গিয়েছে, সবই পাশ থেকে। সামনে থেকে পাওয়া এই ছবির ভিডিও কোথায়? ভিডিও দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে সেদিন কী ঘটেছিল। ইন্দ্রানুজের চোট নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল নেতা। বলেন, গাড়ির চাকা যদি চোখের উপর দিয়ে চলে গিয়ে থাকে, তাহলে শুধুমাত্র চোখের পাশে চারটি সেলাই পড়ল। কিন্তু কপাল, নাক, গালের হাড় অক্ষত থাকল কী করে! এর পরে ইন্দ্রানুজ মাস দেড়েক আগের একটি স্যোশাল মিডিয়া পোস্ট প্রকাশ্যে আসেন দেবাংশু। সেখানে ইন্দ্রানুজকে বলতে শোনা যায়, এসএফআই তাঁদের “লাশ ফেলে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে”। সিপিআইএমের এখনকার ব্লু আইড বয় ইন্দ্রানুজের এই অভিযোগ সম্পর্কে বাম ছাত্র সংগঠনের কী বক্তব্য এই প্রশ্নও তোলেন দেবাংশু। নিজেদের মিথ্যাচার ধরা পড়ে যাচ্ছে বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি উপাচার্যকে টার্গেট করে সময়সীমা বেঁধে আলোচনার কথা জানিয়েছেন বাম সংগঠনের প্রতিনিধিরা। যদিও তাঁদের বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। উপাচার্যের তরফেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।