সাইবার ক্রাইম রুখতে আগামী ক্যাবিনেটে প্রস্তাব রাখবে কলকাতা পুলিশ: মনোজ বর্মা

ডিসি সাইবার ছিলেন তার ওপর জয়েন্ট সিপি সাইবার পদ তৈরি করা হয়েছে

সাইবার ক্রাইম রুখতে আগামী ক্যাবিনেটে প্রস্তাব রাখতে চলেছে কলকাতা পুলিশ।শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা বলেন, জয়েন্ট সিপি সাইবার এবং জয়েন্ট লিগাল সাইবার, এমন দুটি নতুন পদ করে তৈরি করা হচ্ছে।আশা করছি আগামী ক্যাবিনেটে এই প্রস্তাব পাশ হয়ে যাবে। সাইবার উইং যেটা আছে সেটাকে বিভিন্নভাবে ভাগ করা হচ্ছে। কারণ, যেভাবে অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে তাতে উইং-কে ভাগ করা ছাড়া উপায় নেই। সাইবার সেলকে ছোট ছোট ছোট সেলে ভাগ করা হয়েছে। ডিসি সাইবার ছিলেন তার ওপর জয়েন্ট সিপি সাইবার পদ তৈরি করা হয়েছে। আমরা আশা করছি এইভাবে আমরা সাইবার অপরাধ অনেক কমাতে পারবো।

এরই পাশাপাশি সাইবার অপরাধের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, বাড়ছে সাইবার ক্রাইমের পাল্লায় পড়ে কোটি  কোটি টাকা হারনোর সংখ্যা।যদিও পুলিশ এবং গোয়েন্দাদের তৎপরতায় অনেক ক্ষেত্রেই সেই টাকা প্রতারকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আদালতের নির্দেশ মেনে তা প্রাপকের কাছে ফেরতও দিচ্ছে পুলিশ। কিন্তু তারপরেও অভিযোগ উঠেছে, অনেক ক্ষেত্রেই সেই টাকা ফেরত পেতে প্রচুর ঝামেলার সামনে পড়তে হচ্ছে প্রতারিতদের। আটকে যাওয়া টাকা দ্রুত ও বিনা বাধায় প্রতারিতদের ফেরত দিতে হবে। এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার নগরপাল। সম্প্রতি, এই বিষয়ে একটি বৈঠক হয়।জানা গিয়েছে, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষকে।

কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে কলকাতা পুলিশের ১০টি ডিভিশনে একটি করে সাইবার সেল রয়েছে। যার সর্বাগ্রে আছেন সংশ্লিষ্ট উপ-নগরপাল। এ ছাড়া, লালবাজারে রয়েছে সাইবার অপরাধ থানা। পরিসংখ্যান ও তথ্য বলছে, বর্তমানে দৈনিক গড়ে ১২ থেকে ১৫টি সাইবার অপরাধের অভিযোগ জমা পড়ছে বিভিন্ন সাইবার সেল বা থানায়। শুধুমাত্র তাই নয়, গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, প্রতারকরা বার বার তাদের কাজের ধরন বদল করছে। যার জন্য তদন্তে নেমে হিমশিম অবস্থা হচ্ছে তদন্তকারীদের। এই সমস্যার সমাধানে সম্প্রতি রাজ্য পুলিশ খুলেছে বিশেষ সাইবার ক্রাইম উইং (সিসিডব্লিউ)। এর অধীনেই বর্তমানে কাজ করছে প্রতিটি জেলার সাইবার থানা।

জানা গিয়েছে, এ বার সেই একই ধাঁচে ঢেলে সাজানো হচ্ছে কলকাতা পুলিশের সাইবার উইংকে।সাইবার অপরাধ রুখতে লালবাজারের সাইবার থানাকে নিয়ে ছ’টি শাখা গঠন করা হয়েছে। নগরপাল মনোজ বর্মার নির্দেশ অনুযায়ী, সাইবার থানার সঙ্গে রয়েছে অর্গানাইজড সাইবার ক্রাইম শাখা, সাইবার নিরাপত্তা এবং সাইবার সেফটি শাখা, সাইবার প্রতারণা রিকভারি শাখা, সাইবার ফরেন্সিক ল্যাব এবং সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন ও সাপোর্ট শাখা। এই শাখাগুলি শুক্রবার থেকেই কাজ শুরু করেছে।

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ছ’টি শাখা কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধানের অধীনে কাজ করবে। সাইবার থানায় সাত জন ইনস্পেক্টর থাকবেন। তাদের সঙ্গে থাকবেন ১০ জন অফিসার এবং ২৫ জন কনস্টেবল। অর্গানাইজড সাইবার ক্রাইম শাখায় আছেন ছ’জন ইনস্পেক্টর এবং ২৫ জন অফিসার। তারা প্রয়োজনে স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ তৈরি করবেন। ওই গ্রুপ দ্রুত সাইবার অপরাধ চিহ্নিত করে তা ঠেকানোর কাজ করবেন। বাকি শাখাগুলির দায়িত্বে থাকছেন এক জন বা দু’জন করে ইনস্পেক্টর। সবমিলিয়ে সাইবার অপরাধ ঠেকাতে কোমর বেধে নামছে কলকাতা পুলিশ।