বাংলার প্রতি মোদি সরকারের বঞ্চনা শুধু বরাদ্দ বন্ধেই সীমিত নয়, বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রমীদের শ্রদ্ধা জানাতেও কার্পণ্য তাদের। রাজ্যসভায় করা তৃণমূল (TMC) সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Ritabrata Banerjee) প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রের বাংলা বিরোধিতার পর্দাফাঁস। ব্রিটিশ আমলের সেলুলার জেল যেখানে ইংরেজ আমলে কালাপানি পেরিয়ে পাঠানো হত অসংখ্য বাঙালী বিপ্লবীকে। সেখানে নেই উল্লাসকর দত্ত, বারীন ঘোষের মতো বিপ্লবীদের কোনও মূর্তি। এমনকী, ঋতব্রতর করা প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, এইরকম কোনও পরিকল্পনাও নেই তাঁদের।

আন্দামানের (Andaman) সেলুলার জেল নিয়ে আবেগপ্রবণ বাঙালী। সেই সেলুলার জেল নিয়ে কেন্দ্রকে তিনটি মোক্ষম প্রশ্ন করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত (Ritabrata Banerjee)। আর তাতেই মোদি সরকারের বাংলা বিরোধিতার মুখোশ খুলে গেল।

১৩ ফেব্রুয়ারি ঋতব্রত জানতে চান,
ব্রিটিশ শাসনকালে সেলুলার জেলে কতজন বিপ্লবী ছিলেন? তাঁদের মধ্যে অবিভিক্ত বাংলার কতজন ছিলেন?
উত্তরে কেন্দ্র জানায়, ৫৮৫জন বিপ্লবী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৩৯৮ অবিভিক্ত বাংলার। এছাড়াও ইউনাইটেড প্রভিন্সের থেকে অনেক বাঙালী স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন।

১৩ মার্চ ঋতব্রত প্রশ্ন করেন,
আন্দামানের সেলুলার জেল জাতীয় সৌধ কি না?
উত্তরে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দেয়, না সেটা করা হয়নি। এতে বিষ্ময় প্রকাশ করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। তিনি বলেন, যে জায়গা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও শ্রদ্ধার। সেই স্থানকে জাতীয় সৌধ ঘোষণা করেনি কেন্দ্র! শুধু তাই নয়, এই বিষয়ে তাদের কোনও পরিকল্পনাও নেই।


২৭ মার্চ তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত প্রশ্ন তোলেন,
বাঙালী বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত ও বারীন ঘোষের কোনও মূর্তি আন্দামান সেলুলার জেলে আছে কি না?
ঋতব্রতর কথায়, একটি বড় করে না বলেছে কেন্দ্র। এমনকী, অদূর ভবিষ্যতে তেমন কোনও পরিকল্পনাও নেই তাদের! এর পরেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তৃণমূল সাংসদ প্রশ্ন তোলেন, সেলুলার জেলে উল্লাসকর দত্তের মূর্তি থাকবে না! ইংরেজ আমালে এতো অত্যাচার কোনও বিপল্পীর উপর হয়নি যা তাঁর উপর হয়েছে। তখন সেলুলার জেলে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। শুধুমাত্র উল্লাসকর দত্তকে শক দেওয়ার জন্য। এত অত্যাচার আর কোনও বিপ্লবীর উপর হয়নি। ১৯০৯ থেকে ১৯২০ দু দফায় সেখানে ছিলেন উল্লাস দত্ত।


আর আন্দামান সেলুলার জেল ১৯১৫ সালে ভাঙেন বারীন ঘোষ। সেটা যে ভাঙা যেতে পারে সেটা কেউ কোনও দিন ভাবতেও পারেনি। ঋতব্রতর কথায়, সেলুলার জেরের প্রতিটি সেলে রয়েছে বাঙালী বিপ্লবীদের বীরত্বের গাঁথা। সেখানেই উল্লাস দত্ত, বারীন ঘোষের কোনও মূর্তি রাখছে না। তীব্র কটাক্ষ করে তৃণমূল সাংসদ বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে বিজেপির কোনও ভূমিকা নেই। আর বাঙালী বিরোধিতায় বাংলার বিপ্লবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেও অনীহা কেন্দ্রের মোদি সরকারের।

–

–

–
–

–
