Saturday, August 23, 2025

ভারতীয় বিমানে বৃহত্তম দুর্ঘটনা: দায়ী কারা, গলদ কোথায়?

Date:

Share post:

ভারতের বিমান পরিবহনে প্রতিবছর প্রায় একটি করে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। যার পিছনে আবহাওয়া থেকে প্রযুক্তিগত বিভিন্ন কারণ থাকে। বৃহস্পতিবারের এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) ড্রিমলাইনারের (Dreamliner) দুর্ঘটনা সেইসব দুর্ঘটনাকে ঝাপিয়ে গিয়েছে। ভারতীয় বিমানের সবথেকে বড় দুর্ঘটনা এটি। মাত্র ৩২ সেকেন্ডের মধ্যে যে মারাত্মক দুর্ঘটনা তার পেছনে কারণ খুঁজতে ব্ল্যাক বক্স (black box) আর ককপিট ডেটা রেকর্ডার (CDR) ভরসা। সেইসঙ্গে পাইলটের শেষ কয়েকটি শব্দও তদন্তে সাহায্য করছে।

আমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে ড্রিমলাইনারটি ওড়ার কয়েক সেকেন্ড পরেই পাইলট (pilot) সুমিত সবরওয়ার মে-ডে কল (Mayday call) করেছিলেন। কন্ট্রোলে তিনি জানিয়েছিলেন মে-ডে। নো থ্রাস্ট (thrust)। লুসিং পাওয়ার। আনেবল টু লিফট (lift)। অর্থাৎ গতি হারাচ্ছি, শক্তি হারাচ্ছি, উঠতে পারছিনা।

ঠিক কোন কোন কারণে এই সমস্যাগুলির সম্মুখিন হতে পারেন একজন পাইলট

প্রথমত, মেইনটেনেন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং টিম। তারাই এয়ারক্রাফ্টকে ‘ফিট টু ফ্লাই’ (fit to fly) সার্টিফিকেট দিয়েছিল। থ্রাস্ট (thrust) কাজ না করায় সেই সার্টিফিকেট আদৌ কতটা দেখে দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। সেখানে কোনও গাফিলতি ছিল কিনা দেখা হবে তদন্তে।

দ্বিতীয়ত, এয়ার ইন্ডিয়া অপারেশন্স ও ম্যানেজমেন্ট। সকালে প্যারিস থেকে দিল্লি পৌঁছয় ড্রিমলাইনারটি। দু’ঘণ্টার মধ্যে সেটি দিল্লি থেকে আমেদাবাদ পৌঁছয়। এবং আমেদাবাদ থেকে লন্ডনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। এত কম সময়ে বিমানকে তৈরি করার জন্য কর্মীদের উপর কতটা চাপ ছিল। সেই চাপ দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ কী দায় এড়াতে পারেন।

তৃতীয়ত, জ্বালানি সরবরাহকারী ও গ্রাউন্ড স্টাফ। যখন বিমান থ্রাস্ট পায় না তখন তার পিছনে জ্বালানিরও খানিকটা দায়িত্ব থাকে। সেক্ষেত্রে যে জ্বালানি ভরা হয়েছিল তা কতটা খাঁটি ছিল বা জ্বালানির প্রেসার সঠিক ছিল কিনা তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। যে দায় বর্তায় গ্রাউন্ড স্টাফদের উপর।

চতুর্থত, যদি বিমানের থ্রাস্ট সিস্টেমে প্রাথমিক সমস্যা থাকে তবে আগে তা নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয় কেন। সেক্ষেত্রে বোয়িং-কেও তদন্তের আওতায় আনা হতে পারে।

পঞ্চম এবং শেষ, ডিজিসিএ (DGCA)। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কারণে শো-কজ নোটিশ পেয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া (Air India)। এরপরেও কোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি ডিজিসিএ-র তরফে। এরপর এত বড় দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার পরে তদন্ত শুরু করছে ডিজিসিএ। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনার দায় কী এড়াতে পারে ডিজিসিএ (DGCA), উঠেছে প্রশ্ন।

spot_img

Related articles

ফলতা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইলিশ উৎসব, পড়ুয়াদের জন্য পাতে ভাপা–ভাজা ইলিশ

বাজারে ইলিশের যা আগুন ছোঁয়া দাম তাতে উচ্চবিত্তদেরই পাতে ইলিশ জোটাতে হিমশিম খাওয়ার জোগাড়। কিন্তু সেই  দুর্মূল্যের বাজারেই...

আমেরিকায় চিঠি–পার্সেল পাঠানোয় বিধিনিষেধ, সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ডাক বিভাগের 

ভারত–মার্কিন শুল্কযুদ্ধের জেরে এবার বড়সড় প্রভাব পড়ল ডাক পরিষেবায়। আমেরিকায় চিঠি ও পার্সেল পাঠানোর প্রক্রিয়ায় বিধিনিষেধ জারি করল...

ডেঙ্গি সংক্রমণ রুখতে তৎপর রাজ্য! জেলাগুলিকে একগুচ্ছ কড়া নির্দেশ মুখ্যসচিবের 

রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় শনিবার নবান্নে জেলাশাসক ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব...

দায় বেসরকারিকরণ নীতির! মোদিরাজে পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক কর্মী

মোদি সরকারের আমলে বিগত পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক সরকারি কর্মী। সম্প্রতি লোকসভায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল কেন্দ্র।...