Friday, August 22, 2025

বাংলায় ১০০ দিনের প্রকল্প চালু করতে কেন্দ্রকে কড়া নির্দেশ হাই কোর্টের, তৃণমূলের দাবির মান্যতা: মন্তব্য নেতৃত্বের

Date:

Share post:

কোনও কারণেই কেন্দ্রীয় প্রকল্প অনন্তকাল ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া যায় না। অবিলম্বে সেটা চালু করতে হবে। বুধবার, শুনানিতে কেন্দ্রকে কড়া নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। ১ অগাস্ট থেকে ফের এই প্রকল্প শুরু করতে হবে। এটা তৃণমূলের (TMC) দীর্ঘদিনের দাবি, আন্দোলন মান্যতা পেল- মত নেতৃত্বের।

নানা অজুহাতে বাংলার একশো দিনের (MGNREGA) কাজ প্রকল্প দিনের পর দিন বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র। এর বিরুদ্ধে বারবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি আদায়ে পথে নেমেছেন। দিল্লি পর্যন্ত গিয়ে আন্দোলন করছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বঙ্গ বিজেপির নেতাদের চক্রান্তে বাংলাকে বঞ্চিত করেছে কেন্দ্র। গত তিনবছর ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বাংলাকে একটি টাকাও দেয়নি মোদি সরকার। কেন্দ্রের সেই সিদ্ধান্ত যে রাজ্যের প্রতি চরম বঞ্চনা তা মেনেছিল বামেরাও।

এদিন মামলার শুনানির সময়ে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, “শুরু থেকেই একটা কথা বলছি, ১০টা আপেলের মধ্যে কয়েকটা পচা হতে পারে, কিন্তু বাকিরা তো স্বচ্ছ?” তাঁর কথায়, “কোনও কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে অনন্তকালের জন্য ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া যায় না।“ প্রধান বিচারপতির তাঁর নির্দেশে জানান, দুর্নীতি রোধে যেকোন ধরনের শর্ত আরোপ করতে পারবে কেন্দ্র। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের জন্যেও বিশেষ শর্ত আরোপ  করতে পারবে কেন্দ্র। যেকোনও ধরনের নিয়ম তৈরি করতে পারবে। এমনকী কেন্দ্র চাইলে কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমের সরাসরি নির্দিষ্ট ব্যক্তির একাউন্টে টাকা পাঠাতেও পারবে। দুর্নীতি রোধে প্রয়োজনীয় নজরদারি চালাতে পারবে কেন্দ্র। প্রয়োজনে রাজ্যের সব জেলাতেই তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে কেন্দ্র।

প্রধান বিচারপতির বলেন, ”যা হয়েছে, সেটা অতীত। কিন্তু প্রায় তিন বছর ধরে প্রকল্প বন্ধ। এবার নতুন করে চালু করতেই হবে। কেন্দ্র এই প্রকল্প স্থগিত রাখতে পারে না।” ১ অগাস্ট থেকে রাজ্যে ফের ১০০ দিনের প্রকল্প চালু করার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি।

একশো দিনের কাজ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে উত্তর প্রদেশ, গুজরাটে টাকা বন্ধ হয়নি। কিন্তু বাংলায় প্রকল্প বন্ধ করা হয়েছে। পর পর দুটি বাজেটে একটা টাকাও বরাদ্দ করা হয়নি। এর জন্য রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রকে দায়ী করেছে রাজ্যের শাসকদল।

এদিন কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) রায়ের পরে তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, এই রায়ের বিষয় খতিয়ে দেখে রাজ্যে পরবর্তী পদক্ষেপ জানাবে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রের বৈষম্য ছিল। ৬৯ লক্ষ জবকার্ড হোল্ডারকে ৩৭০০কোটি টাকা দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। দাবি আদায়ে দলনেত্রী রেড রোডে ধর্না দিয়েছে। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে ধর্না দিয়েছেন। দিল্লি পুলিশের দমনপীড়নের শিকার হয়েছেন অভিষেক-সহ তৃণমূলের সাংসদরা। এবার হাই কোর্টের রায়ে তৃণমূলের এতদিনের দাবি মান্যতা পেল। এটি দলের লড়াই-আন্দোলনের জয় বলে মন্তব্য তৃণমূল নেতৃত্বের।
আরও খবরশিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিপুল সাড়া, একদিনে অনলাইনে আবেদন ১০ হাজারের বেশি! 

spot_img

Related articles

বাংলা বিদ্বেষীকে পাশে বসিয়ে বাঙালি প্রেম! মোদির দ্বিচারিতাকে ধুইয়ে দিল তৃণমূল

বাংলায় এলেই বাংলা ভাষায় বক্তৃতা। এ তো নরেন্দ্র মোদির রেওয়াজ হয়েছেই। সম্প্রতি তিনি উত্তর ভারতের গোবলয়ের দেব-দেবী ছেড়ে...

রায় বেরোনোর পরেই জয়েন্টের তালিকা প্রকাশ: বোর্ডের কৃতিত্বে আনন্দ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

কলকাতা হাই কোর্ট ওবিসি সংক্রান্ত যে জট দীর্ঘদিন ধরে পাকিয়ে রাখার চেষ্টা করে চলেছিল, শুক্রবার তা প্রতিহত হয়...

বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীর পেনশনের আবেদনও খারিজ! আদালতে মুখ পুড়ল কেন্দ্রের

ইতিহাসকে বিকৃত করার বিজেপি-আরএসএসের যৌথ পরিকল্পনায় চরম দুর্দশা বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। নরেন্দ্র মোদি মুখে বাঙালি বিপ্লবীদের নাম নিলেও...

নতুন রঙ নতুন আনন্দ: বাংলার দুর্গাপুজোকে মোদির বন্দনায় কটাক্ষ তৃণমূলের

বাংলায় পুজো করতে গেলে আদালতের অনুমতি লাগে। প্রায় প্রতিদিন ছুটে ছুটে এসব প্রচার করে বেড়াচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা...