ত্রিপুরায় বিজেপির সঙ্গে জোটে থেকেও এবার ক্ষোভে ফেটে পড়ল আঞ্চলিক দল তিপ্রামোথা। দলের অভিযোগ, বিজেপি সরকার প্রতিশ্রুতি রাখেনি, ভেঙেছে আস্থা। সবচেয়ে বড় অভিযোগ—বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ বন্ধে কোনও কার্যকর পদক্ষেপই নেয়নি রাজ্য বা কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির উদ্দেশে পদযাত্রায় নামল তিপ্রামোথার শীর্ষ নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সরাসরি বার্তা পৌঁছে দিতেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা।

শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে দলের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে বেআইনি অনুপ্রবেশ রোধে বিজেপি সরকার ব্যর্থ। দলীয় নেতা ডেবিট মুরা সিং বলেন, “বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ এখন আর শুধু সীমান্তবর্তী সমস্যা নয়, এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। কিন্তু রাজ্য সরকারের ভূমিকা হতাশাজনক। ত্রিপুরার মানুষ তাঁদের জমি, অধিকার, সংস্কৃতি—সবকিছু হারাচ্ছেন। নিজের রাজ্যে দাঁড়িয়ে আজ অস্তিত্বের লড়াই করতে হচ্ছে।”

তিপ্রামোথার দাবি, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের ফলে স্থানীয় জনগণ কর্মসংস্থান ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বহু বছর ধরে স্মারকলিপি, বিক্ষোভ, দাবি-দাওয়া চললেও কোনও স্থায়ী সমাধান মেলেনি। এই ইস্যুতে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে ডেবিট বলেন, “যদি অনুপ্রবেশ বন্ধে কেন্দ্র পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আমরা বিজেপি সরকারের থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করতেও পিছপা হব না।”

দলের নেতৃত্বের একাংশের দাবি, ২০২3 সালে বিজেপির সঙ্গে আলোচনার পর তাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, তিপ্রা জনগণের স্বার্থে বিশেষ প্রশাসনিক ক্ষমতা ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিয়ে ভাববে কেন্দ্র। কিন্তু এক বছরের মধ্যেও সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আবার অনুপ্রবেশ ইস্যুতে নীরব কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার—ফলে ক্ষোভ তীব্রতর হয়েছে।

দিল্লিগামী পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন তিপ্রামোথার শীর্ষ নেতারা। আগামী দিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে দলের। রাজ্য রাজনীতিতে এই অবস্থানবদল নিঃসন্দেহে বড় তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ বিজেপি-তিপ্রামোথা জোটই ত্রিপুরায় রাজনৈতিক ভারসাম্য নির্ধারণে বড় ভূমিকা নিয়েছিল। এবার সেই সম্পর্কেই দেখা দিল টানাপড়েন। কেন্দ্র কী পদক্ষেপ নেয়, এখন সেদিকেই নজর ত্রিপুরার মানুষের।

আরও পড়ুন – প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার নীরব মোদির ভাই নেহাল! ফেরনো হবে ভারতে?

_

_

_

_

_
_
_
_