শুধুমাত্র বাংলা বলার কারণে দিল্লিতে কাজ করতে যাওয়া রাজ্যের ছয় পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। এই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) দায়ের হয় হেবিয়াস কর্পাস (HABEAS CORPUS)মামলা। ওই মামলায় বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য সচিব ও দিল্লির মুখ্য সচিবকে সমন্বয় সাধন করে বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করতে হবে কলকাতা হাইকোর্টে। এই মামলায় বুধবারের মধ্যে সব পক্ষকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ডিভিশন বেঞ্চ।

এদিন মামলার শুনানি চলাকালীন আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, দিল্লী থেকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বাবা, মা এবং ৮ বছরের সন্তানকে। তাঁরা ভারতের নাগরিক। দিল্লী পুলিশকে সমস্ত নথি পাঠানো সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত তাদের তরফে কোনো জবাব আসেনি। এই মামলার ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়ার তরফে ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল ধীরাজ ত্রিবেদী বলেন, তিনি দিল্লী পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন এই বিষয়ে। তাঁরা ঠিক করবেন এই মামলায় তাদের হয়ে কে সওয়াল করবেন। তবে এই মামলার গুরুত্ব বুঝে ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, গতকালও তারা প্রায় একই রকমের একটি মামলায় নির্দেশ দিয়েছেন যেখানে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কোনো একজন আধিকারিককে (যার পদমর্যাদা সচিবের নিচে নয়) নিয়োগ করার জন্য। ওই আধিকারিক ওড়িশা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।এর পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, ওই মামলায় ওড়িশায় বাংলা বলার কারনে দুই পরিযায়ী শ্রমিককে আটক করে রাখা হয়েছিল।এখানে আবেদনকারীদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরই ডিভিশন বেঞ্চ ডেপুটি সলিসিটর জেনারেলকে বলেন, এই বিষয়ে নজর দিতে।

সম্প্রতি দিল্লিতে কাজ করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হন বীরভূম জেলার পাইকোর জেলার ৬ পরিযায়ী শ্রমিক। অভিযোগ, দিল্লি পুলিশ সোনালি খাতুল, সুইটি, বিবি, দানিস শেখ, কুরবান শেখ, ইমাম দেওয়ানদের গত ২৫ জুন তাদের ‘পুশব্যাক’ করে। সেই ঘটনাতেই বিচার চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে ওই ছয় পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই ওড়িশায় বাংলা বলার কারণে ‘বাংলাদেশি’ ভেবে দুই পরিযায়ী শ্রমিককে বেআইনিভাবে আটক করেছিল পুলিশ। সেই মামলায় রাজ্যকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court)। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্ত্তীর ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের মুখ্য সচিবকে এই ঘটনায় যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য একজন সচিব পদমর্যাদার আধিকারিককে নিয়োগ করার নির্দেশ দেয়। সেই আধিকারিক ওড়িশা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন ওই বিষয়ে। আগামী সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানিতে কি পদক্ষেপ নেওয়া হল সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ।

এদিন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম (Samirul Islam)সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখেন, ‘ওড়িশার পর, আজ হেবিয়াস কর্পাস পিটিশনের শুনানির সময়, এক নাবালকসহ ৬ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখোমুখি দিল্লি সরকার। হাইকোর্ট দিল্লির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে বুধবারের মধ্যে এই বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ জারি করেছে।’ তিনি আরও লেখেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলাভাষী পরিযায় শ্রমিকদের অধিকারের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের লড়াই চলবে।

After Odisha, now today while hearing the habeas corpus petitons , the Delhi government faces questions from the Calcutta High Court over deportation of six persons including a minor, to Bangladesh.
Not just about undemocratic or unlawful detention—this time the Court seeks to…— Samirul Islam (@SamirulAITC) July 11, 2025
–

–

–

–

–

–
–
–
–
–
–
–