মোদির প্রশ্নের সপাট জবাব তৃণমূলের

Date:

Share post:

বাংলায় এসে একের পর এক মিথ্যাচার করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)- শুক্রবার, সভার পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে ধুয়ে দিল তৃণমূল। মোদির প্রশ্ন ধরে ধরে সপাট জবাব দেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) ও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।

মোদি: পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পালিয়ে বাঁচতে চাইছে। ছোট ছোট কাজের জন্য পর্যন্ত অন্য রাজ্যে যেতে হচ্ছে।
তৃণমূল: রাজ্য থেকে কেউ যাচ্ছে না। যাঁরা দক্ষ, তাঁদের কাজের জন্য অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

মোদি: এই অবস্থা থেকে বাংলাকে বার করতে হবে। বাংলা পরিবর্তন চায়। বাংলা উন্নয়ন চায়। তৃণমূল যাবে তবেই পরিবর্তন আসবে।
তৃণমূল: দলবদলুদের দিয়ে বাংলায় পরিবর্তন আসবে না। মোদির মঞ্চে যাঁরা বসেছিলেন, সবাই তৃণমূলের ছেঁটে ফেলা লোক।

মোদি: বড়রা আমার প্রণাম নেবেন। ছোটরা ভালোবাসা। জয় মা কালী। জয় মা দুর্গা।
তৃণমূল: আমরাও রামকে শ্রদ্ধা করি। এমনকী হল, বাংলায় পরিবর্তন-পরিবর্তন বলতে বলতে মোদির (Narendra Modi) বক্তব্যের পরিবর্তন হয়ে গেল। জয় শ্রীরাম থেকে সরে জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা। কেন হল- এর উত্তরেই আছে বাংলার অন্দরের কথা।

মোদি: বাংলার হাসপাতালও মেয়েদের জন্য সুরক্ষিত নয়। তখনও দেখা গিয়েছে, কী ভাবে অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে তৃণমূল। এর পর কলেজেও একটা মেয়ের উপর কী ভাবে অত্যাচারা চালানো হল।
তৃণমূল: একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। আর বিজেপিশাসিত রাজ্যে হাসপাতালে ঢুকে পড়ুয়ার বুকের উপর বসে গলা কেটেছে দুষ্কৃতী, ওড়িশার (Odisha) কলেজে শিক্ষকের যৌন হেনস্থার (sexual harassment) জেরে আত্মহত্যা করল ছাত্রী, রাস্তায় বসে সাক্ষী মালিকদের মতো সোনার মেয়েরা বিজেপির সাংসদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছেন। বিলকিসের ধর্ষকদের দলে টানছিল বিজেপি।

মোদি: তৃণমূল নিজের স্বার্থে অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে ফন্দি এঁটেছে। অনুপ্রবেশকারীদের (illegal immigrants) দেশে কোনও জায়গা নেই। যে ভারতের নাগরিক নয়, বেআইনি অনুপ্রবেশ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সংবিধান মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তৃণমূল: এটা তো প্রধানমন্ত্রী আত্মঘাতী গোল করেছেন। সীমান্ত পাহারা দেয় বিএসএফ (BSF)। সেটা তো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হাতে। যদি অনুপ্রবেশ হয় সেটা কেন্দ্রের ব্যর্থতা।

মোদি: বাঙালি অস্মিতারক্ষাই বিজেপির প্রথম লক্ষ্য। বাংলা ভাষাকে গুরুত্ব দেন বলে ধ্রুপদী ভাষার সম্মান দিয়েছেন।
তৃণমূল: পালিয়ে ভয়ে বহু মহিলা, পুরুষ পালিয়ে চলে আসছেন। রাজবংশীরা এখানকার নাগরিক। ভারতের নাগরিক। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ দেওয়ার পর নোটিস দিচ্ছেন। কারণ, তাঁরা বাংলায় কথা বলছেন। গুজরাটে ব্যবসায়ীকে পুলিশ জিজ্ঞাসা করছেন আপনি বাঙালি? কারণ, তাঁর দোকানের সামনে বাংলায় লেখা। বাংলা লেখা অপরাধ? আপনি নিজেই নিয়ম লঙ্ঘন করছেন।

মোদি: বিজেপি ক্ষমতায় এলেই বাংলা দেশের অন্যতম শিল্পসমৃদ্ধ রাজ্য হয়ে উঠবে। এটা তাঁর বিশ্বাস। তৃণমূল বাংলাকে শিল্পোন্নত হতে দিচ্ছে না
তৃণমূল: একজন প্রধানমন্ত্রী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একরাশ মিথ্যে তথ্য দিয়ে গেলেন। উন্নয়ন নিয়ে কতটা মিথ্যাচার করলেন! উনি খালি হাতে এসে বড় বড় কথা বলছেন কেন? বাংলার ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি বকেয়া পাওনা। সেটা উনি দিচ্ছেন না। একশো দিনের কাজ করিয়েও টাকা দেননি। আবাসের টাকা দেননি। সবটা রাজ্য সরকার দিয়েছে। দৃশ্যমান বকেয়া দিচ্ছেন না, অদৃশ্য ৫ হাজার কোটি দেখিয়ে গেলেন! কিন্তু এটা করার কথাই ছিল। কোনও দয়া উনি করছেন না। আবাসের টাকা দেননি। যেটা দীর্ঘ দিন ধরে ওনাদের করার কথা, কেউ দয়া চাইছে না। মিথ্যাচার কোন জায়গায় যায়, ওদের প্রতিশ্রুতি ছিল, বছরে ২ কোটি চাকরির। পার্লামেন্টেরই স্ট্যান্ডিং কমিটিতে বলেছেন, মাত্র ২২ লাখ চাকরি হয়েছে। দেশের যুবকদের মধ্যে ৩০ শতাংশ বেকার। সারাদেশে বেকারত্বের গড় বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের গড়টা নিম্নমুখী।

মোদি: পশ্চিম ভারতের মতোই পূর্ব ভারতও হবে সমান উন্নত। জয়পুরের আদলে গড়ে উঠবে জলপাইগুড়ি, বেঙ্গালুরুর মতো তথ্যপ্রযুক্তি হাবে রূপ নেবে বীরভূম। যেমন পশ্চিম ভারতে মুম্বই, তেমনই পূর্ব ভারতে পটনা হবে পুণের মতো, জলপাইগুড়ি হয়ে উঠবে জয়পুর, বীরভূমেও হবে বেঙ্গালুরুর মতো উন্নয়ন।
তৃণমূল: বাংলার উন্নয়ন দেখতে হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে হবে, মোদির কাগুজে স্বপ্ন বাংলার মানুষ মেনে নেবে না। উনি জানেনই না জলপাইগুড়ির বাস্তবতা কী।

spot_img

Related articles

ওয়াংচুকের মুক্তির দাবিতে সুপ্রিম দ্বারস্থ স্ত্রী গীতাঞ্জলী

লাদাখে বিক্ষোভের ঘটনায় ধৃত সোনম ওয়াংচুকের (Sonam Wangchuk) বিস্তারিত পর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত গবেষক -...

পুজোর ভিড়ে উৎশৃঙ্খলা, পাঁচ দিনে কলকাতায় গ্রেফতার ৬ হাজারের বেশি!

দুর্গাপুজোর (Durga Puja) বাঁধন ছাড়া উচ্ছ্বাস আর উন্মাদনার ভিড়ে যাতে আইনশৃঙ্খলা কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় সেদিকে সজাগ...

কলকাতার আকাশে দুর্যোগের মেঘ! একাদশীতে কমলা সর্তকতা তিলোত্তমায় 

পাঁচ দিনের আনন্দের পর সপরিবারে কৈলাসে পাড়ি দিয়েছেন উমা। শাস্ত্র মেনে দশমীতে দেবীর দর্পণ-ঘট বিসর্জন হলেও এখনও মৃন্ময়ী...

কলকাতার সঙ্গে জুড়ে গেল চিন: ঘোষণা হল প্রথম উড়ানের দিন

ভারত সরকার চিনের সঙ্গে নতুনভাবে যোগাযোগের বার্তা দিয়েছিল। ভারত ও চিনের মধ্যে সরাসরি উড়ানের প্রস্তাবও হয়েছিল। এবার কলকাতা...