১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই ইতিহাসের এক নির্মম দিন। সেই দিন পুলিশের গুলিতে শহিদ হয়েছিলেন ১৩ জন তরুণ তৃণমূল যোদ্ধা। সেই আত্মত্যাগের স্মৃতিতে শহিদ তর্পণ দিবসে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে সমগ্র তৃণমূল পরিবার। শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে সোমবার ধর্মতলায় বাংলার সকল মা-মাটি-মানুষকে আমন্ত্রণ জানালেন তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আমন্ত্রণ জানিয়ে এদিন মু্খ্যমন্ত্রী লেখেন,

বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই আমাদের ১৩ জন সহযোদ্ধা সিপিআইএমের পুলিশের বর্বরোচিত অত্যাচার এবং নির্মম গুলিতে অকালে প্রাণ হারান।ঐ দিন বন্দন দাস, মুরারী চক্রবর্তী, রতন মণ্ডল, বিশ্বনাথ রায়, কল্যাণ ব্যানার্জী, অসীম দাস, কেশব বৈরাগী, শ্রীকান্ত শর্মা, দিলীপ দাস, রঞ্জিত দাস, প্রদীপ রায়, মহম্মদ খালেক এবং ইনু শহিদ হন। তাঁদের বিনম্র চিত্তে প্রণাম জানাচ্ছি এবং শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করছি।এছাড়াও, সকল ভাই-বোনেরা যাঁরা বিভিন্ন আন্দোলন ও কর্মসূচিতে শহিদ হয়েছেন, তাঁদের সকলকে এই শহিদ তর্পণ দিবসে জানাই প্রণাম ও আন্তরিক শ্রদ্ধার্ঘ্য।

ধর্মতলায় বাংলার সকল মা-মাটি-মানুষকে আমার সাদর আমন্ত্রণ রইল। আসুন, মহান শহিদ তর্পণে অংশ নিন এবং একুশে জুলাইয়ের সমাবেশকে সাফল্যমণ্ডিত করুন।

বাংলার প্রতিটি প্রান্ত থেকে মাটি-মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে কলকাতার পথে হাজার হাজার কর্মী-সমর্থকের ঢল। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ, পাহাড় থেকে সাগর—একুশের আবেগে বুঁদ হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি।

এই সমাবেশ শুধু শহিদদের শ্রদ্ধা জানাবার দিন নয়, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার দিন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই মঞ্চ থেকেই আগামী লড়াইয়ের দিশা দেবেন বলেই রাজনৈতিক মহলের জোর জল্পনা।

একুশের প্রস্তুতিতে চূড়ান্ত ব্যস্ত তৃণমূল শিবির। ধর্মতলার মূল মঞ্চে ইতিমধ্যেই সাজসজ্জার কাজ শেষের পথে। র্যাম্পসহ আধুনিক পরিকাঠামোয় তৈরি হয়েছে শহিদ মঞ্চ। সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক, রাজডাঙা, ধর্মতলার একাধিক অস্থায়ী শিবিরে জমেছে ভিড়। ইতিমধ্যেই উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসা হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক শহরে উপস্থিত। রবিবারের মধ্যেই সেই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন। দলের শীর্ষ নেতারা যেমন সুব্রত বক্সী, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিমকে একাধিক পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। শহিদ পরিবার, বিশিষ্ট নাগরিক, সাংসদ-মন্ত্রী সহ দলীয় নেতৃত্ব থাকবেন মূল মঞ্চে।

নগরপাল মনোজ ভার্মার নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কতায়। গোটা ধর্মতলা এলাকায় সিসিটিভির নজরদারি, যান নিয়ন্ত্রণ, ও ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে রয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা। সোমবার ভোর হতেই ধর্মতলা মুখরিত হবে স্লোগানে, আবেগে, জনসমুদ্রের উৎসাহে।
তৃণমূল কংগ্রেসের ইতিহাসে এবারের একুশে জুলাই হতে চলেছে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

আরও পড়ুন- গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম থেকে করুণাময়ী: কর্মীদের ব্যবস্থাপনার তদারকিতে অভিষেক

_
_
_
_
_