বাংলা সিনেমা জগতের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় (Sabitri Chatterjee) নাকি রাজনৈতিক নেত্রী হতে চেয়েছিলেন! আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রীতিমত ভাষণ দেওয়া অনুশীলনও করেছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। কিন্তু শেষমেষ ইচ্ছে পূরণ হয়নি। স্মৃতিচারণায় উত্তমের নায়িকা।

কলকাতার জিডি বিড়লা সভাঘরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কিশোর বয়সের মজার গল্প শোনালেন কুমিল্লা কন্যা। বয়স তাঁর কাছে একটা সংখ্যা মাত্র। এখনও সিনেমা সিরিয়ালে দাপিয়ে অভিনয় করে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন এ প্রজন্মের নায়িকাদের। ‘ভ্রান্তিবিলাস’ অভিনেত্রী নিজের অল্প বয়সের ইচ্ছের কথা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন তিনি নাকি অভিনেত্রী নয় বরং দলীয় নেত্রী হতে চেয়েছিলেন। সাবিত্রীর কথায়, “আমি একবার বাবার সঙ্গে একটা মিটিংয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে বড় একজন নেত্রী বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। তখন আমরা ঢাকায় থাকতাম। ঢাকার রমনা উদ্যানে সেই মিটিং হয়েছিল। এক লক্ষ লোক হয়েছিল। নেত্রী খুব হাত-পা নেড়ে ভাষণ দিচ্ছিলেন। আমার খুব ভাল লাগল। সেদিন থেকে আমার ইচ্ছে হল আমি নেত্রী হব। বাবাকে বাড়িতে আসতে আসতে বললাম ‘বাবা কী ভাবে নেত্রী হওয়া যায়?’ বাবা বললেন ‘এখন অনেকটা হাঁটতে হবে এখন বলতে পারব না। বাড়ি চল।’কিন্তু আমার মাথার থেকে সেই ইচ্ছে গেল না। আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নানা ভাবে ভাষণ এটা ওটা দিতে লাগলাম। কিন্তু তাতেও আমার মনের ইচ্ছে পূরণ হল না। কারণ আমি বলছি কেউ তো শুনতে পাচ্ছে না।”

তবে এখানেই থেমে থাকেননি অভিনেত্রী। বাংলা সিনেমার সাদা কালো পর্দার মজাদার নায়িকা আরও বলেন, “কলের গানের চোঙা নিয়ে পাড়ায় ঘুরে ঘুরে ভরদুপুরে বলতাম ‘আপনারা চিন্তা করবেন না। আমি এই দলে যোগদান করেছি। আপনাদের দেখতে চলে এসছি। আমি আপনাদের দেখব, খেতে পরতে দেব’, এসব চিৎকার করে বলতে লাগলাম। ঠিক তিনদিন বাদে দেখলাম পাড়ার মহিলারা সব এসে আমাদের বৈঠকখানায় দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভাবলাম তাঁরা হয়তো আমার প্রশংসা করতে এসছেন। কিন্তু বাবা আমাকে ঠাস করে একটা থাপ্পড় মেরে বললেন ‘তুমি এগুলো কী আরম্ভ করেছ? তুমি সবাইকে খেতে পরতে দেবে? তুমি কে খেতে দেবার? আমি বাজার করি তবেই তো তুমি খাও। আসলে পাড়ার মহিলারা বাবার কাছে নালিশ করতে এসেছিলেন যে তাঁরা দুপুরে আমার চিৎকারের ঠেলায় ঘুমোতে পারে না।আমি সব বন্ধ করে দিলাম। আমার ইচ্ছে পূরণ হল না। হতে চেয়েছিলাম নেত্রী হয়ে গেলাম অভিনেত্রী।”

–

–

–

–

–

–

–

–
–