দেশজুড়ে চালু ‘অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক সংশোধনী আইন’। বুধবার, বিদেশিদের জন্যে সমস্ত রাজ্যে ডিটেনশন সেন্টারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনুপ্রবেশকারী হিসেবে যারা ভারতে এসেছেন তাদের জন্যই এই সিদ্ধান্ত। এই ইস্যুতে এবার বিজেপিকে তোপ দাগলেন তৃণমূলের (TMC) সোশ্যাল মিডিয়া সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debanshu Bhattacharya) এবং সিপিএম (CPIM) নেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)।

দেবাংশু ভট্টাচার্য জানান, প্রথমত, CAA- আইন পাশ হয়েছিল ২০২০ সালে। নিয়ম বানাতে বানাতে ৪ বছর লাগল। লোকসভা নির্বাচনের আগে রুল ফ্রেম করলেন। করার পর আজ পর্যন্ত কতজন CAA-তে আবেদন করেছেন, সেই সংখ্যাটা কী সুকান্তবাবু বলবেন? বলতে পারবেন না কারণ তাঁরা লজ্জা পাবেন, তাঁরা এমন কিছু রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস রেখেছেন সেখানে মতুয়ারা, রাজবংশী বা ওপার বাংলা থেকে আসা লোকজন আবেদন করতে গেলেই বিপদে পরে যাবেন, সেই কারণে আবেদনের সংখ্যা এত কম। দ্বিতীয়ত, ২০২৪ সালের মধ্যে ডিসেম্বরের মধ্যে চালু করলেন, কিন্তু বলুন তো ২০২৪ সালের ২১ জুলাই বাংলাদেশে যখন সরকার রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলন চলছে, ওখানে যখন সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত অর্থাৎ হিন্দুরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বললেন, যদি কেউ আমাদের দরজায় এসে ঠকঠক করে আমরা তাঁদের আশ্রয় দেব, সেই মুহূর্তে বিজেপির লোকেরা কেন বিরোধিতা করেছিলেন? আজকে তো নিজেরা সেই কাজটাই করলেন কয়েকদিন পর। সবকিছুর মধ্যে নির্বাচনের আগে হিন্দু-মুসলমান এই শব্দগুলো তাঁদের ঢোকাতেই হবে। তৃতীয়ত, যখন আপনি NRC-র সময় বলছেন ভারতের কোষাগারে, অর্থনীতিতে চাপ পড়ছে ভারতের ছেলেদের চাকরি বাইরের লোকেরা এসে কেন নিয়ে যাবে? একদিকে এই কথাটা বলার উদ্দেশ্যে আপনি এনআরসি করবেন আবার আপনি ২০২৪ অবধি সময় বাড়িয়ে দিয়ে আরও বেশি লোককে আহ্বান জানাবেন। সেটা নিয়ে আপত্তি নেই আমাদের, প্রশ্ন হচ্ছে আপনি এনআরসি-র সময় চাপের কথাটা বলেন কেন? চাপ কি ধর্ম দেখে তৈরি হয়? এখানে বেকার চ্ছেলেরা চাকরি পাচ্ছে না এটা বড় কথা নাকি চাকরি হিন্দু নিচ্ছে না মুসলমান নিচ্ছে এটা বড় কথা? দ্বিধা দ্বন্দ্ব বাংলার মানুষের কাছে বিজেপিকে ছোট করেছে এবং আগামী দিনে আরও ছোট করবে।”

সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “ভারতীয় বংশদ্ভূত মানুষ, বাংলা ভাষায় কথা বলেন অবিভক্ত বাংলার মানুষ। তাঁদের ওপর নির্যাতনের প্রচেষ্টা একটানা চলছে। এটা চলে না চলতে পারে না। এক্ষেত্রে ২০১৪ ছিল, বদলে ২০২৪ করা হল। কিন্তু জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব এর মধ্যে দিয়ে বলা হল না। এদিকে ন্যাচারালাইজেশনে যে জটিল প্রক্রিয়া রয়েছে তা সহজ করা হয়নি। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বলেছিল সেটা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর করা হয়েছে। নিশ্চয়ই এই নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত। কাগজ ছাড়াই এই নাগরিকত্ব বলে পাওয়া উচিত বলে সরকার বলছে, এতদিন তাহলে বাহান করছিল কেন? আসলে ধর্মকে ব্যবহার করার একটা মনোভাব। হিন্দু-মুসলমান ভাগাভাগি করা একটা মনোভাব। এটা সংবিধান সম্মত নয়। আগেও বলেছি। ধর্মীয় কারণ ছাড়া অন্য কারণ বলে বিদেশি হয়ে গেল?”
