ঠিক যেন সিনেমার দৃশ্য। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর (CBI) বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন আর জি করের মৃতা চিকিৎসকের বাবা-মা। এবার সেই ক্ষোভ প্রকাশ্যে এলো আদালতের শুনানি শেষ হতেই। একেবারে সিবিআই আধিকারিকের উপর কটু শব্দ বলে উঠলেন অভয়ার মা।

শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে (Sealdah Court) আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের মামলায় ষষ্ঠ স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই। আদালত চত্ত্বরে উপস্থিত ছিলেন নির্যাতিতার মা ও বাবা। শুনানির শেষে সিবিআইয়ের আইনজীবীদের সঙ্গে আদালতের বাইরে একটি দোকানের সামনে কথা বলছিলেন আর জি কর মামলার তদন্তকারী আধিকারিক সীমা পাহুজা ও অন্য আধিকারিকরা। আদালত থেকে বেরোনোর সময় সেই তদন্তকারী আধিকারিক সীমা পাহুজাকে দেখেই মারমুখী অভয়ার মা।

এর আগে বাংলার শাসকদলের নেতা থেকে বাংলার পুলিশের উপর নানা মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন সন্তানহারা অভয়ার বাবা-মা। তা নিয়ে মানহানির মামলাও চলছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এবার সেই আচরণ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (CBI) বিরুদ্ধে। জনবহুল এলাকায় আচমকাই অভয়ার মা চেঁচিয়ে ওঠেন, ‘এই হচ্ছে শয়তান, এই হচ্ছে মেন কালপ্রিট।’

সেখানেই তিনি থেমে থাকেননি। অন্যান্য আধিকারিক ও আইনজীবীদের দিকে লক্ষ্য করে তিনি বলতে থাকেন, ‘আপনারা সরকারের মাইনে নেন। আপনাদের চাকরি খেয়ে নেওয়া উচিৎ। আপনারা আদালতে ঢুকতে দেননি। আপনারাই নারাজি পিটিশন দিতে দেননি।’ এই দৃশ্য দেখেই তাঁদের আইনজীবী সচেতন হয়ে দ্রুত তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যান।

এদিন আদালতের শুনানিতে ৬ জন নতুন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী বলেন, এডিজে আদালত সাজা ঘোষণার সময় অন্তত চারজন আধিকারিকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। গাফিলতির অভিযোগও উঠেছিল। সিবিআই (CBI) কি তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে? সিবিআইয়ের কাছে মামলাটি যাওয়ার আগে কি তথ্য ও প্রমাণ লোপাট হয়েছে, তার কি তদন্ত হয়েছে? একটি বড় টিম ঘটনা চেপে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। প্রমাণ লোপাট করেছে। খুনের ঘটনাকে আত্মহত্যা বলার জন্য হাসপাতালের এমএসভিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন? নির্যাতিতার মা ও বাবা যা তথ্য জানাতে চেয়েছেন, তা গোপন জবানবন্দি আকারে নেওয়া হয়নি। ঘটনাস্থলে নির্যাতিতাকে কে প্রথম দেখেছে, সিবিআই কি তা যাচাই করেছে? বিচারক প্রশ্ন করেন, কে প্রথম ফোন করে পরিবারকে জানিয়েছিলেন? পরিবারের আইনজীবীর দাবি, এভাবে তদন্ত হলে নির্যাতিতার মা ও বাবা কোনওদিন বিচার পাবেন না।

আরও পড়ুন: বাংলাকে টলানো যাচ্ছে না, তাই অত্যাচার! প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে গর্জে উঠল তৃণমূল

তবে আদালত চত্বরের বাইরে অভয়ার মায়ের আচরণের পাল্টা কোনও কথাই বলেননি সিবিআই আধিকারিক ও আইনজীবীরা। ১৪ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন আরও একটি রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে পারে সিবিআই।

–

–

–


