প্রতিবেশী নেপালে যুবসমাজের প্রবল বিক্ষোভ। ক্ষোভের আগুনে কোনওমতে প্রাণ নিয়ে পালিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। তবে শুধুই হিংসা নয়, চার দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা করে নেপালের যুব সমাজ দেখিয়ে দিয়েছে অপশাসনের অবসানে কীভাবে মানুষের রোশকে কাজে লাগিয়ে সরকার বদলের ক্ষমতা রাখে যুব সমাজ। সম্প্রতি ভারতের একাধিক প্রতিবেশী দেশে একই রকম আন্দোলন হলেও কার্যত শান্তির পথে যুব সমাজের হাত ধরেই সম্পূর্ণ পালাবদল করতে এখনও পর্যন্ত নেপালই দৃষ্টান্ত রেখেছে। উনুন্নয়নে একইভাবে ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে মনিপুর (Manipur)। মুখ্যমন্ত্রীকে পর্যন্ত আশ্রয় নিতে হয়েছে বাঙ্কারে। নেপালের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পরে এবার সটান মনিপুরের অশান্ত চূড়াচাঁদপুরে (Churachandpur) তাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)।

জাতি সংঘর্ষে অশান্ত মনিপুর নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তর বারবার এড়িয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কার্যত একটা সময় তিনি প্রমাণ করে দিয়েছিলেন মনিপুর নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাছে কোনও উত্তর নেই। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পরে সেই মনিপুরে গিয়ে শুধুমাত্র কয়েকজন ইন্টারনালি ডিসপ্লেসড পিপলস (IDP)-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন। যে বিপুল সংখ্যায় মানুষ এখনও সেখানে ত্রাণ শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে এবারও দেখা করে তাঁদের পরিস্থিতি জানার প্রয়োজন বোধ করলেন না প্রধানমন্ত্রী।

তবে আদতে যে নেপালের পালাবদলের পরে খানিকটা দায়ে পড়েই মনিপুরে পৌঁছে গিয়েছেন মোদি, তা তাঁর বক্তব্যেই স্পষ্ট। মনিপুরের (Manipur) ইম্ফল থেকে বারবার নেপালের (Nepal) যুব সমাজের হাত ধরে আসা পালাবদলের প্রসঙ্গ মোদির (Narendra Modi) মুখে। সেই সঙ্গে আদালভাবে উল্লেখ করলেন, যেভাবে যুব সমাজ নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতিতে যোগ দিয়েছে। রাস্তাঘাট থেকে ধ্বংসের ছাপ থাকা সব জায়গায় নতুন করে সাজিয়ে তোলার কাজ করেছে। এই দৃশ্য যে কারো চোখ এড়ায়নি, সেকথা উল্লেখ করেন মোদি। এভাবেই মনিপুর বারবার মোদির মুখে নেপালের যুব সমাজ।

এই উল্লেখ যে মনিপুরের যুব সমাজের ক্ষোভের কথা মাথায় রেখেই, তাও স্পষ্ট মোদির বক্তব্যে। চূড়াচাঁদপুরের সভায় স্পষ্টভাবে তিনি বলেন, আমি জানি আদিবাসী সমাজের যুবদের প্রত্য়াশা ও সংঘর্ষের বিষয়ে। আমরা সেগুলি নিয়ে পথ খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা স্বশাসিত স্থানীয় প্রশাসন তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছি।

আরও পড়ুন: কোথায় মৌলিক অধিকার: পড়ুয়াদের প্রশ্নে মেজাজ হারানো সুকান্তকে কটাক্ষ তৃণমূলের

কার্যত দেশের প্রধানমন্ত্রীর কথাতেই প্রমাণিত এখনও অশান্ত মনিপুরকে শান্ত করার জন্য় কোনও পথ খুঁজে পায়নি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। ৮৬৪ দিন পরেও মোদির এই অপদার্থতাকে কটাক্ষ বাংলার শাসকদল তৃণমূলের। এতদিন পরে মনিপুরে উপস্থিত মোদিকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের দাবি, এখন তিনি বলছেন পাশে আছেন। নিজেকে দেশের চৌকিদার দাবি করা মোদি এতদিনে মনিপুরে (Manipur) পৌঁছানোর সুযোগ পেলেন যখন সেখানকার মানুষ দুরবস্থার চরম অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে। মোদির মনিপুরকে এত দেরিতে আবিষ্কার করতে পারাটা কোনও নেতার কাজ নয়। ভারত এমন একজন প্রধানমন্ত্রীকে বহন করতে পারবে না যিনি ধ্বংসস্তূপ হয়ে যাওয়ার পরে কোনও রাজ্যকে মনে করতে পারেন।

–

–

–

–