১৫ দিন ধরে অনশন চলাকালীন কোনও অশান্তি ছিল না লাদাখের কোনও অংশ। ১৪দিনে দুই অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিক্ষোভের আঁচ টের পাওয়া যায় লেহ (Leh) শহরে। কেন্দ্রের সরকারের কানে জল পৌঁছানোর জন্য বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করলে লেহ শহরে ১৬৩ ধারা জারি করে প্রতিবাদের পথ বন্ধ করা হয় লাদাখবাসীর। মৃত্যুর ঘটনার পরে আগুন লাগে বিজেপি সদর দফতর, উন্নয়ন বিভাগের দফতরে। এরপরই গোটা ঘটনার দায় লাদাখবাসী, বিশেষত পরিবেশ আন্দোলনকারী সোনম ওয়াংচুর (Sonam Wangchuk) ঘাড়ে ফেলতে তৎপর অমিত শাহর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (MHA)। এরপরই শান্ত লাদাখের পাহাড়ে অশান্তি ছড়ানোর দায়ভার নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) পদত্যাগ দাবি করলেন বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ সুব্রহ্মনিয়ম স্বামী (Subrahmanian Swami)।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, দাবি আদায় নিয়ে অনশন চলাকালীন যে হিংসাত্মক বার্তা দিয়েছিলেন সোনম ওয়াংচু, তার জন্যই যুব সমাজ হিংসার পথ ধরেছিল। আন্দোলন অশান্ত হয়ে গেলে তিনি তা স্তব্ধ না করে অনশন তুলে নিজের গ্রামে ফিরে যান। বাস্তবে, বুধবার লেহ শহরে বিক্ষোভ দেখানোর দায় স্বীকার করেছে লেহ অ্য়াপেক্স বডি (Leh Apex Body) বা ল্যাব (LAB)। এমনকি যে চারজন শহিদ হয়েছেন, তাঁরাও তাঁদেরই আন্দোলনের শরিক বলে দাবি করেন তাঁরা। অন্যদিকে সোনম দাবি করেন, হিংসাত্মক আন্দোলন হয়ে যাওয়ার কারণে তিনি শান্তির পথে চলে অনশন তুলে নিলেন।

এমনকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তাঁরা বারবার আলোচনা করেছে লাদাখ নিয়ে। সেখানে উল্লেখ করা হয় – হাই পাওয়ার কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। লাদাখে তফশিলি জাতির সংরক্ষণ ৪৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ১৮০০ নিয়োগের বার্তার রয়েছে সেই বিবৃতিতে। অথচ কোথাও লাদাখের তিন বছর ধরে আন্দোলনের মূল বক্তব্য – ষষ্ঠ তফশিলের (Sixth Schedule) অন্তর্ভুক্ত করার উল্লেখ নেই। কার্যত এই কারণেই ২০ সেপ্টেম্বর যে বৈঠক কেন্দ্রের প্রশাসন (MHA) ডেকেছিল, তা নাকচ করেছিল ল্যাব (LAB)। এমনকি বুধবারের অশান্তির পরে বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও যোগ দিতে নারাজ ল্যাব।

আরও পড়ুন: ছাত্র-যুবর আন্দোলনে পুলিশের লাঠি, লাদাখে ‘শহিদ’ ৪: রাজনীতির চেষ্টা বিজেপির

৬ অক্টোবর ফের বৈঠক ডেকেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এরপরেও ল্যাব দাবি করেছে তাঁরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেরই পক্ষে। এমনকি বিজেপির পক্ষ থেকে রাজনীতির রঙ মেশানের যে প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল তা নাকচ করে দিয়েছিলেন ল্যাব নেতারা। সেখানেই সোনম দাবি করেন, রাষ্ট্রকে আন্দোলন দমাতে দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া উচিত।

সোনম ওয়াংচুর সুরে একইভাবে সুর মিলিয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ সুব্রহ্মনিয়ম স্বামী। বিজেপির মোদি-শাহর রাজনীতির অত্যন্ত বলিষ্ঠ সমালোচকের দাবি, লাদাখে কোনও ভালো দায়িত্ব পালনে সক্ষম হননি অমিত শাহ। সেই সঙ্গে পাহাড়ের লাদাখে শান্তি বজায় রাখতে ব্যর্থ অমিত শাহর পদত্যাগ করা উচিত।

–

–

–

–