ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্য ত্রিপুরায় (Tripura) ভাঙচুর করা হয়েছে তৃণমূলের (TMC) দলীয় কার্যালয়ে। নেতা-কর্মীদের সহমর্মিতা দেখাতে বুধবার বাংলা থেকে যাওয়া তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে বিমানবন্দর (Airport) থেকে প্রথমে বেরোতেই দেওয়া হয়নি। সব বাধা পেরিয়ে তাঁরা যান ঘটনাস্থলে। এর পরেও তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে চায়নি পুলিশ প্রশাসন। বৃহস্পতিবার, আগরতলা থানায় গিয়ে ভাঙচুরের ঘটনার অভিযোগ জানান সায়নী ঘোষ (Shaoni Ghosh), বীরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hansda), সুস্মিতা দেব, প্রতিমা মণ্ডল, কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh), সুদীপ রাহারা। একেবারে অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে অভিযোগপত্র জমা দেন তাঁরা। সেখান থেকে বেরিয়ে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সচিবের সঙ্গে দেখা করে নালিশ জানায় তৃণমূলের প্রতিনিধিদল।

ত্রিপুরায় আক্রান্ত কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে বুধবারই সকালে আগরতলা (Agartala) পৌঁছান তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। স্বৈরাচারী বিজেপির রাজ্যে আগরতলা বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয় সেই প্রতিনিধিদলকে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এতটা ব্যর্থ মানিক সাহা প্রশাসন, যে পরিস্থিতির দোহাই দিয়েই বিমান বন্দর থেকে শহরে পা রাখতে বাধা দেয় পুলিশ। তৃণমূল প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বিমান বন্দরের সামনেই এর প্রতিবাদে অবস্থানে বসে পড়েন। অভিযোগ, যে গাড়ি তাঁদের নিতে এসেছিল তার চালকদের হুমকি দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা প্রিপেড ট্যাক্সি বুক করতে যান, কিন্তু সেখানেও তাঁদের গাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়নি। বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকারের পুলিশ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, বিমানবন্দর ছেড়ে বেরতে পারবে না তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। এর পরেই হার মানে বিজেপি (BJP) সরকারের পুলিশ। গন্তব্যে পৌঁছন তৃণমূল নেতৃত্ব।

বৃহস্পতিবার আগারতলা থানায় যান সায়নী-বীরবাহা-কুণালরা। সেখানে গিয়ে অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবি জানানো হয়। সেই ছবি পোস্ট করে স্যোশাল মিডিয়া পেজে তৃণমূল (TMC) লেখে, “আজ আমরা ত্রিপুরার আগরতলায় আমাদের রাজ্য সদর দফতরে সংঘটিত নির্লজ্জ ও পরিকল্পিত হামলার বিরুদ্ধে আগরতলা পুলিশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করেছি। এই হামলায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা প্রকাশ্যে নিজেদের বিজেপির সদস্য বলে দাবি করেছে। এটি ছিল এক সুপরিকল্পিত হিংসা, ভয় দেখানো এবং ভাঙচুরের ঘটনা — যার উদ্দেশ্য ছিল আমাদের দলীয় কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা, সংগঠনের কাজ ব্যাহত করা এবং রাজনৈতিক বিরোধিতাকে দমন করা।
দুষ্কৃতীরা লোহার রড, লাঠি এবং অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে, সম্পত্তি নষ্ট করে, পতাকা ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং দিনদুপুরে আমাদের কর্মীদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। বিজেপির আশ্রয়ে পরিচালিত এই ঘটনা স্পষ্ট করে দেয় যে এটি পরিকল্পিত হিংসা এবং বিজেপির আমলে ত্রিপুরায় আইনের শাসনের নেই।
আমরা এই হামলায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। পুলিশের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা এই অপরাধীদের আরও উৎসাহিত করবে এবং একটি বিপজ্জনক বার্তা দেবে যে রাজনৈতিক হিংসা কোনোরকম শাস্তি ছাড়াই চালিয়ে যাওয়া যায়। নাগরিকদের একত্র হওয়া, মত প্রকাশ ও বৈধ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার সাংবিধানিক অধিকার যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে।

দলের তরফ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, “প্রতিটি নীরবতা, প্রতিটি বিলম্ব প্রমাণ করে যে, এই ঘটনার সাথে কারা জড়িত। ত্রিপুরায় আজ গণতন্ত্র অবরুদ্ধ, আর যারা অপরাধীদের আড়াল করছে, জনগণের আদালতে তারাও সমানভাবে দোষী হয়ে থাকবে।
কেন এই রকমভাবে বারবার ত্রিপুরায় গণতন্ত্রকে অবহেলা করা হয়? কেন বিরোধীদের কণ্ঠস্বর রোধ করা হয় ত্রিপুরায়? কেন আমাদের দলীয় কার্যালয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়?
পুলিশ-প্রশাসন কেন দর্শক হয়ে যায় এইসকল ক্ষেত্রে? প্রশ্ন তুললেন আমাদের প্রতিনিধির দলের সদস্যরা। গণতন্ত্র রক্ষার্থে আমরা সর্বদা লড়াই করতে প্রস্তুত।“

আগরতলা থানা থেকে বেরিয়ে রাজভবনে গিয়ে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সচিবের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেখানে দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও তাঁদের হেনস্থা করার কথাও জানিয়ে আসেন কুণালরা।

–

–

–

–

–
–
–
–