একেই হয়তো সত্যিই বলে মেঘ ছুঁয়ে স্বপ্ন সফল করা! জেলার মফস্বল থানার চক ঝরিয়া গ্রামের তরুণ ভাস্কর দাসের জীবন এখন যেন রূপকথার মতো। আগামী দেড় মাসের মধ্যেই পুরুলিয়ার এই যুবক যোগ দিতে চলেছেন ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সে কমার্শিয়াল পাইলট হিসেবে।

শনিবার সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফোনে যখন সুখবরটি পৌঁছয় তার গ্রামে, তখন আনন্দে ফেটে পড়ে গোটা চক ঝরিয়া। প্রতিবেশীরা ছুটে যান ভাস্করের বাড়িতে, বাবা কৈলাস দাস মিষ্টি মুখ করান সকলকে। গ্রামের গর্ব এখন ভাস্কর।

চক ঝরিয়া গ্রামের পাশেই সৈনিক স্কুল। ছোটবেলা থেকেই সেখানে বিমান আর হেলিকপ্টার উঠতে–নামতে দেখেই বেড়ে উঠেছে সে। সেই দৃশ্যই হয়তো অজান্তে উড়ানের স্বপ্ন জাগিয়ে দিয়েছিল তার মনে। বাবা সাধারণ ঠিকাদার, মা গৃহবধূ। তবু ছেলের স্বপ্নে ভরসা রেখে ভর্তি করেছিলেন সৈনিক স্কুলে। দশম শ্রেণি পাশের পর দিল্লি গিয়ে উড়ানের প্রশিক্ষণ শুরু করে ভাস্কর।

দিল্লি থেকেই সুযোগ মেলে বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, দক্ষিণ আফ্রিকার ‘৪৩ এয়ার স্কুল’-এ পড়ার। দীর্ঘ অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের পরে শুক্রবার হাতে আসে সাফল্যের সনদ। ইতিমধ্যে ইন্ডিগো সংস্থা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। দেশে ফিরেই পাইলট হিসেবে যোগ দিতে চলেছেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফোনে ভাস্কর বলেন, “লক্ষ্য স্থির রাখলে সাফল্য আসবেই। বিদেশে পড়ার সামর্থ্য আমাদের পরিবারের ছিল না, কিন্তু ঋণ নিয়ে আমি গিয়েছি। চাই, আমায় দেখে জেলার আরও ছেলেমেয়েরা সাহস পাক।”

বাবা কৈলাস দাসের গলায় গর্বের সুর, “আমরা একেবারে সাধারণ পরিবার। কিন্তু পরিশ্রম আর পরিবেশ ঠিক থাকলে সবই সম্ভব। এখন বাংলায় শান্তির পরিবেশ আছে, শুধু লক্ষ্য স্থির করে এগিয়ে যাওয়া দরকার।” চক ঝরিয়ার আকাশে আজ তাই যেন ভাস্করের উড়ানের আনন্দে নতুন রঙের ছোঁয়া।

আরও পড়ুন – ডাবল ইঞ্জিনে নেই নারী নিরাপত্তা, বিজেপির অতিসক্রিয় নেতারা এখন কেন চুপ? প্রশ্ন শশীর

_

_

_
_


