Saturday, November 1, 2025

স্কুলের পরে করুন SIR ডিউটি! কমিশনের হঠকারিতায় বিক্ষোভে BLO-রা

Date:

Share post:

আশঙ্কাকে সত্যি করে তড়িঘড়ি দেশের ১২ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর ঘোষণা। এই ঘোষণা যে কতটা অপরিকল্পিত তা প্রমাণ করে দিল রাজ্যে এসআইআর নিয়ে বিএলও-দের প্রশিক্ষণের (BLO training) প্রথম দিন। একই সঙ্গে বিএলও-দের স্কুলে পঠনপাঠন চালানোর সঙ্গে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা ও ফর্ম ফিলাপের কাজ – দুটিই করতে হবে। কমিশনের (Election Commission) এই হঠকারিতার প্রতিবাদে প্রথমদিন প্রশিক্ষণ নিতে আসা বিএলও-রা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। আশ্চর্যজনকভাবে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি শনিবার বিএলও-দের (BLO) তোলা প্রশ্নের। শেষ পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) কর্মীদের প্রশিক্ষণ শিবিরে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে মাঠে নামতে হয়।

শনিবার থেকে রাজ্যের বিএলও-দের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে রাজ্যে ইনিউমারেশন ফর্ম (enumeration form) ফিলাপের আগে। মঙ্গলবার থেকে সেই ফর্ম ফিলাপ প্রক্রিয়া শুরু হবে। শনিবার প্রশিক্ষণে যোগ দেওয়ার আগেই বিএলও-দের সঙ্গে একপ্রস্থ সংঘাত হয়ে গিয়েছে নির্বাচন কমিশনের। একাধিক অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে ১৪৩ জন বিএলও শুক্রবার পর্যন্ত কাজে যোগ দেননি। শুক্রবার দুপুর ১২টার মধ্যে নিজেদের রেজিস্ট্রেশন না করালে বিভাগীয় ব্যবস্থা এমনকি সাসপেনশনেরও (suspension) হুঁশিয়ারি দিয়েছিল কমিশন। আদতে যে দাবি তুলে বিএলও-রা কাজে যোগ দিতে অস্বীকার করছিলেন, তা কতটা ন্যায্য ছিল, প্রমাণিত হল শনিবার প্রশিক্ষণের প্রথম দিন।

নজরুল মঞ্চে বিএলও-দের প্রশিক্ষণ চলাকালীন দাবি তোলা হয়, ডিউটির স্বচ্ছতা নিয়ে। বিএলও-রা জানান, তাঁদের কোনও অন-ডিউটি ফর্ম দেওয়া হবে না বলেই জানায় কমিশনের আধিকারিকরা। সেক্ষেত্রে যে কর্মক্ষেত্র, মূলত স্কুলে, বিএলও-রা কর্মরত সেখানে যে কাগজ দেখিয়ে নির্বাচনের কাজে যোগ দেবেন রাজ্য সরকারের কর্মীরা, সেরকম কোনও কাগজই তাঁদের হাতে থাকছে না। ফলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম ফিলাপের কাজ তাঁদের স্কুল কামাই করেই করতে হবে। সেখানেই কমিশনের (Election Commission) দাবি, স্কুল ছুটির পরে তাঁদের এসআইআর-এর (SIR) কাজ করতে হবে, এমনটা জানানো হয়। এরই প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বিএলও-রা।

শনিবার প্রশিক্ষণ নিতে আসা বিএলও-দের (BLO) দাবি, প্রশিক্ষণ শিবিরে তাঁদের কোনও কথাই শোনা হয়নি। মঞ্চে থাকা আধিকারিকরাই বক্তব্য রেখেছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary) বিএলও-দের হুমকি দিয়েছেন, কাজে অসঙ্গতি হলে বিহারের (Bihar SIR) মতো বিএলও-দের জেলে ভরা হবে। সেক্ষেত্রে কমিশনের নির্দেশে স্কুল করার পরে এসআইআর-এর (SIR) কাজ করা তাঁদের জন্য একটি অমানুষিক কাজ হবে। সেক্ষেত্রে ভুলভ্রান্তি হলে দায় নেবে কে, প্রশ্ন বিএলও-দের।

আরও পড়ুন: SIR ঘোষণার পরে মৃত্যুমিছিল, পথে নেমে প্রতিবাদে মমতা-অভিষেক

সেই সঙ্গে স্কুলের শেষে সন্ধ্যায় কাজ করতে গেলে কীভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হবে বিএলও-দের। যে মহিলা কর্মীরা এলাকায় ঘুরে ঘুরে ফর্ম ফিলাপের কাজ করবেন, তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়েই বা কী ভাবা হয়েছে কমিশনের তরফে, প্রশ্ন তোলেন প্রশিক্ষণে যোগ দেওয়া বিএলও-রা। কোনও প্রশ্নেরই সদুত্তর এদিন দিতে পারেনি কমিশনের আধিকারিকরা। জানানো হয়, অন ডিউটি লিখিত দেওয়া সম্পর্কে জাতীয় নির্বাচনের কাছে রাজ্যের সিইও-র তরফ থেকে অন ডিউটি কাগজ চেয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সদুত্তর দেয়নি জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

spot_img

Related articles

নাগরিকত্ব দেওয়ার নামে ব্যবসা বিজেপির! জমিদারদের মুখোশ খুলে দেওয়ার ডাক তৃণমূলের

বাংলায় সিএএ হতে দেবেন না। সদর্পে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ সিএএ-র হাত ধরেই আসবে এনআরসি (NRC),...

বাতিল হয়েছে ঐতিহ্যশালী ক্লাবের সদস্যপদ! জেমাইমার পরিবারের অজানা কাহিনী

রবিবার মুম্বইতে মহারন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কাপ জয়ে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের বিরাট ভরসার নাম  জেমাইমা রদ্রিগেজ(Jemimah Rodrigues)। সেমিফাইনালে তাঁর...

বাংলাদেশে পাঠানো সোনালি একজন ভারতীয়: এবার প্রমাণ করল নির্বাচন কমিশনের নথি

বাংলাদেশী বলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া সোনালি খাতুন আদতে ভারতেরই নাগরিক। এবার সেটা প্রমাণ করল খোদ নির্বাচন কমিশনের ভোটার...

বিশ্বকাপ জিতলেই বিরাট অঙ্কের পুরস্কার, রোহিতদের সমান টাকা পাবেন স্মৃতিরাও!

রবিবার মহিলাদের একদিনের বিশ্বকাপের(ICC Women's World Cup) মেগা ফাইনাল। কাপ জয়ের লক্ষ্যে নামছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। চ্যাম্পিয়ন...