আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ না ক্লাব স্তরের খেলা ভারতীয় বোলিং (Indian Bowling) দেখে তা বোঝা দায়। এই বোলারদের নিয়ে ৪০০ রান করেও টিম ইন্ডিয়া হেরে যেতে বাধ্য, মনে করছেন ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে (Ind vs SA) প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা (Prasiddha Krishna), হর্ষিত রানা (Harshit Rana), রবীন্দ্র জাডেজার (Ravindra Jadeja) লাইন-লেন্থ ঠিক নেই, বল পিচে পড়ে ঘোরা তো দূরের কথা কোনও রকমের নিয়ন্ত্রণই রাখতে পারছেন না বোলাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে পিচে যে খুব একটা টার্ন মিলবে না সেটা আগে থেকেই জানা ছিল। সুইংয়ের অভাব বোধ হল টিম ইন্ডিয়ার বোলিং ইনিংসে। সবথেকে বড় কথা, ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বিপক্ষে বিট করাতে অক্ষম ভারতীয় বোলিং বিভাগ, ক্যাচিং পজিশনে পৌঁছতেই পারছেন না ফিল্ডাররা (ব্যতিক্রমী একমাত্র তিলক বর্মা, তাও তিনি অতিরিক্ত প্লেয়ার। তাতেও মাঠে নেমে দুরন্ত ফিল্ডিংয়ের উদাহরণ রাখলেন)। কিন্তু যে ১১ জন প্লেয়ার খেলছেন তাঁদের দেখে প্রশ্ন উঠতেই পারে, ভারতীয় দলের ব্যাটিং বা ফিল্ডিং কোচরা কি শুধুই দর্শক হওয়ার জন্য বসে থাকেন?
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে ভারত স্কোরবোর্ডে ৩৫৮ চাপিয়ে বোধ হয় একটু বেশি নিশ্চিন্ত হয়ে পড়েছিল। রাঁচির ম্যাচের মত প্রথমদিকে দ্রুত একের পর এক উইকেট হারানোর ভুলটা করেননি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা।মার্করাম (১১০ রান) যেভাবে সেঞ্চুরি করলেন তাতে রান রেট কখনই প্রোটিয়াদের দুশ্চিন্তায় ফেলার মতো জায়গায় যায়নি। অবশ্য এর সৌজন্যে ভারতীয় বোলারদের নামও বলতে হয়। ৪০ ওভারের পরও দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা যেভাবে রান নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়াস রেখেছিল ভারতীয় প্লেয়ারদের মধ্যে প্রথম থেকেই সেটা অমিল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা প্লেয়াররা এখনো পর্যন্ত নিজেদের লেন্স চেনেন না, ইয়র্কার শব্দটা বোধহয় তাঁরা নেট প্র্যাকটিসেই ফেলে এসেছেন। দোসর হতশ্রী ফিল্ডিং। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে ওয়াশিংটন সুন্দরকে (Washington Sundar)খেলানোর কোনও যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া গেল না। রবীন্দ্র জাডেজা প্রয়োজনের সময় কিছুই করতে পারলেন না। যশস্বী পরবর্তীতে কিছু ক্যাচ ধরলেন বটে কিন্তু তাঁর ব্যাটিংয়ের অধৈর্য মনোভাব আর ফিল্ডিংয়ের যে নমুনা দেখালেন তাতে কোনভাবেই প্রথম একাদশে থাকার উপযুক্ত তিনি নন, এ কথা স্পষ্ট। বুমরাহ -সিরাজদের অভাব চোখে পড়ল। কেন যে ওয়ান ডে টিমে হার্দিককে রাখা হচ্ছে না সেটা ভারতীয় থিংক ট্যাংকই বলতে পারবেন, কারণ ৫০ ওভারের ফরম্যাটের জন্য যে হর্ষিত -প্রসিদ্ধরা একেবারেই অনুপযুক্ত (তা সে যতই উইকেট পান না কেন) গত ম্যাচের রায়পুরেও তা ফের প্রমাণিত।

ব্রেভিস -ব্রিৎজকে দক্ষিণ আফ্রিকার মিডল অর্ডারকে দুরন্ত সঙ্গত করলেন। দুজনেই হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। বাভুমার নেতৃত্বে মাথা ঠান্ডা করে সঠিক পরিকল্পনা আর ক্যালকুলেশনে কীভাবে ৩৫৯ রানের সুবিশাল টার্গেট জয় করা যায় তা দেখিয়ে দিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আত্মতুষ্টির ফল হাতেনাতে পেয়েছেন রাহুলের দল। সিরিজ এখন ১-১। যতক্ষণ খেলা চললো ভারতীয় দলের হেড কোচ (Gautam Gambhir) কখনও ডান গালে আবার কখনও বাঁ গালে হাত দিয়ে বসে রইলেন। আর হাতে থাকা ম্যাচ শুধুমাত্র নিজেদের ব্যর্থতার কারণে প্রতিপক্ষের হাতে তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরলো ভারত। যে ম্যাচের উজ্জ্বল আলো নিজেদের উপর টেনে এনেছিলেন বিরাট-ঋতুরাজ-রাহুলরা, তাকে দায়িত্ব নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের দিকে ঠেলে দিলেন ভারতের ‘তারকা’ বোলাররা। আবারও বলতে হচ্ছে এই বোলিং শক্তি নিয়ে ভারত ৪০০ রান করলেও ফলাফলের কোনও হেরফের হবে না।

–

–

–

–

–

–

–


