নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিজেপির আঁতাঁতে আবারও প্রকাশ্যে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন কেন্দ্রীয় সব সংস্থাকে বিজেপির আজ্ঞাবহে পরিণত করেছিল বিজেপি। এবার নির্বাচন কমিশনকে দিয়েও নিজেদের কাজ করাচ্ছে তারা। তাই বিজেপি অভিযোগ করলেই পদক্ষেপ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। জেলাশাসকদের (District Magistrate) কাজের উপর খবরদারির জন্য বিজেপির আধিকারিদের মাথার উপর বসানো হচ্ছে। এবার বিজেপির তাবেদারি করা কমিশনকে কৃষ্ণনগরের (Krishnanagar) মঞ্চ থেকে তোপ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee)। সেই সঙ্গে বার্তা দেন বাংলা থেকে মানুষকে তাড়িয়ে দিলে কী করে ফিরিয়ে আনতে হয় তাঁর জানা রয়েছে।
একদিকে সংসদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী (Home Minister) দাবি করছেন, নির্বাচন কমিশন তাঁকে জানিয়েছে এসআইআর (SIR) নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। অন্যদিকে, কমিশন একের পর এক আধিকারিক শুধুমাত্র বাংলার জন্যই নিয়ে আসছে। যেন বাংলায় সব খুব গণ্ডগোল। আদতে কেন দিল্লি থেকে এত আধিকারিককে আনা হচ্ছে বাংলায়, তার কারণ আসল ব্যাখ্যা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি স্পষ্ট করে দেন, দিল্লি থেকে বিজেপি মার্কা কিছু লোক পাঠানো হচ্ছে। ডিএমদের (DM) মাথার উপরে খবরদারি করার জন্য। আর বলছে দেড় কোটি লোকের নাম বাদ দিতে হবে। কারো না বাদ দিলে ধর্না দিয়ে বসে থাকব। যতক্ষণ পর্যন্ত নাম না তুলবে, ততক্ষণ ধর্না দিয়ে বসে থাকবেন। কাল একটা খবর শুনলাম। যারা ঠাকুমা ঠাকুরদার নাম দিয়েছে তাঁদের না কি হিয়ারিংয়ে ডাকা হবে। সেগুলো বাতিল করা হবে। আর ডিএমদের পাশে একটা করে বিজেপির লোককে বসানো হবে, দেখার জন্য যে তারা ঠিক মতো কাজ করছে কি না।

বিজেপির সঙ্গে কমিশনের এই যে আঁতাঁত তার প্রমাণ হিসাবেই কমিশনে দায়ের করা বিজেপির অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, বিজেপি সবার নামে অভিযোগ দিয়েছে। বিজেপি ছাড়া সবার নাম বাদ। কেন বিজেপির অভিযোগে কাজ হবে? আমি জানতে চাইছি – বিজেপি চিঠি দিলেই সেটা রামায়ণ মহাভারত। বিজেপি চিঠি দিলে নাম কাটতে হবে? বিজেপির আইটি সেল ভোটার তালিকা তৈরি করে দেবে। সেই তালিকায় আপনারা ভোট করবেন? আপনাদের এটাই তো পরিকল্পনা?

রাজ্যের মানুষকে এসআইআর ফর্ম ফিলাপের জন্য আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে কমিশনকে স্মরণ করিয়ে দেন, গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শক্তি মানুষ। অন্য কেউ নয়। মানুষ নির্বাচিত করে সরকার। নির্বাচন কমিশন নয়। তিনি আরও বলেন, এসআইআর করো আর যা-ই করো। বাংলা থেকে মানুষকে তাড়ালে কী করতে হয় আমরা জানি। আর বাংলায় কাউকে আমরা তাড়াতে দেব না। শুধু একটাই অনুরোধ, সীমান্তে যেখানে বিএসএফ আছে সেখানে যাবেন না।

আরও পড়ুন : ২৯ পর্যন্ত বিজেপি টিকবে না: দেশের ভেঙে পড়া কাঠামো তুলে ধরে চ্যালেঞ্জ মমতার

বাস্তবে বিজেপি যে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী দলগুলিকে পরাস্ত করতে চাইছে তা স্পষ্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, রোহিঙ্গা যদি হয়, আসতে তো মনিপুর হয়ে, মিজোরাম হয়ে, নাগাল্যান্ড হয়ে। সেখানে এসআইআর হচ্ছে না কেন। নির্বাচন যেখানে আছে, যেখানে বিরোধী দল আছে, সেখানে এসআইআর করছ দুমাসের মধ্যে। কেন অসমে হবে না। বিজেপির রাজ্য বলে? আর এসআইআরের নাম করে মা-বোনেদের নাম কাটবে বলে।

–

–

–

–


