মাঠে ঢোকার অনুমতি বাড়িয়েছিল আয়োজকরাই: শতদ্রুর জবানিতেও সিট-র চাপ বাড়ছে

Date:

Share post:

লিওনেল মেসির যুবভারতীর অনুষ্ঠানে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় তাতে মুখ পুড়েছে গোটা বাংলার। যে আয়োজন হায়দ্রাবাদ, মুম্বই বা দিল্লি দেখাতে পেরেছে তার ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেনি কলকাতা। যার পিছনে ছিল আয়োজকদের গাফিলতিই। এবার বিশেষ তদন্তকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে সেই কথাই কার্যত স্বীকার করে নিলেন আয়োজকদের কর্ণধার শতদ্রু দত্ত (Shatadru Dutta)। তিনি জেরায় জানিয়েছেন, শেষ পর্যায়ে মেসির (Lionel Messi) কাছাকাছি মাঠে ঢোকার ক্ষেত্রে পাসের সংখ্যা বাড়িয়ে তিন গুণ করে দেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে, এই তদন্তে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) ইতিমধ্যেই ঢুকে পড়েছে। শতদ্রু দত্তর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ২২ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত (seize) করল সিট (SIT)।

পুলিশের জেরায় শতদ্রু দত্ত স্বীকার করেছেন, যুবভারতীতে মেসির অনুষ্ঠানে মূল মাঠে ঢোকার জন্য তাঁর সংস্থার ১৫০ জনের অনুমতি ছিল। বাস্তবে অন্য়ান্য স্টেডিয়ামে যে আয়োজন দেখা যায়, সেখানে আয়োজকদের পক্ষ থেকে এত বেশি সংখ্যায় মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়েনি। তার উপর শতদ্রু দাবি করেন, প্রভাবশালীদের চাপে তিনি আরও তিনগুণ এন্ট্রি পাস দিয়েছিলেন। যে শতদ্রু দত্ত আগেও মারাদোনা, মেসির (Lionel Messi) মতো তারকাদের বাংলা ট্যুরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, সেই শতদ্রু কেন বুঝলেন না এত বেশি সংখ্যক মানুষ মেসিকে ঘিরে থাকলে কী পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, প্রশ্ন সিটের (SIT)।

মেসির (Lionel Messi) কাছে পৌঁছানোর চাবিকাঠি ছিল শতদ্রুর (Shatadru Dutta) হাতেই। তিনি নিজেই তিনগুণ পাস (pass) ইস্যু করার কথা জেরায় স্বীকার করেছেন। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ সেক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের ঘাড়ে দোষ চাপানোরও চেষ্টা করেছেন। তারপরেও যখন সেই ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানের দিন মেসির ঘাড়ের উপর চেপে গিয়ে, গলা জড়িয়ে ধরে, ঠেলা মেরে সেলফি তোলার চেষ্টা করছিলেন বা সেলফি তুলছিলেন, তাঁদের আটকানোর কোনও ব্যবস্থা কী শতদ্রু নিয়েছিলেন, প্রশ্নের উত্তর নেই শতদ্রুর কাছে। আবার তিনিই জেরায় দাবি করেছেন, জড়িয়ে ধরে ছবি তোলা মেসির পছন্দ হয়নি।

আরও পড়ুন : বড়দিনে কঠোর নজরদারি! অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের আঁচ কলকাতায় রুখতে সতর্কবার্তা মনোজ ভার্মার 

তবে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে যে শতদ্রু দত্ত পার পাবেন না, তা স্পষ্ট পুলিশের তদন্তে। জেরায় শতদ্রু জানিয়েছেন, এই সফরের জন্য যে ১০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল তার মধ্যে ৩০ কোটি টাকা এসেছিল যুবভারতীর (Yuba Bharati Stadium) টিকিট বিক্রি করে। জেরায় এই তথ্য পেতেই দ্রুত শতদ্রু দত্তর আর্থিক লেনদেনে নজর দেয় সিট। শতদ্রু দত্তর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ২২ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়, অন্যত্র সাইফন হওয়ার আগেই। ইতিমধ্যেই যুবভারতীতে আসা দর্শকদের টিকিটের টাকা ফেরতের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়েছে। টাকা ফেরতের পদক্ষেপে সিটের এই পদক্ষেপ কার্যকরী ভূমিকা নেবে বলেই মত পুলিশের।

spot_img

Related articles

বিজেপি রাজ্যে পুলিশের করুণ অবস্থা! ফিল্মি কায়দায় পালিয়ে গেল অপরাধী 

মধ্যপ্রদেশের হোসাঙ্গাবাদের কাছে পুলিশি ব্যর্থতার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, এক তরুণ পুলিশের গাড়ি...

পরিবারে জঙ্গি-যোগের অভিযোগ: কাশ্মীরে শ্রমিকদের জীবিকা কেড়ে নেওয়ার ফতোয়া

জম্মু ও কাশ্মীরের নাগরিকদের সন্ত্রাসবাদের পথ থেকে সরিয়ে আনতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে কোনও উদ্যোগ নেয়নি, পহেলগাম হামলার...

CINEKIND: না-মানুষদের নিয়ে তৈরি চলচ্চিত্রকে সম্মান, অনন্য সন্ধ্যার সাক্ষী কলকাতা

এই প্রথম না-মানুষদের প্রতি সহানুভূতি ও ভালবাসার গল্প বলা ফিল্মের জন্য সিনেকাইন্ড জাতীয় পুরস্কার দিল ফিল্ম ফেডারেশন অফ...

ভেঙে দেওয়া হল বসিরহাট পুরসভার বোর্ড! দায়িত্বে বসিরহাটের মহকুমাশাসক

আরবান ডেভেলপমেন্ট দফতরের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ভেঙে দেওয়া হল বসিরহাট পুরসভার বর্তমান পরিচালন বোর্ড। এসডিও দফতরের মাধ্যমে বসিরহাট পুরসভা...