বাংলাদেশের গর্ব ও ঐতিহ্যের প্রতীক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট সম্প্রতি এক ভয়াবহ হামলার শিকার হয়েছে। হাদির মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে কোনো যোগসূত্র না থাকা সত্ত্বেও এই প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ চালানো হয়। হামলায় আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তানপুরাসহ বহু মূল্যবান বাদ্যযন্ত্র। তবে ধ্বংসের সেই দৃশ্যের সামনে দাঁড়িয়ে ভেঙে না পড়ে, গানের শক্তিকেই অস্ত্র করে এক অনন্য প্রতিরোধের ছবি তুলে ধরল ছায়ানট।
মঙ্গলবার বিকেল চারটে নাগাদ ছায়ানট ভবনের সামনে জমায়েত হন শত শত মানুষ। শিল্পী, লেখক ও সাংবাদিকদের পাশাপাশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ান। আগুনে পুড়ে যাওয়া বাদ্যযন্ত্রের স্মৃতি বুকে নিয়ে সমবেত কণ্ঠে গান গেয়ে ওঠেন তাঁরা। সেই গানে ধ্বনিত হয় প্রতিবাদের সুর, প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে সংস্কৃতির অটল অবস্থান।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের গান ছিল এই সমাবেশের মূল ভাষা। ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম’, ‘ও আমার দেশের মাটি’, ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু–মুসলমান’ এবং ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’-এর মতো গান গেয়ে তাঁরা জানিয়ে দেন, শিল্পকে পুড়িয়ে শেষ করা যায় না। গানের প্রতিটি সুরে ফুটে ওঠে সম্প্রীতির বার্তা এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসার আহ্বান।

এই জমায়েতের উদ্দেশ্য ছিল সাম্প্রদায়িকতা ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শান্তির বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং বাংলার সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতাকে কোনো শক্তি দিয়েই থামিয়ে রাখা অসম্ভব, এই সত্যটি আবারও তুলে ধরা। পুরো আয়োজনটি ফেসবুকের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অনলাইনে এবং সরাসরি উপস্থিত থেকে সর্বস্তরের মানুষ এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। ছায়ানট আবারও প্রমাণ করল, সুরের শক্তিতে রুখে দাঁড়ানোর এই পথ যেকোনো অশুভ শক্তির চেয়েও অনেক বেশি দৃঢ় ও প্রভাবশালী।

আরও পড়ুন- জেলা থেকে রেশন দোকান! চার ধাপে নজরদারির পথে রাজ্য

_

_

_

_

_
_


