দেশের জাতীয় সঙ্গীত যাঁর লেখা, যাঁর গান গেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ পথচলা শুরু করেছিলেন, তিনিই নাকি বাংলাদেশের শত্রু! সম্প্রতি বাংলাদেশের এক জামায়েতি সভায় বিশ্বকবিকে (Rabindranath Tagore) এক মৌলবি নিকৃষ্টতম ভাষায় অপমান করেছেন। যা শুনে বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বজুড়ে ধিক্কার পড়ে গিয়েছে। সেই ‘মূর্খ মৌলবি’ বিশ্বকবিকে অপমান করে বলেন, “রবীন্দ্রনাথকে মানুষ বলে মনে করি না। ঠাকুর তো হিন্দু মানুষ। রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশের শত্রু, বাংলা ভাষার শত্রু, রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শত্রু।”

কিন্তু রবীন্দ্রনাথ আসলে হিন্দু ধর্মালম্বী ছিলেন-ই না। ছিলেন ব্রাহ্ম। ঠাকুর পরিবার রবাবর হিন্দুত্ব, ব্রাহ্মণ্যবাদের ভাবনা থেকে বরাবর মুক্তভাবে থেকে এসেছেন। তাঁরা মূর্তি পুজাতেও বিশ্বাস করতেন না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে খুবই মুক্তামনা মানুষ ছিলেন। সর্বধর্ম সমন্বয় ঘটানোর জন্য রাখি বন্ধন উত্সবের আয়োজন থেকে আরও নানা সমাজে উদরতার কাজ করেছেন। মৃত্যুর এত বছর পরেও যার গান কবিতা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। সেই বিশ্বকবিকেই এভাবে অপমান! আরও পড়ুন: শান্তির বার্তা দিয়ে বাংলাদেশ বিদ্বেষ নিয়ে মুখ খুললেন জয়া

এই ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে। ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকে বাংলাদেশ জ্বলছে রোষের আগুনে। উদীচী ও ছায়ানটের মত সাংস্কৃতিক সংস্থা লুঠপাট ও ভাঙচুরের মত ঘটনাও সামনে এসেছে। হাসিনা পতনের পর থেকেই বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মুক্তচিন্তার উপর আঘাত হানছে মৌলবাদীরা। বিভিন্নভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী কিছু মানুষ ভারতবিদ্বেষী চিন্তাভাবনার বিষ ছড়াচ্ছে। যেভাবে রবীন্দ্রনাথের মত বিশিষ্ট মানুষের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না বলেই মত দিয়েছেন কূটনৈতিক মহল।
–

–

–

–

–

–

–


