বাঙালি ভক্তির আবেগ ও আন্তর্জাতিক বৈষ্ণব সংস্কৃতির মেলবন্ধনে দিঘার জগন্নাথ ধাম ধীরে ধীরে ভারতের অন্যতম আধ্যাত্মিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। উদ্বোধনের মাত্র আট মাসের মধ্যেই প্রভু জগন্নাথ দেবের প্রতি ভক্তির টানে এক কোটি দর্শনার্থীর মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলল দিঘার জগন্নাথ ধাম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে গড়ে ওঠা এই তীর্থক্ষেত্রের ইতিহাসে যা এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বলেই মনে করছেন অনেকে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল ভক্তি ও আধ্যাত্মিকতার আবেশে দিঘার বালুমাটিতে খুলে যায় জগন্নাথ ধামের দ্বার। পুরীর পরে দিঘায় জগন্নাথ দেবের এই নব রূপের টানে ইতিমধ্যেই দেশ-বিদেশ থেকে ভক্তদের ঢল নেমেছে। অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, রাশিয়া-সহ একাধিক দেশ থেকেও ভক্তরা এসে প্রভু জগন্নাথের দর্শন করেছেন। মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই কাতারে কাতারে ভক্তদের আগমনে সমুদ্র সৈকতের পরিচিত দিঘা ধীরে ধীরে তীর্থনগরীতে রূপান্তরিত হয়েছে।

এই বিপুল দর্শনার্থীর সংখ্যা নির্ভুলভাবে গণনার জন্য মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ ফুট কাউন্ট মেশিন বসানো হয়েছিল। সেই হিসাবেই রবিবার দুপুরে এক কোটি দর্শনার্থীর সংখ্যা পূর্ণ হয়। এদিন একটি শিশু কন্যাকে প্রতীকী ভাবে এক কোটি তম দর্শনার্থী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কলকাতার টালিগঞ্জের বাসিন্দা কাকলি জানা নামের ওই শিশুকন্যা বাবা-মায়ের সঙ্গে জগন্নাথ ধাম দর্শনে এসেছিল। মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে তাকে ফুলের মালা, মহাপ্রসাদ ও বিশেষ সম্মান প্রদান করা হয়। শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে যেভাবে জগন্নাথ ধাম মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে, তা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এমন একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের অংশ হবেন, তা তাঁরা ভাবতেই পারেননি।
নতুন বছরকে সামনে রেখে প্রতিদিনই যেভাবে ভক্তদের ভিড় বাড়ছে, তাতে জগন্নাথ ধাম যে দিঘার অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে, তা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। বর্ষবরণের রাতেও মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে বিশেষ আলোকসজ্জার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

মন্দির ট্রাস্টের সদস্য রাধারমন দাস বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জগন্নাথ ধাম মানুষের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। মাত্র আট মাসে এক কোটি দর্শনার্থীর উপস্থিতি তারই প্রমাণ। বিদেশ থেকেও ভক্তদের আগমন জগন্নাথ ধামকে এক বিশেষ আধ্যাত্মিক আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত করেছে।

আরও পড়ুন – বিজেপি-শাসিত ওড়িশায় ফের বাংলা বলায় আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিক

_

_

_

_
_


