দিল্লির উড়ান নেমে পড়লো অমৃতসরে, রুদ্ধশ্বাস কারন জানালেন যাত্রী কুণাল ঘোষ

কলকাতা থেকে সোমবার, বেলা 10. 25 নাগাদ ছেড়ে দিল্লি অবতরণের কথা পৌনে 12টা নাগাদ। কিন্তু দিল্লির আকাশে ঘন্টাখানেক চক্কর কেটেও নামার অনুমতি মেলেনি এয়ার ইণ্ডিয়ার কলকাতা-লন্ডন AI 021 ড্রিমলাইনার উড়ানটির। যাত্রীরা বিস্মিত। সে কি ? কি এমন ঘটলো? প্রমাদ গুনতে থাকেন ওই উড়ানে থাকা বিদেশমুখী যাত্রীরা। যেহেতু এটি আন্তর্জাতিক উড়ান, তাই অধিকাংশ যাত্রীর গন্তব্যস্থলই বিদেশ। যাত্রা বিঘ্নিত হলে এক গাদা সমস্যায় তাঁরা পড়বেনই।
ওদিকে ভয়ঙ্কর এক সমস্যা ধীরে ধীরে সামনে চলে আসে। পাইলট দফায় দফায় ATC-কে জানাতে থাকেন, বিমানের জ্বালানি শেষ হতে চলেছে। AI 021 ড্রিমলাইনার’কে নামতে দিতেই হবে।
ইতিমধ্যে দিল্লিতে অবতরণের অনুমতি না মেলার কারন হিসাবে বলা হলো, দিল্লির আবহাওয়ার অবনতি হয়েছে। তাই এই বিপত্তি।

কিন্তু বিভিন্নসূত্র সূত্রে কিছু যাত্রীর কাছে খবর আসে, দিল্লির বিমানবন্দরজুড়ে চরম ব্যস্ততা সেনা বিমানের ওঠা-নামা নিয়ে। ওই সময় এত সংখ্যক ফৌজি-বিমানের উড়ান ATC-র হিসাবে থাকার কথা নয়। অথচ কাশ্মীর -সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ফৌজি তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে হঠাৎ। তাই যাত্রী-বিমানের ওঠানামা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। এই খবর অসমর্থিত সূত্রের হলেও, যাত্রীরা এটাই বিশ্বাস করেন।
ওদিকে ATC থেকে ড্রিমলাইনারকে বলা হয় জয়পুরে নেমে রি-ফুয়েল করো। ড্রিমলাইনার জয়পুরের আকাশে গিয়ে একই কথা শোনে, এখন নামা যাবেনা, আকাশেই থাকো। ATC-কে পাইলট জানান সেকথা। ওদিকে জ্বালানি বিপজ্জনক সীমায়। তখন ATC
কলকাতা-লন্ডন AI 021 ড্রিমলাইনার উড়ানকে নির্দেশ দেয়, অমৃতসরে চলে যাও। ফাঁকা আছে। নামতে পারবে। ওখানেই রি-ফুয়েল করে নাও।
মুখ ঘুরিয়ে ড্রিমলাইনার পৌঁছে যায় অমৃতসর। সেখানে অরতরণের অনুমতি মেলে। সেখানেই হয় রি-ফুয়েলিং।
এদিকে এই উড়ানের যাত্রী দেশের একাধিক সাংসদ। তৃণমূলের সুখেন্দুশেখর রায়, নাদিমূল হক, অপরূপা পোদ্দার, আবু তাহের খান, এই উড়ানের যাত্রী। ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা সাংবাদিক কুণাল ঘোষও। ছিলেন আইএএস রাজপাল সিং কাঁহালো। এই কাঁহালো সাহেবের তো ধারনা হয়েছিলো, তাঁদের ফ্লাইট হাইজ্যাকারের কবলেক পড়েছে। সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এই বেনজির পরিস্থিতির দায় বিমান কর্তৃপক্ষের কাঁধে চাপাননি। তাঁর বক্তব্য,” পাইলট যে জ্বালানি শেষের আশঙ্কাকে গুরুত্ব দিয়ে বিমানটি নামানোর চেষ্টা চালিয়েছে, এটাই প্রশংসনীয়”।

আর প্রাক্তন সাংসদ তথা সাংবাদিক কুণাল ঘোষ ওই পরিস্থিতিতেই নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন :-

“জরুরি অবতরণে অমৃতসরে।

এয়ার ইন্ডিয়া 021 বিমানে দিল্লি আসছিলাম।
দিল্লির কাছাকাছি এসে অবতরণের ঘোষণা হয়।
এরপর আবার নির্দেশ পাল্টে আকাশেই ঘুরতে বলা হয়।
অসমর্থিত সূত্রে খবর: দিল্লিতে একটু মেঘ। তার চেয়ে বড় কথা কাশ্মীরকেন্দ্রিক বিষয়ে সামরিক উড়ান চলছে।
আমাদের বিমানটি একঘন্টা আকাশে চক্কর কাটার পর তেল ফুরিয়ে আসে। সেকথা জানানোর পরেও দিল্লিতে নামার অনুমতি পায় নি।
তখন ঝুঁকি না নিয়ে পাইলট ঘোষণা করেন, তেল ভরা জরুরি। সেজন্য অমৃতসর বিমানবন্দরে অবতরণ করতে হবে। সেই মত বিমানটি অমৃতসরে এসেছে।
এখন বিমানেই বসে।
জ্বালানি ভরা চলছে।
দিল্লি যাওয়ার সবুজ সঙ্কেত কখন আসবে জানা নেই।”

Previous articleদেশজুড়ে সতর্কতা, তৈরি সেনাবাহিনি, সব রাজ্যে কেন্দ্রের বিশেষ অ্যাডভাইসরি
Next articleওই দুই সাংসদের কেন সাজা হবে না ?