রোজগার নেই, বাড়ি-গাড়ি বিক্রি করে দল চালানোর সিদ্ধান্ত আলিমুদ্দিনের

34 বছরের রোজগার 8বছরেই তলানিতে। বাম আমলে সিপিএমের কয়েক লক্ষ কর্মী-সমর্থক-নেতা সরকার ভাঙ্গিয়ে আর্থিকভাবে আজ সুপ্রতিষ্ঠিত। কিন্তু দল চালাতে ন্যূনতম যে টাকার প্রয়োজন, সেই টাকাও নাকি আলিমুদ্দিনের ভাঁড়ারে নেই। ফলে বাড়ি-গাড়ি বিক্রি করার পথে হাঁটতে চলেছে বঙ্গ-সিপিএম। ক্ষমতা হারানোর সঙ্গে সঙ্গেই নানা ধরনের আয় কমেছে সিপিএমের। দল চালাতে অর্থ দরকার। নানাভাবে টাকার ব্যবস্থা করার চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন নেতারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পথে নেমে চাঁদা তোলা বা দান সংগ্রহ অভিযানেও তেমন সাড়া মিলছে না। শেষপর্যন্ত বাড়ি-গাড়ি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিলো সিপিএম রাজ্য কমিটি।

আরও পড়ুন – স্টেশনে-ট্রেনে প্লাস্টিকের ব্যাগ, জলের বোতল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রেলের

কেরল ছাড়া প্রায় সব রাজ্যেই সিপিএমের আয় বিশালভাবে হ্রাস পেয়েছে। ক্ষমতায় থাকার সময় পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রাপ্ত আয়ের উপরই সর্বভারতীয় সিপিএমের বিলাসিতা চলতো। সে সব দিন এখন অতীত। দিন ফেরত আসার সম্ভাবনাও আপাতত শূন্য। কিন্তু দল তো চালাতে হবে, সে টাকা আসবে কোথা থেকে? এ রাজ্য থেকে প্রাপ্ত আয় অর্ধেকেরও কমে এসে ঠেকেছে। একই অবস্থা ত্রিপুরাতেও। তাই খরচে রাশ টানতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে আলিমুদ্দিন। বিভিন্ন জেলা কমিটিকে গাড়ির ব্যবহার কমাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত গাড়ি বিক্রি করতে বলা হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ, জেলা সম্পাদক, প্রবীণ পার্টি সদস্য এবং প্রাক্তন সাংসদরাই গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। খুব প্রয়োজন হলে অ্যাপ-ক্যাব ব্যবহার করা যেতে পারে। সিপিএম সূত্রে খবর, উত্তর ও দক্ষিণ 24 পরগনায় সিপিএম জেলা কমিটির নামে যথাক্রমে 6টি ও 4টি গাড়ি আছে। উত্তর 24 পরগনায় জেলা সম্পাদক এবং গৌতম দেব ছাড়া আর কেউ গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন না। জরুরি প্রয়োজন হলে আগে জানাতে হবে। জেলা পার্টি প্রয়োজনে অ্যাপ ক্যাবের ব্যবস্থা করে দেবে।

দক্ষিণ 24 পরগনার জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ি ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন। প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেন। কলকাতা জেলা কমিটির 17টি গাড়ি। তারমধ্যে তিনটি পার্টির। ইতিমধ্যেই নাকি 7টি গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। একটি গাড়ি বিক্রি করা হয়েছে। লোকাল ও জোনাল কমিটি বন্ধ করার পর পুরনো পার্টি অফিসগুলোও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা সম্পাদক ও প্রবীণ পার্টি সদস্য ছাড়া বাকিদের গাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কলকাতা-সহ সব জেলাতেই ফোনের ব্যবহারও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা কমিটি ছাড়া এরিয়া ও শাখা কমিটিগুলির টেলিফোন বন্ধ করা হয়েছে। এখন সবার হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন। তাই অহেতুক ল্যান্ড ফোন রাখা অর্থহীন। ওদিকে আয় বাড়াতে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা গণসংগ্রহ কর্মসূচি শুরু করবে আলিমুদ্দিন নেতৃত্ব। বলা হয়েছে, জানুয়ারি মাসের মধ্যে প্রতিটি জেলা কমিটিকে অন্তত 12 লক্ষ টাকা করে রাজ্য তহবিলে জমা দিতে হবে।

আরও পড়ুন – ক্লাস বাদ দিয়ে স্কুলেই মদ্যপান শিক্ষকদের, ভয়াবহ অভিযোগ শিলিগুড়ির এক প্রাথমিক স্কুলে

Previous articleস্কুলে শিক্ষকের মারে জখম ছাত্রী, তারপর যা হলো
Next articleএবার কিছুদিন আর্দ্রতার সঙ্গে বাড়বে ভ্যাপসা গরম, নাজেহাল হবে রাজ্যবাসী