এঁদের একজন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে মাত্র কদিনেই অরাজনৈতিক বিষয়ে শিরোনামে এসেছেন বারবার। অন্যজন, কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে এসে মুখপাত্র বনে গিয়েছেন। সে অর্থে বিজেপিতে আসা দলবদলু নেতা দুজনেই। শোভন চট্টোপাধ্যায় ও জয়প্রকাশ মজুমদার। শোভনের বিজেপি যোগের দিন এই জয়প্রকাশকেই দিল্লিতে সক্রিয়ভাবে দেখা গিয়েছিল। এরপর শোভন ও তাঁর বান্ধবীর নানা বায়নাক্কায় যখন জেরবার রাজ্য বিজেপি, তখনও শোভনের বাড়িতে ছুটতে দেখা গিয়েছিল এই জয়প্রকাশকেই। সেই দুই দলবদলু নেতার মধ্যেই এখন প্রকাশ্যে এল মতভেদ, এবং তাও অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের আকারে। আর এসবের কেন্দ্রে আছেন এক রহস্যময়ী নারী, রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়। যিনি এই মুহূর্তে কার্যত অন্তরালবাসিনী এবং ধরাছোঁয়ার বাইরে।

14 অগাস্ট দেবশ্রীকে কে কীভাবে বিজেপি অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন তা নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে রহস্য-রোমাঞ্চ সিরিজ লেখা হয়ে যেতে পারে। দেবশ্রী ইস্যুতে ইতিমধ্যেই অপ্রত্যাশিতভাবে উঠে এসেছে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের নাম। আবার এই একই দেবশ্রীকে নিয়ে বাক-মল্লযুদ্ধ বাধিয়েছেন শোভন ও জয়প্রকাশ। শোভন বলেছেন, জয়প্রকাশই কোনও এক এনজিও মারফৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁর বিজেপি যোগের দিনই দেবশ্রীকে দিল্লির পার্টি অফিসে নিয়ে যান। যা শুনে জয়প্রকাশের প্রতিক্রিয়া, দেবশ্রী রায়ের সিনেমা দেখা ছাড়া জীবদ্দশায় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ বা ফোনালাপ হয়নি। শোভনবাবু দেবশ্রীর বিষয় নিয়ে এবং নারদের নোটিস পেয়ে আইডেনটিটি ক্রাইসিসে ভুগছেন। যা শুনে আবার শোভন বলছেন, আমার আইডেনটিটি সমস্যার ব্যাপারই নয়। একটা ষড়যন্ত্র হয়েছিল, তা এখন প্রকাশ্যে আসছে। এর পাল্টা মন্তব্যে জয়প্রকাশ বলছেন, দিল্লির অফিসে 14 অগাস্ট আমার সামনেই বৈশাখী শোভনকে অভিযোগ করে বলেন, তুমিই দেবশ্রীকে এখানে এনেছ।

এই পারস্পরিক দোষারোপের আবহে কে সত্য, কে মিথ্যা বোঝা দায়। একমাত্র দেবশ্রী নিজে মুখ খুললেই রহস্যের যবনিকাপাত হবে। বঙ্গ রাজনীতি যে সত্যিই রোমাঞ্চকর হয়ে উঠল!
