আলতা সিঁদুর ধর্ম না বিজ্ঞান, আসুন রামমোহন সম্মিলনীতে

বিবাহিত মহিলারা আলতা সিঁদুর পরেন কেন? এর পিছনে শুধুই ধর্ম, রীতি ; নাকি বিজ্ঞানও আছে? কীভাবে চালু হল এগুলি? কী দিয়ে তৈরি হয়? সিঁদুর আলতার এই বিষয়টিই এবার রামমোহন সম্মিলনীর পুজোর থিম। 75তম বর্ষে থিম রূপায়ণে ক্লাবের পাশে মহাতীর্থ সিঁদুর ও আলতা।

ক্লাবসূত্রের বক্তব্য, বিবাহিত হিন্দু নারীদের সিঁথিতে সিঁদুর পরা আনুমানিক 5000 বছরের প্রাচীন সংস্কৃতি। প্রাচীন রামায়ণে মাতা সীতা এবং মহাভারতে দ্রৌপদীর সিঁথিতে সিঁদুর ব্যবহারের প্রমাণ আছে। একই প্রমাণ আছে হরিবংশ পুরাণে যখন শ্রীকৃষ্ণ রুক্মিনীদেবী কে বিবাহ করেন তখন তিনিও রুক্কিনীদেবীর সিঁথিতে সিঁদুর দান করেছিলেন, এই পরম্পরাই এখনও অবধি হিন্দু বিবাহে চলে আসছে। হিন্দু সমাজের মঙ্গলচিন্হ সিদুঁর দিয়েই গড়ে উঠছে এবার উত্তর কলকাতার রামমোহন সম্মিলনীর পূজামন্ডপ । এবার তাদের পুজোর 75 তম বর্ষ তাই উদ্যোক্তাদের মধ্যে দেখা গেল বিশেষ উদ্দিপনা। ক্লাব সদস্য অনির্বাণ সেনগুপ্ত জানালেন বর্তমানে সিঁদুরের ব্যবহার কমে আসছে। আধুনিকতার সঙ্গে পরম্পরাকেও ধরে রাখার প্রয়োজন আছে সেটা সমাজের সামনে তুলে ধরতেই তাদের এই প্রয়াস।

মন্ডপে তুলে ধরা হচ্ছে ব্রহ্মান্ডপুরাণের অংশ বিশেষ। দেবী ললিতা যিনি মা দূর্গা বা মা শক্তির অপর নাম তার মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে ললিতাদেবীর সিঁথির সিঁদুর কে শ্রীলক্ষ্মীর প্রতীক হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থাৎ একজন বিবাহিত নারীকে এই সিঁদুরই শ্রীলক্ষ্মীর স্বরূপ হিসাবে সমাজের সামনে তুলে ধরে। হিন্দু সংস্কারে নারীকে লক্ষ্মী হিসাবে গণ্য করা হয় এবং বিবাহিত নারী কে শ্রী+ লক্ষ্মী =শ্রীলক্ষ্মী হিসাবে গণ্য করা হয় কারণ একজন বিবাহিত নারী সংসারের ‘শ্রী’ এর কারক, ‘শ্রী’ বিনা সেই সংসার পূর্ণতা পায় না।
সিঁদুর পরার সময় মায়েরা নিচের দিকে নয়, ঊর্ধ্বায়ণ করেন। কেন? তার পূর্ণাঙ্গ ব্যখ্যা থাকছে মন্ডপের ভিতরে।
তর্জনি দিয়ে সিঁদুর পরলে কী হয়? মধ্যমা দিয়ে ধারণ করলেই বা কি হয় এইসবের উত্তর পেতে গেলে আসতেই হবে রামমোহন সম্মিলনীর পুজো দেখতে।

শিল্পী মলয় রায় জানালেন মন্ডপের মূল মন্ডপের প্রবেশদ্বারে চোখে পড়বে আকাশ থেকে নেমে আসা স্বর্গীয় সিঁদুরের রেখা এবং সেই সিঁদুর গঙ্গার তীরে অসংখ্য নৌকো যেগুলো আমাদের এক একটি সংসার। এই সিঁদুরই নৌকারূপি সংসারগুলোকে জগৎ পাড়াপাড় করাচ্ছে। তার নিচেই থাকছে বাঁশ আর লাল কাপড়ের নিপুন বাধন যা মনে করিয়ে দেবে সংসারে সবার মধ্যের মেলবন্ধন। মন্ডপের ভিতরে থাকছে সিঁদুর ব্যবহারের আধ্যাত্মিক, সামাজিক ও বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা যা ট্র্যডিশনাল পেন্টিং এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।
প্রতিমাতেও থাকছে বহু পুরানো কালিঘাটের পটদূর্গার ফ্ল্যশব্যাক।

আরও পড়ুন-দুর্গোৎসবে সরকারি প্যাকেজ

 

Previous articleযাদবপুরে হেনস্থার মুখে বাবুল সুপ্রিয়
Next articleরাজীব মামলায় আদালতে তুমুল বিতণ্ডা, রায়দান পরে