মার্কিন মুলুকে জননেতা গড়তে সেমিনার, উদ্যোগে বাঙালি মহিলারা

ছেলে, মেয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হবে। না হলে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। ক্রিকেটারও হতে পারে সৌরভ, সচিনের মতো। বা বড় বিজনেস টাইকুন। অভিনয় করলেও মন্দ না; অমিতাভ বচ্চন, হৃত্বিক রোশন, দীপিকা পাডুকোন। কিন্তু বংশ পরম্পরায় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকলে, সন্তান রাজনীতিবিদ হোক চান না বাবা-মায়েরা। কোনও আটপৌরে বাঙালি মা এই স্বপ্ন দেখেন না। কিন্তু এখান থেকে বহু বহু মাইল দূরে দক্ষিণ-পূর্ব আমেরিকার উত্তর কারোলিনা প্রদেশের শার্লট শহরে বসে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রাজনীতির মঞ্চে সাবলীল করতে চান এক বঙ্গ ললনা। চান ভবিষ্যতের জননেতা গড়তে।

তাঁর জন্ম, লেখাপড়া এই বঙ্গেই। বেঙ্গালুরুর মেট্রো টাইমস-এর এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন। তারপরে স্বামীর কর্মসূত্রে পাড়ি কারোলিনায়। সেখানে গিয়ে আর পাঁচটা প্রবাসী ভারতীয় বধূর মতো গুছিয়ে শুধু ঘরকন্যা করতে পারতেন। করছেনও। কিন্তু তার পাশাপাশি, শান্তা দত্ত কলকাতা থেকে বহু বহু কিলোমিটার দূরে শার্লটে তৈরি করেছেন আর এক বাংলার জগৎ। বেঙ্গলি ওমেন্স ফোরাম নামে বাঙালি মহিলাদের একটি সংগঠন তৈরি করেছেন তিনি। তবে, বাংলার মেয়ের মনে দুর্গাপুজোর শিকড় গাঁথা। যেমন, দেবী দুর্গার আরাধনা করেন পুরুষেরা। তেমনই বেঙ্গলি ওমেন্স ফোরামে পুরুষ ব্রাত্য নয়। মহিলাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগঠনের জড়িত আছেন তাঁরাও। আর বাঙালি মানে শুধু কলকাতার, রাজ্যের বা ভারতের নয়, বাংলাভাষী যে কোনও মানুষই এই ফোরামের সদস্য হতে পারেন। সদস্য সংখ্যা 50 হলেও, পরোক্ষভাবে অনেকেই জড়িয়ে আছেন এই সংগঠনের সঙ্গে।

আরও পড়ুন-স্বর্গের নিচে মহাবিশৃঙ্খলা: শারদোৎসবে বুদ্ধর নতুন বই

কী না করেন তাঁরা? বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা সবই আছে তালিকায়। এবার তাঁদের লক্ষ্য আগামী প্রজন্মকে রাজনীতির আঙিনায় উপযুক্ত করে তোলা। যাতে আগামী দিনে সেনেটর বা রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কথোপকথনে, মেলামেশায় কোনও সমস্যা তৈরি না হয়। রাজনীতিকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার কথা ভাবতে পারে তারা। কারণ, বেঙ্গলি ওমেন্স ফোরামের উদ্দেশ্য আলাদা রকম ভাবা। তারা বিশ্বাস করে ‘আমরাই পরিবর্তন’। সেই কারণেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রাজনীতির পাঠ দিতে আগ্রহী প্রবাসী বাঙালি মহিলাদের এই সংগঠন। ছোটদের ভবিষ্যতের রাজনীতিবিদ হিসেবে গড়ে তুলতে 28 সেপ্টেম্বর “আমাদের সন্তান, আগামীর জননেতা” শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ‘বেঙ্গলি ওমেন্স ফোরাম’। এই সেমিনারে অংশ নেবেন অভিজ্ঞ সেনেটর, সিটি কাউন্সিল মেম্বার সহ বিশিষ্টজনেরা। ছোটদের শেখানো হবে, কীভাবে রাজনীতির আঙিনায় তারা স্বচ্ছন্দে বিচরণ করতে পারে। সুদূর আমেরিকায় থাকা বাঙালি মহিলাদের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। কথায় বলে দশ জন বাঙালি এক জায়গায় থাকলে, নাকি তিনটে দুর্গাপুজো হয়। অর্থাৎ একজোট হয়ে কাজ করার মানসিকতা তাদের নেই। কিন্তু শান্তারা দেখিয়ে দিচ্ছেন ঐক্যবদ্ধভাবে বাঙালি মহিলারা শুধু দেশে নয়, বিদেশের মাটিতেও নিজেদের পরিচয় গড়ে তুলতে পারে। হাত লাগাতে পারে দেশ গড়ার কাজে।

আরও পড়ুন-রোনাল্ডোকে পিছনে ফেলে ফিফার “দ্য বেস্ট” মেসি

 

Previous articleস্বর্গের নিচে মহাবিশৃঙ্খলা: শারদোৎসবে বুদ্ধর নতুন বই
Next articleবিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের সাংসদ