মুকুলের কাছে নারদা তথ্য আছে! জানিয়ে দিলেন দিলীপ ঘোষ

“মুকুল রায়কে আগেও ডেকেছে, আবার ডাকছে। তাঁর কাছে তথ্য আছে। উনি সে সব বলবেন। বহু লোককে ডাকা হচ্ছে।” বক্তা বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। অর্থাৎ, বিজেপি রাজ্য সভাপতি পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন আইন আইনের পথে চলবে। সেক্ষেত্রে কোনও রাজনীতির রং নয়, কোন দল নয়। তদন্তে সঠিক পথেই যাক, এটাই বুঝিয়ে দিতে চাইলেন দিলীপ ঘোষ।

এদিকে, দলের ভাবমূর্তিতে কোনও প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। মুকুল রায়কে ডাকায় কি বিজেপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে? বিজেপির রাজ্য সভাপতির বক্তব্য, ভাবমূর্তি নতুন করে কী খারাপ হবে! যাদের যাদের নাম এসেছে। আগেও ডেকেছে এখনও ডাকছে। সব তথ্য সামনে আসা উচিত।

দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা। তাহলে কি মুকুলের উপর থেকে হাত তুলে নিচ্ছে বিজেপি। মুকুলের হয়ে কোনওরকম দায় নিতে নারাজ গেরুয়া শিবির? দিলীপ ঘোষের এদিনের মন্তব্য কিন্তু রাজনৈতিকভাবে খুব তাৎপর্যপূর্ণ।

আইপিএস এসএম এইচ মির্জা গ্রেফতার হওয়ার পরই নারদ কাণ্ডে বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে হাজিরার নোটিশ পাঠিয়েছিল সিবিআই। এরই মধ্যে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন, মুকুলের হাজিরা এড়িয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাহলে কি বিজেপি শিবিরে গিয়ে বাড়তি সুবিধা পেতে চাইছেন মুকুল রায়? এতে কি বিজেপি সমস্যায় পড়বে না? দলীয় ভাবে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে না? নারদা নিয়ে তারা শাসক দলকে কিভাবে আক্রমণ করবে? যেখানে তাদেরই দলের এক নেতা নারদ কাণ্ডে ফেঁসে আছে! প্রশ্ন কিন্তু উঠছে। প্রশ্ন কিন্তু উঠবে।

এদিকে, শুক্রবার নিজাম প্যালেসে তাঁর হাজির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি প্রতিনিধি পাঠিয়ে জানিয়েছেন দলীয় কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারবেন না। সিবিআই এরপর আরও একটি নোটিশ দিয়ে জানিয়েছে আগামীকাল অর্থাৎ শনিবার হাজির হতে হবে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে শনিবার সিবিআই-এর ডাকে সাড়া দিয়ে নিজাম প্যালেসে যাচ্ছেন মুকুল রায়। সেখানে সিবিআই মির্জার সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন বলে খবর।

প্রসঙ্গত, নারদ স্টিং ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ব্যবসায়ী সেজে আসা নারদ কর্তাকে ম্যাথ স্যামুয়েলসকে আইপিএস মির্জার কাছে পাঠাচ্ছেন মুকুল। তিনি সাফাই দিয়েছেন, “আমি সেই সময় নির্বাচনে দাঁড়ায়নি। অনেক ছবি প্রতিটা টিভি দেখিয়েছে। কোথাও আমাকে কেউ দেখাতে পারেনি। আমি টাকা নিইনি। ওরা ব্যবসার জন্য এসেছিলেন। আমি তখন মির্জার সঙ্গে দেখা করতে বলি। কোনও টাকা লেনদেনের কথা বলিনি।”

এদিকে, শনিবার সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে তাঁর আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন মুকুল রায়। সূত্রের খবর, ধৃত আইপিএস মির্জার মুখোমুখি বসিয়ে মুকুলকে জেরা করতে চায় সিবিআই। আর তার সঙ্গে চালানো হবে নারদের স্টিং ভিডিয়ো। নারদের একটি অংশে কোটি টাকার লেনদেনের প্রসঙ্গ রয়েছে। ওই অংশটি চালিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই।

আর ঠিক সেই সময়ই রাজ্য বিজেপির সভাপতির এহেন মন্তব্যে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তাহলে কি মুকুলকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে গেরুয়া শিবির? উত্তরটা অবশ্য সময় দেবে!

Previous articleমধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানাবে! তান্ত্রিকের ঝাড়ফুঁকের বলি শিশু
Next articleএন আর সি নিয়ে কিছু তথ্য যা আপনাকে জানতেই হবে