Monday, August 25, 2025

দেবাঞ্জন দাস হত্যাকাণ্ডে রোজই নতুন নতুন তথ্য মিলছে। এবার তদন্তকারীদের হাতে এক চাঞ্চল্য তথ্য। খুনের দেড় মাস আগে পর্যন্ত রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে ছিল দেবাঞ্জন দাস হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত প্রিন্স সিং। মানসিক অবসাদের কারণে তাকে পাঠানো হয় সেখানে। সাড়ে তিন মাস রিহ্যাবে থাকে সে। সেখান থেকে বেরোনোর পরে যখন জানতে পারে, তার প্রাক্তন প্রেমিকা এখন দেবাঞ্জনের বান্ধবী, তখনই তাকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে প্রিন্স।

সেইমতো জোগাড় করে আগ্নেয়াস্ত্র। যথেষ্ট পরিকল্পনা করেই প্রিন্স খুন করেছিল বলে মত তদন্তকারীদের। তবে দিনক্ষণ ঠিক করেনি অভিযুক্ত। নবমীর রাত্রে সল্টলেকের একটি ধাবায় বসে খুনের পরিকল্পনা করে প্রিন্স ও তার বন্ধু বিশাল মারু। সেই মতো বিশালের স্কুটি নিয়ে দেবাঞ্জনকে ধাওয়া করে প্রিন্স। দেবাঞ্জন যখন তরুণীকে নিমতার বাড়িতে নামাতে গিয়েছিলেন, তখন তার কাছেই স্কুটি নিয়ে অপেক্ষা করছিল প্রিন্স। বান্ধবী গাড়ি থেকে নেমে দেবাঞ্জনকে হাত নেড়ে বিদায় জানানোয়, আরও ক্ষেপে যায় তার প্রাক্তন প্রেমিক। সিদ্ধান্ত নেয়, “আজই শেষ”। সেইমতো দেবাঞ্জন ফিরতেই গাড়ি দাঁড় করায় প্রিন্স। গাড়ির ডানদিকের কাচ নামিয়ে প্রিন্সের সঙ্গে কথা বলতে যান দেবাঞ্জন। তর্কাতর্কি বেঁধে যায় দুজনের। দেবাঞ্জন হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন যে এখনই একটা হেস্তনেস্ত হয়ে যেতে পারে। সেই মতো তিনি গাড়ি স্টার্ট দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রিন্সের লক্ষ্য ছিল স্থির। তার ছোড়া প্রথম গুলি লাগে দেবাঞ্জনের কবজিতে। প্রথম গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও, দ্বিতীয় গুলি টার্গেট মিস করেনি। লাগে গলার ডানদিকে। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় দেবাঞ্জন দাসের। গাড়ি স্টার্ট দেওয়া অবস্থায় থাকায় এগিয়ে যায় অনেকটা। দেয়ালে ধাক্কা মেরে প্রায় ৭-৮ মিটার এগিয়ে যায় গাড়িটি। ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় প্রিন্স।
এই ঘটনায় মুখ্য ভূমিকা আছে বিশাল মারুর। প্রথম থেকেই প্রিন্সকে সমর্থন করে যাচ্ছিল বিশাল। শুধু তাই নয়, নবমীর রাতে পার্টি থেকে বান্ধবীকে নিয়ে দেবাঞ্জন নিমতায় আসা পর্যন্ত পুরো রাস্তার গতিবিধি সেই প্রিন্সকে জানাচ্ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এখন খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি খুঁজছেন তদন্তকারী অফিসাররা। তবে একটা বিষয় তাঁরা নিশ্চিত, প্রাক্তন প্রেমিকাকে নিয়ে টানাপোড়েনের জেরেই দেবাঞ্জনকে খুন করেছে প্রিন্স সিং। প্রাক্তন প্রেমিকাকে নিয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল ছিল সে। তার সঙ্গে বিচ্ছেদ কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা। তার জেরেই খুন।

আরও পড়ুন-ডিম উৎপাদনে স্বনির্ভরতার পথে বাংলা

 

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...
Exit mobile version