বাগদাদির ওপর নজরদারি রেখেছিল সে, এবার সেই গুপ্তচরকে কয়েকশো কোটি দিচ্ছে আমেরিকা

আইএস সুপ্রিমো আবু বকর আল-বাগদাদি নিহত। জানা গেছে, বাগদাদির সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ভেতরেই গুপ্তচর নিয়োগ করেছিল আমেরিকা। আর সেই গুপ্তচরের সরবরাহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করেই সিরিয়ায় অভিযান চালানো হয়। এবার গুপ্তচরবৃত্তির পুরস্কারও নাকি পেতে চলেছেন তিনি। কথা মতো, আমেরিকার কাছ থেকে ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাবেন সেই গুপ্তচর!

ওয়াশিংটনের পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাগদাদির চলাফেরা ও কার্যকোলাপের ওপর নজর রাখার জন্য আইএসের এক সদস্যকেই গুপ্তচর হিসেবে নিয়োগ করেছিল আমেরিকা। নিজের কাজ যথাযথভাবেই পালন করেছেন সেই গুপ্তচর, বাগদাদির চলাফেরা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি সব তথ্য সে সরবরাহ করেছে মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে। এমনকি বাগদাদির গোপন আশ্রয়স্থলের নিখুঁত তথ্যও পাচার করেছে সে। সেসব তথ্য বিশ্লেষণ করেই গত শনিবার সিরিয়ায় বাগদাদির বিরুদ্ধে অভিযান চালায় আমেরিকা। হঠাৎ সেই অভিযানে বাগদাদি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে বাগদাদির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় সেখানেই উপস্থিত ছিলেন সেই গুপ্তচর। অভিযানের দু’দিন পর ওই এলাকা থেকে পরিবার-সহ তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে তার নাগরিকত্ব সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি।

সূত্রের খবর, সেই গুপ্তচর একজন সুন্নি আরব। আইএসের হাতে নিজের পরিবারের কিছু সদস্যের প্রাণহানি হওয়ায় সে আইএসের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি শুরু করে।

এর আগে বাগদাদির মাথার দাম ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘোষণা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাগদাদির বিরুদ্ধে চালানো অভিযান সফল হওয়ায় এবার এই অর্থ পেতে চলেছে সেই গুপ্তচর। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন আধিকারিক বলেছেন, পুরস্কার হিসেবে ওই গুপ্তচরকে ২৫ মিলিয়ন ডলারের পুরোটাই দিয়ে দেওয়া হতে পারে। পুরোটা না দিলেও উল্লেখযোগ্য একটা অংশ যে সে পেতে চলেছে, সেটি একপ্রকার নিশ্চিতই করে দিয়েছে আমেরিকা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই বাগদাদির ব্যাপারে তথ্য দিয়ে যাচ্ছিল এই গুপ্তচর। কিন্তু এত দিন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তারা। কয়েক সপ্তাহ আগে পাওয়া বিশেষ কিছু তথ্যের পর তাদের মনে হয়েছে, এবার অভিযান চালানো যায়।

গত শনিবার সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে অভিযান চালিয়ে বাগদাদিকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাগদাদির প্রকৃত নাম ছিল ইব্রাহিম আওয়াদ ইব্রাহিম আল-বদরি। সংগঠিত ও নির্মম যুদ্ধক্ষেত্রের কৌশল ভালো জানা ছিল তাঁর। উত্তর বাগদাদের অদূরে সামারা এলাকায় ১৯৭১ সালে জন্মগ্রহণ করে বাগদাদি। ২০১৪ সালে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস যখন ইরাকের মসুল শহর দখলে নিয়েছিল, তখন নিজেকে আইএসের মুখপাত্র হিসেবে ঘোষণা করেছিল বাগদাদি।

Previous articleকী কাণ্ড! ডাকাতির পিছনে ইউটিউব প্রশিক্ষণ
Next articleস্কুল সার্ভিসে উঠে গেল মৌখিক পরীক্ষা, সঙ্গে আরও পরিবর্তন