ইঞ্জিনিয়ারের কটাক্ষে অনুষ্কার পত্রবোমা, শোরগোল ক্রিকেটমহলে

সেই ছবি, যা নিয়ে বিতর্ক

বিরাট কোহলির বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের মতোই এবার বিস্ফোরণ তাঁর স্ত্রী অনুষ্কার। ফারুখ ইঞ্জিনিয়ারকে এক হাত নিয়ে লেখা তাঁর চিঠি সোস্যাল মিডিয়ায় এ-ই মুহূর্তে ভাইরাল।

কী বলেছিলেন ভারতের প্রাক্তন উইকেটরক্ষক ফারুখ ইঞ্জিনিয়ার? সৌরভ বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি পুণেতে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এবছর ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ ম্যাচ চলার সময় ভারত অধিনায়ক কোহলির স্ত্রী অনুষ্কার জন্য নাকি নির্বাচকরা চা নিয়ে আসতেন। ক্ষুব্দ অনুষ্কা ট্যুইটারে পাল্টা একটি চিঠি পোস্ট করেন, যা নিয়ে ক্রিকেটমহল সরগরম। অনুষ্কা লিখেছেন আমি বিশ্বাস করি মিথ্যে কথা বলা হলে বা অতিরঞ্জিত কিছু লেখা হলে সে নিয়ে চুপ থাকাই ভাল। কিন্তু নীরবতাকে কেউ যদি দুর্বলতা ভাবেন তাহলে ভুল ভাববেন। কারণ বারবার একই কথা যদি বলা হয় তাহলে মিথ্যাও একসময় সত্যি মনে হয়। বিরাটের সঙ্গে যখন আমার বিয়ে হয়নি তখন সে খারাপ পারফরম্যান্স করলেই আমাকে দায়ী করা হতো। এখন বিরাট আমার স্বামী। এখনও কিছু ভিত্তিহীন এবং আজগুবি অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে ওঠে। কিন্তু আমি চুপ থেকেছি। গল্পের গরু গাছে উঠতে উঠতে এমন কথাও লেখা হয়েছে যে আমি নাকি নির্বাচনী বৈঠকের অংশ নিয়েছি। আমাকে নাকি বেশি সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। বিরাট অধিনায়ক থাকাকালীন বিদেশ সফরে আমি নাকি নিয়ম ভেঙে তার সঙ্গে বেশিক্ষণ থেকেছি। আমার নিরাপত্তা ও টিকিট নিয়ে নাকি ক্রিকেট বোর্ড ব্যতিব্যস্ত হয়েছে। আরও অনেক-অনেক অভিযোগ। কিন্তু কেউ যদি সত্য ঘটনা অনুসন্ধান করতেন, তাহলে এসব লিখতেন না। তবু আমি চুপ করে থেকেছি।

কিন্তু যারা একথা বলছেন তাদের জেনে রাখা উচিত আমি নিজের টাকায় ম্যাচ এবং বিমানের টিকিট কেটেছি। একবার ভারতীয় হাইকমিশনারের স্ত্রীর অনুরোধে একটি গ্রুপ ছবি তুলতে বাধ্য হয়েছিলাম। যদিও আমি সেই ছবি তুলতে চাইনি এবং সেই ছবি নিয়েই পরে বিশাল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বলা হয়েছিল আমি ইচ্ছে করেই ভারতীয় দলের মধ্যে নিজেকে ঢুকিয়েছিলাম। যদিও জেনে রাখা উচিত আমাকে ব্যক্তিগতভাবে সেই অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রণ করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন – পিঙ্ক ইতিহাস শুরুর দিনেও অবিচ্ছিন্ন শচীন-সৌরভ জুটি


যে বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমার এই চিঠি এবার সেই প্রসঙ্গে আসা যাক। বলা হয়েছে বিশ্বকাপের ম্যাচ চলাকালীন নাকি নির্বাচকরা আমাকে চা এনে দিতেন। প্রথমত বলি আমি নির্বাচকদের নির্দিষ্ট আসনে বসিনি। বসেছিলাম ফ্যামিলি বক্সে। এই সত্যটা কেন অনুসন্ধান করা হয়নি? এর মাধ্যমে কেউ যদি নির্বাচকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তবে তা তুলতে পারেন। কারন, সেটা আমার বিষয় নয়। আর যারা প্রশ্ন করছেন তাদের বলে রাখি আমি চা নয়, কফি খাই।

এরপরই ফারুক ইঞ্জিনিয়ারকে সরাসরি আক্রমণ করে অনুষ্কা বলেন, আমার মনে হয়েছে এই ধরনের বক্তব্য নিম্নরুচির, জঘন্য এবং বিদ্বেষপূর্ণ। তাই বাধ্য হয়ে চিঠি লিখলাম। এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে বাধ্য হলাম। মানুষেরও জানা দরকার হোয়াট ইজ হোয়াট। কারও ব্যক্তিগত বিশ্বাস কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্যে আমাকে যেন ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা না হয়। আমাকে বা আমার স্বামীর সম্মানহানি করতে চাইলে এরপর তাহলে তথ্য দিয়ে অভিযোগের জবাব দেব। জেনে রাখুন নিজের যোগ্যতায় এবং পরিশ্রমে আমি নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছি। আমার নিজস্ব সম্মান আছে এবং তা অর্জন করেছি। আমি স্বাধীনচেতা এবং স্বনির্ভর। হতে পারে ঘটনাচক্রে আমি ভারতের ক্রিকেট অধিনায়কের স্ত্রী। আগামী দিনে অভিযোগ তোলার সময় এই কথাগুলো মনে রাখলে খুশি হব, নইলে পাল্টা চিঠি লিখতে বাধ্য হব।

অনুষ্কার চিঠির জবাবে ফারুক ইঞ্জিনিয়ার বিষয়টিকে লঘু করতে গিয়ে বলেন, আমি নেহাতই মজা করেছিলাম। বেকার জলঘোলা করা হচ্ছে। অনুষ্কা ভাল মেয়ে। বেচারাকে বিনা কারনে বিতর্কে জড়ানো হচ্ছে।

কিন্তু বিতর্ক এখানেই থামবে তো!

আরও পড়ুন – দূষণে ভরপুর দিল্লিতেই প্রথম টি-২০ খেলবে ভারত-বাংলাদেশ

Previous articleভিক্টোরিয়ায় প্রাতঃভ্রমণে ধনকড়, শুনলেন গানও
Next articleডেঙ্গুতে মৃত কলকাতা পুরসভার সোশ্যাল সেক্টরের ম্যানেজার