এনআরসি ভবিষ্যতের দলিল, ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝালেন বিচারপতি রঞ্জন গগৈ

আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা মাত্র, তারপরই তিনি অবসর নেবেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জন গগৈ NRC নিয়ে এবার বোমা ফাটালেন। রঞ্জন গগৈ বলেন, ‘এর আগে এই রাজ্যে অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা নিয়ে শুধু অনুমানের ভিত্তির ওপর একটা মত চলে আসছিল, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি, আতঙ্ক এবং ভয়ঙ্কর, অনাচার ও হিংসাকে প্রশ্রয় দিচ্ছিল। তাই এনআরসি ভবিষ্যতের দলিল হয়ে উঠতে পারে।’

এখানেই থেমে থাকেনি তিনি। আরও বলেন, ‘অসমের বাস্তব পরিস্থিতি না বুঝে অসম নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মন্তব্যের সমালোচনা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এসব কিছু মানুষ একটি বিকৃত ছবি মানুষের সামনে তুলে ধরছেন। যার ফলে অসমের উন্নয়ন কর্মসূচি ধাক্কা খাচ্ছে।’

এরপর রঞ্জন গগৈ বলেন, ‘এনআরসি কোনও নতুন বা মহান ধারণা নয়। ১৯৫১ সালেই বিষয়টি চালু হয়। বর্তমানে ১৯৫১ সালের এনআরসি’র আপডেটের কাজ চলছে।’ প্রধান বিচারপতি এনআরসি নিয়ে কিছু সংবাদপত্রের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন রিপোর্টিং গোটা পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করে তুলছে।’

অসমে এনআরসি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। আর তা নজরদারি করছেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। অসমের এনআরসি থেকে ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জন নাগরিক বাদ পড়ে এখন তাঁরা আতঙ্কের মাঝে দিন কাটাচ্ছেন।

অসমের একাধিক মানবাধিকার সংগঠন প্রশ্ন তুলেছে, এই বাদপড়া ১৯ লক্ষ মানুষ কোথায় যাবেন? এ বছরের ৩১ আগস্ট এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে অসম সরকার। সেখানেই বাদ যায় অধিকাংশ বাঙালি হিন্দু-মুসলমানের নাম। এরপরই এই এনআরসি নিয়ে তেতে ওঠে পশ্চিমবঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, জাতীয় কংগ্রেস এবং বামেরা এই এনআরসি’র বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। সেই আন্দোলন এখনও জারি রেখেছে। একযোগে তারা ঘোষণাও করেছে, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি কার্যকর করতে দেওয়া হবে না। কার্যকর করতে গেলে মানুষের লাশের ওপর দিয়ে কার্যকর করতে হবে। কারণ, বিজেপি সরকারের এই এনআরসি মানবে না পশ্চিমবঙ্গ।

এর আগে কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, অনুপ্রবেশকারী রুখতে কার্যকর করা হবে এনআরসি। তবে এই এনআরসি’র কোপে পড়বে না ভারতে আসা বাংলাদেশের হিন্দু উদ্বাস্তু এবং শরণার্থীরা। তাঁরা যথারীতি ভারতে থাকবেন। তাঁদের দেওয়া হবে নাগরিকত্ব।

Previous articleসাহিত্যে এই প্রথম থ্রিলার ওয়ার্কশপ
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ