ফের ভিন দেশে কাজে গিয়ে আটকে বাঙালি

সৌদিআরবে কাজ করতে গিয়ে অসহায় বাংলার যুবকেরা। এদিকে পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বাড়ি ফেরার আশা দেখতে পাচ্ছে না তাঁরা। এক ভিডিও বার্তায় এসে পৌঁছেছে তাঁদের বাড়ির মানুষের কাছে। একই অবস্থা দেশের আরও ২০ জন যুবকের। ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি নিয়ে দেশের বিদেশ মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, এমনকী সৌদির লেবার কমিশনার ও রাষ্ট্রদূতকে ইমেল ও ডাক মারফৎ লিখিতভাবে ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানান। পরিবারের তরফে “দিদিকে বলো” এবং অনলাইনেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোং প্রচেষ্টায় আশার আলো দেখতে পাচ্ছে না পরিবার।

জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের কান্দির জনৈক ব্যক্তির মাধ্যমে কাজের সন্ধানে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে সৌদি আরবে যান বীরভূমের মল্লারপুর গ্রামের ফিরোজউদ্দিন। একই সঙ্গে যান মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম থানার হরিপুর গ্রামের চিরঞ্জিত বাগদি। তাঁদের সৌদি আরবে একটি কোম্পানিতে কাজ দেওয়ার কথা বলা হলেও বর্তমানে রিয়াদে শসা ও টমেটো প্যাকিংয়ের কাজে লাগানো হয়েছে। বছর দুয়েক ধরে তাদের উপর মানসিক অত্যাচার বেড়েছে বলে দাবি পরিবারের। এমনকী বাড়ি ফিরতে চাওয়ায় তাদের পাসপোর্ট ভিসা কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। রিয়াদ থেকে ফোনে ফিরোজ উদ্দিন জানান, ‘তাঁরা মরুভূমি এলাকায় রয়েছেন। তাঁদের ভারতীয় মুদ্রায় ২৫ হাজার টাকা বেতন দিত। বছরখানেক ধরে বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু খাবার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমি ফোনে কথা বলছি জানলে খাবারও বন্ধ করে দেবে। ভারতবর্ষে ২৫ জন একইভাবে আটকে রয়েছে। বাড়ি ফেরার কথা বলতেই মানসিক অত্যাচার বাড়িয়ে দেয় মালিক খালেক মিত্রিক।’

ছেলের দুর্দশার কথা জানতে পেরে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হন বাবা মুহাম্মদ জহিরুদ্দিন। কিন্তু কোনও সারা না পেয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলকে চিঠি করেন। শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, “ওই মহিলার আবেদন পাওয়ার পরেই আমি রাজ্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি”। বহু আবেদন নিবেদনের পরও ছেলেকে ফিরে পাওয়ার কোন ইতিবাচক সারা পাননি পরিবার। মা রওশনারা বিবি বলেন, “পরিবারের মুখের দিকে চেয়ে ভিন দেশে কাজ করতে গিয়েছিল ছেলে। প্রথম দিক থেকে মাসে মাসে টাকা পাঠাত। কিন্তু বছরখানেক ধরে কোন টাকা পাঠাচ্ছে না। ফলে বাড়িতে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে”। রামপুরহাট মহকুমা শাসক শ্বেতা আগরওয়ালকে এব্যাপারে ফোন করলে, যথারীতি ফোনের উত্তর দেননি তিনি।

আরও পড়ুন-বিধান ভবনের সামনে রাহুলের ছবিতে কালি, কাঠগড়ায় বিজেপি