আর কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা। রাত পোহালেই টানটান উত্তেজনায় তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচন। যা নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে রাজনৈতিক মহলের। সোমবার খড়গপুর সদর, করিমপুর ও কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেটাকে রাজনৈতিক মহল “ওয়ার্ম আপ ম্যাচ” হিসেবেই দেখছে। এই নির্বাচনে রাজ্য রাজনীতি পালাবদলের কোনও সম্ভাবনা নেই, তবে ভোটারদের মন বোঝার জন্য এটা সব রাজনৈতিক দলের কাছেই অ্যাসিড টেস্ট।

তবে নামে সামান্য উপনির্বাচন হলেও বাংলার মন কী বলছে তা এই নির্বাচন থেকে কিছুটা আভাস পাওয়া যাবে। সেই কারণেই রাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো উপনির্বাচনকে পাখির চোখ করে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েছে লড়াইয়ের ময়দানে। এরই মধ্যে অবশ্য কেন্দ্রীয়বাহিনী নিয়ে জোর তরজা চলছেই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।

তবে তিন কেন্দ্রের মধ্যে এবার সবচেয়ে নজরকাড়া কেন্দ্র নদিযার করিমপুর। করিমপুরের বিদায়ী বিধায়ক মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগরের সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায় খালি হয় ওই আসনটি। অন্যদিকে, খড়গপুর সদর আসন ফাঁকা হয় দিলীপ ঘোষ মেদিনীপুর থেকে লোকসভা ভোটে জিতে সাংসদ হয়ে যাওয়ায়। আর উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায়ের মৃত্যুতে শূন্য হয় কালিয়াগঞ্জ কেন্দ্রটি।

রাজনৈতিক মহলের মতে, তিন কেন্দ্রে ত্রিমুখী লড়াইয়ে খড়্গপুরে তৃণমূল কিছুটা এগিয়ে শুরু করলেও বাকি দুই আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।


এদিকে, করিমপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে রাজ্য খুশি হলেও কালিয়াগঞ্জ ও খড়্গপুরের জন্য আরও বাহিনীর আবেদন জানিয়েছে বিজেপি। রবিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সিইও-র সঙ্গে দেখা করে আবেদন জানানো হয় বিজেপির পক্ষে। পাশাপাশি, কালিয়াগঞ্জে পেপারের ভিতর লিফলেট বিলি করা হয়েছে। যেখানে ওপিনিয়ন পোলে এগিয়ে রাখা হয়েছে তৃণমূল প্রার্থীকে। এই নিয়েও অভিযোগ জানানো হয়েছে কমিশনে।


গেরুয়া শিবিরের আরও অভিযোগ, করিমপুরে ডেমো ইভিএম-এ প্রচার চালাচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থী। খড়্গপুরে এসডিপিও-কে ৮ দিন আগে সরানো হলেও, তারপরেও তিনি এলাকায় শাসকদলের হয়ে কাজ করছেন বলে সিইও-র কাছে অভিযোগ করা হয় বিরোধীদের পক্ষ থেকে। সিইও সব দিক খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন বিজেপি প্রতিনিধি দলকে। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে দিল্লির সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানান কমিশনের সিইও।
সব মিলিয়ে রাজ্যের তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচন নিয়ে টগবগ করে ফুটছে বাংলার রাজনৈতিক মহল। ফলাফল জানা যাবে আগামী ২৮ নভেম্বর। কিন্তু তার আগে রাজ্যের যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলি কেউ কাউকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ।
