অন্যান্য দেশে ধর্ষণের শাস্তি কী জানেন?

হায়দরাবাদে চিকিৎসকের গণধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত 4 জনের এনকাউন্টারে মৃত্যুর পর একটি প্রশ্ন সামনে এসেছে, সারা বিশ্বে ধর্ষণের সাজা এ দেশের তুলনায় বেশি না কম।
আমাদের দেশে ধর্ষণ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও বিশ্বের অন্যান্য দেশে ধর্ষণের সাজার প্রকারভেদ আছে। 2013 সালে ভারতে ধর্ষণবিরোধী আইন হয়। তারপর থেকেই ধর্ষণের শাস্তি আগের থেকে অনেক কঠোর হয়েছে।
চিনে ধর্ষণের শাস্তি শুধুমাত্র মৃত্যুদণ্ড। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় পরিস্থিতি বিচার করে ধর্ষকের যৌনাঙ্গ কেটে দেওয়া হয়। আবার ইরানে ধর্ষককে সাধারণ মানুষের সামনে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়, অথবা গুলি করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। অবশ্য ধর্ষণে শিকার হওয়া ব্যক্তি অনুমতি দিলে অপরাধী মৃত্যুদণ্ডের হাত থেকে বাঁচতে পারেন। সেক্ষেত্রে ধর্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় । এই বিষয়ে নেদারল্যান্ডসের আইন অনেক বেশি কড়া। সেখানে যে কোনও ধরনের যৌন নিপীড়ন, এমনকি অনুমতি ছাড়া জোর করে চুম্বনকেও ধর্ষণের পর্যায়ে ফেলা হয়। শাস্তি নির্ভর করে অপরাধীর বয়সের ওপর। সেখানে ৪ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। আবার ফ্রান্সে ধর্ষণের শাস্তি কমপক্ষে ১৫ বছরের কারাদণ্ড। এরই পাশাপাশি চলে অকথ্য শারীরিক নির্যাতন। সেখানে ৩০ বছর পর্যন্ত অথবা আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আফগানিস্তানে ধর্ষণের শাস্তি চার দিনের মধ্যে কার্যকর করা হয়। ধর্ষকের মাথায় গুলি করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার চল আছে সেখানে। ফ্রান্সে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি শাস্তি হিসাবে একই সঙ্গে চলে শারীরিক নির্যাতন ।
এই বিষয়ে উত্তর কোরিয়া আরও এক ধাপ এগিয়ে। সেখানে কাল বিলম্ব না করে ধর্ষককে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। রাশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি কমপক্ষে ৩ বছরের কারাদণ্ড, যদিও অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে সেই শাস্তির মেয়াদ ৩০ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয় সেখানে। সৌদি আরবে ধর্ষণ প্রমাণিত হলে ধর্ষককে জনসমক্ষে শিরশ্ছেদ করা হয়। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে যে কোনও ধরনের যৌন নির্যাতন অথবা ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ড । অপরাধ প্রমাণের সাতদিনের মধ্যে এই সাজা কার্যকর করা হয়। গ্রিসে আবার ধর্ষককে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়। মিশরে ধর্ষককে জনসমক্ষে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, যাতে অন্যরা সেই সাজার কথা মাথায় রেখে ভবিষ্যতে ওই ধরনের জঘন্য অপরাধে সামিল না হয়। নরওয়েতে ৪ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ইসরাইলে ৪ বছর থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়ার প্রচলন আছে। সবমিলিয়ে এ কথা বলা যেতেই পারে, আমাদের দেশের তুলনায় অন্যান্য দেশে ধর্ষণের শাস্তি অনেক কড়া এবং তা দ্রুত কার্যকর করা হয় ।

Previous articleমমতা যাই বলুন, হায়দরাবাদ এনকাউন্টারকে সমর্থন তৃণমূলের মিমি, নুসরৎ, দেবের
Next articleবাবরি রায় যুক্তি দিয়ে নয়, বিশ্বাসের ভিত্তিতে হয়েছে! মত বিমানের