ঐতিহাসিক “মৃত্যুঘন্টা”র পুনরাবৃত্তি? অভিষেকের স্লোগানে কাঁসর-ঘন্টা বাজালেন মমতা

‘Charity Begins at Home’! যেমন কথা তেমন কাজ। এবং সেটা মাত্র চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে। গতকাল, ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ে NRC-CAA বিরোধী মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, তাঁর জীবনে কথার দাম সবচেয়ে বেশি। আর আজ বৃহস্পতিবার ঠিক সেটাই করলেন। এবং সেই ধর্মতলাতেই। পার্থক্য শুধু ১০০ মিটারের। ধর্মতলারই মঞ্চ। এবার রানি রাসমণি রোডে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বলেছিলেন, হিংসা-অবরোধ-আগুন ছেড়ে গান গাওয়া-ছবি আঁকার মধ্যে দিয়েই শান্তিতে হোক প্রতিবাদ। এবার নিজেই সেটা করে দেখালেন তিনি।

লাগাতার আন্দোলনে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ দিয়েছিলেন ছাত্র-যুবদের প্রতিবাদ মঞ্চে। সেখানে নিজে ব্ল্যাকবোর্ডে ‘নাগরিক সবাই’ লিখে তার নিচে চোখের ছবি এঁকে দেন। এরপর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, মনে রাখবেন, “আমরা সবাই স্বাধীন দেশের নাগরিক। কারও দয়ায় এদেশের বসবাস করি না। সব মহল থেকে CAA প্রতিবাদ চলছে, চলবে। এটা বাতিল করতেই হবে। স্বাধীনতার ৭৩ বছর পর সবাইকে প্রমাণ করতে হবে যে সে নাগরিক?”

ছবি আঁকার পর মমতা তাঁর আন্দোলনকে গানের ভাষায় প্রকাশ করেন। তারপর যেটা হলো, তা টাইম মেশিনে চেপে ২৭ বছর আগের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের বাংলার মানুষের সামনে নিয়ে এলো। অনেকেই বলছেন, এটা বাম আমলের সেই ঐতিহাসিক “মৃত্যুঘন্টা”র পুনরাবৃত্তি! প্রেক্ষাপট আলাদা, কিন্তু আন্দোলনের পথে সেই চেনা মমতা!

এখানেও পার্থক্য একটাই। সেটা ছিল বামেদের উৎখাত করার শপথ, আর এটা দেশ থেকে বিজেপিকে তাড়ানোর।
এদিন মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন চিৎকার করে বলছেন, ‘এনআরসি মানছি না মানব না’, ঠিক তখনই অভিষেকের স্লোগানের সুরে তাল মিলিয়ে একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে মমতা সেই আওয়াজের সঙ্গে কাঁসর বাজালেন। বাজালেন ঘন্টা!

এমন অভূতপূর্ব এক যুগলবন্দি দেখে অনেকেরই মনে পরে যাচ্ছিল, ঐতিহাসিক “মৃত্যুঘন্টা”র কথা! ১৯৯২ সালে যুব কংগ্রেসে থাকাকালীন ব্রিগেডে তৎকালীন বাংলার শাসকদল বামফ্রন্টের “মৃত্যঘণ্টা” বাজিয়েছিলেন আজকের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ২৭ বছর পর ফের ঘণ্টা বাজিয়ে বিজেপিকে বার্তা দিতে চাইলেন তিনি। এটা ভাবাও কি খুব ভুল? কারণ, ওনার জীবনে কথার দামকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেন। যেটা বলেন, সেটাই তো করেন! ইতিহাস সাক্ষী! তাই এটা ফের একটা ঐতিহাসিক “মৃত্যুঘন্টা”র পুনরাবৃত্তি নয় তো?

Previous articleফুটপাত, অন্ধকার তাঁবু, ফুচকা বিক্রি, যশস্বী বদলে দিল আইপিএল ইতিহাস
Next articleআইপিএলে কোন ভারতীয় সব চেয়ে বেশি টাকায় বিক্রি হলেন!