রাজ্যের জনসংখ্যা প্রায় ৯কোটি, সরকারি কর্মী মাত্র সোয়া ৩ লক্ষ

এ রাজ্যের জনসংখ্যা প্রায়
9.03 কোটি৷ এর মধ্যে মাত্র 3 লক্ষ 20 হাজার 146 জন সরকারি কর্মচারি৷

সরকারি সংখ্যা এটি৷
রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে স্থায়ী কর্মী ও আধিকারিকের মোট
সংখ্যা সম্প্রতি গণনা করা হয়েছে৷ চলতি বছরের 16 ডিসেম্বর পর্যন্ত সবক’টি সরকারি দফতর মিলিয়ে মোট কর্মীর সংখ্যা এটাই৷

রাজ্যের সরকারি কর্মী সংক্রান্ত সবকিছুই তৃণমূল সরকার কম্পিউটার তথা অনলাইন ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে এসেছে। ব্যবস্থাটির নাম, IFMS বা ইন্টিগ্রেটেড ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম৷ এই IFMS-এর মধ্যেই রাখা হয়েছে HRMS বা হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম পোর্টাল। রাজ্যের সরকারি কর্মচারি সংক্রান্ত সব বিষয় এই পোর্টালে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বেশ কয়েক মাস ধরে কাজ চালিয়ে এই পোর্টালের মাধ্যমেই রাজ্যের স্থায়ী সরকারি কর্মীদের সংখ্যা চূড়ান্ত ভাবে জানতে পেরেছে প্রশাসন৷ প্রতিটি দপ্তর থেকে অনলাইনে এই হিসেব নেওয়া হয়েছে। এই হিসেব ‘অথেন্টিক’ করতে স্থায়ী কর্মী হিসেবে তাঁদের যখন নিয়োগ করা হয়েছিল, সেই সংক্রান্ত তথ্যও দিতে হয় একইসঙ্গে। এই প্রক্রিয়ায় রাজ্যের সব সরকারি দফতরের স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা প্রশাসনের কাছে পরিষ্কার হয়েছে। এই সংখ্যার মধ্যে পুলিস, কারারক্ষী, সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রভৃতিতে কর্মরত চিকিৎসক ও অচিকিৎসক কর্মী, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী, আদালতের বিচারক ও কর্মীরাও আছেন। পুলিসকর্মীরা স্বরাষ্ট্র দপ্তরের, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ও অচিকিৎসক কর্মীরা স্বাস্থ্য দপ্তরের, কারারক্ষীরা কারা দপ্তরের কর্মী তালিকায় স্থান পেয়েছেন। আদালতের বিচারক ও কর্মীরা বিচার দপ্তরের তালিকায় আছেন।

রাজ্য সরকারের অধীনস্থ মোট দফতরের সংখ্যা 54টি। এই দফতরগুলির জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করা হয়। 54 দফতরের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল এবং বিধানসভার সচিবালয়ও রয়েছে। এই 3 দফতরে কোনও শ্রেণীর কতজন কর্মী কাজ করেন, তা ওই তালিকায় রয়েছে। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মী ও আধিকারিকদের মোট যে সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে কোনও শ্রেণীর কর্মী কতজন, তার উল্লেখও রয়েছে। সরকারি আধিকারিক বা কর্মীরা গ্রুপ A, B, C এবং D, এই 4 শ্রেণীতে পড়েন। গ্রুপ A কর্মীরা গেজেটেড অফিসার হিসেবে চিহ্নিত হন।

◾রাজ্য সরকারের 54টি দপ্তরে গ্রুপ A কর্মী বা গেজেটেড অফিসারের সংখ্যা 49 হাজার 658।

◾গ্রুপ D অর্থাৎ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীর সংখ্যা 54 হাজার 161 জন।

◾গ্রুপ B-কর্মীর সংখ্যা 1 লক্ষ 2 হাজার 120 জন৷

◾গ্রুপ C-কর্মীর সংখ্যা 1 লক্ষ 14 হাজার 207 জন।

◾সব থেকে বেশি কর্মী ও আধিকারিক রয়েছেন স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দপ্তরে। মোট কর্মীর সংখ্যা 99 হাজার 204 জন। পুলিসকর্মীরা অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মোট কর্মীসংখ্যা বেশি হয়েছে।

◾ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর। এখানে মোট কর্মীর সংখ্যা 83 হাজার 418 জন। সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ও অচিকিৎসকরা এই দপ্তরের অধীনে কাজ করেন। তাই কর্মীসংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে স্বাস্থ্য দপ্তর। সরকারি কর্মীদের মোট সংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি এই দুই দপ্তরে কাজ করেন।

◾ মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় বা CMO-তে মোট কর্মীর সংখ্যা 80. জন।
◾রাজ্যপালের সচিবালয়েও কাজ করেন 80 জন।
◾ রাজ্য বিধানসভার সচিবালয়ের কর্মীসংখ্যা 566 জন।
◾তথ্যপ্রযুক্তি, ইলেকট্রনিকস, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন, স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি, আদিবাসী উন্নয়ন, পরিবেশ দপ্তরের কর্মীর সংখ্যা 50-এর কম।

শুধুই এই সোয়া 3 লক্ষ স্থায়ী রাজ্য সরকারি কর্মী নয়, একইসঙ্গে সরকারি অর্থিক অনুদান পাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পঞ্চায়েত, পুরসভা-সহ বিভিন্ন স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতন, পেনশন প্রভৃতির আর্থিক দায় রাজ্য সরকারকে নিতে হয়। সব মিলিয়ে মোট প্রায় 5 লক্ষেরও বেশি কর্মীর আর্থিক দায় সরাসরি সরকারকে নিতে হবে এখন।

Previous articleঝুমকো-বলে দৃষ্টিনন্দন ফুটবল ম্যাচ
Next articleএবার ‘নাগরিক দিবস’ হিসেবে জন্মদিন পালন করবে তৃণমূল