‘দলীয় NRC’-তে বাকিরা বাদ, বাংলার ব্যাটন বাবুলের হাতে, কণাদ দাশগুপ্তর কলম

কণাদ দাশগুপ্ত

বঙ্গ-বিজেপি-র “অভ্যন্তরীণ NRC”-তে বাকিদের নামই উঠলো না৷ বাকি ‘হেভিওয়েট’দের পিছনের বেঞ্চে পাঠিয়ে বাংলায় বিজেপি-র মুখ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়৷

দলের জাতীয় সভাপতি অমিত শাহ নিজের সিদ্ধান্তেই বাবুল সুপ্রিয়কে বাংলার প্রচারের মুখ হিসেবে তুলে ধরছেন৷
নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে প্রচারে ঝড় তুলতে বিজেপিতে কর্মসূচির বন্যা৷ নতুন বছরের প্রথম রবিবার 5 জানুয়ারি থেকেই শুরু হয়েছে বিজেপির ‘ঘর ঘর সম্পর্ক’ প্রচারাভিযান৷ এদিন কলকাতা-সহ সংলগ্ন এলাকাতেও এই কর্মর্সূচি শুরু হয়েছে৷ বাংলায় বিজেপির এই প্রচার কর্মসূচিতে শাহের নির্দেশে সামনে রাখা হয়েছে বাবুলকেই৷ রবিবার বঙ্গ- বিজেপির “CAA -এর পক্ষে বিজেপির প্রচার অভিযান”-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন তাই বাবুল সুপ্রিয়ই৷

বিজেপির এই ঘরে ঘরে গিয়ে নাগরিকত্ব আইনের অভিযানের ক্ষেত্রে খুবই স্পর্শকাতর রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ৷ এ রাজ্যের সর্বত্রই তৃণমূলের নেতৃত্বে তুমুলগতিতে CAA- বিরোধী আন্দোলন চলছে৷ বিজেপির পাল্টা কর্মসূচি এখনও সেভাবে হালে পানি পায়নি৷ তাই মোদি-শাহ যথেষ্টই চিন্তিত এ রাজ্যে নাগরিকত্ব বিধি-বিরোধী আন্দোলন নিয়ে৷ CAA-র পক্ষে যে বঙ্গ-বিজেপি সেভাবে কিছু করে উঠতে পারেনি, সেটাও শীর্ষস্তরের নজরে এসেছে৷ CAA বিরুদ্ধ পথে নেমে এই মুহূর্তে সারা দেশের মধ্যে বেশি ক্ষোভ দেখা গিয়েছে বাংলাতেই৷ সে কারনেই বাংলার দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন মোদি-শাহ৷ বাংলায়, বাংলা ভাষায় প্রচার করা না গেলে কোনও লাভই যে হয়না, এতদিনে তা ধরে ফেলেছেন শাহ৷ এই কারনেই তিনি নিজেও শিক্ষক রেখে বাংলা শিখছেন৷ দিল্লি থেকে দলের ডজন ডজন হেভিওয়েটকে বাংলায় পাঠিয়ে লাভ নেই বলেই, এ রাজ্যে বলিয়ে-কইয়ে বঙ্গভাষী নেতা খুঁজছিলেন শাহ৷ এমন নেতা, যার মুখ বাংলার ঘরে ঘরে পরিচিত এবং যিনি ভালো বক্তা’র পাশাপাশি প্রয়োজনে রুখেও দাঁড়াতে পারেন৷ এই সব ‘গুন’ ই শাহ খুঁজে পেয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়-র মধ্যে৷ তাই বিজেপির দলীয় NRC-তে বাকি সবার নাম আপাতত কাটা গিয়েছে৷ রাজধানী দিল্লিতে CAA-র পক্ষে বিজেপির প্রচারের মুখ দলের সভাপতি অমিত শাহ নিজে৷ আর
শাহের নির্দেশে বাংলায় বিজেপির প্রচারের ‘মুখ’
বাবুল সুপ্রিয়-ই৷

বাংলায় যখন ক্ষমতা দখলের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বিজেপি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে, সেই সন্ধিক্ষণে খোদ দলের
জাতীয় সভাপতির নির্দেশ পেয়ে তৈরি বাবুল সুপ্রিয়ও৷ ঘরের মাঠ, প্রতিপক্ষ পরিচিত, বাংলা ও হিন্দি, দুই ভাষাতেই দক্ষ সাংসদ বাবুলের জনপ্রিয়তাও প্রশ্নাতীত৷ রাজ্য রাজনীতির সব কিছুই জানেন৷প্রতিপক্ষের নেতারাও তাঁর অপরিচিত নন৷ অনেক তৃণমূল নেতার সঙ্গেই বাবুলের সুসম্পর্ক আছেন প্রয়োজনে চোখে চোখ রেখে কথাও বলতে পারেন৷ এতকিছু বিবেচনায় এনেই মোদি-শাহ, বাংলার ব্যাটন তুলে দিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়-র হাতে৷ চলতি কর্মসূচিতে সাফল্য পেলে, আগামীদিনেও এই বঙ্গে বিজেপি’র মুখ নিশ্চিতভাবেই বাবুল সুপ্রিয় ৷

তা জানেন বাবুল নিজেও৷ তৈরি তিনি৷ বাবুলের কথা, “আমি বাংলার মানুষকে সত্যি কথাটাই বলতে চাই৷ সত্যি বলতে কিছু সাজাতে হয়না৷ আমার লড়াই তৃণমূলের মিথ্যের সঙ্গে। আমি তৈরি”৷

Previous article৫ বাংলা ছবিতে শুরু ২০২০
Next articleছেলে আদিত্যকে দুটি দফতরের দায়িত্ব দিলেন উদ্ধব